Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » স্নায়ু স্পন্দন ও স্নায়ুতন্ত্র




স্নায়ু স্পন্দন ও স্নায়ুতন্ত্র

প্রদত্ত অংশটি স্নায়ুতন্ত্র (Nervous System) এবং স্নায়ু সংকেত পরিবহণ (Nerve Impulse Transmission) সম্পর্কে একটি বিস্তৃত আলোচনা প্রদান করে। এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে মশা কামড়ানো বা কাঁটার খোঁচা লাগার মতো অনুভূতিগুলো আমরা অনুভব করি, যার মূলে রয়েছে নিউরন (Neuron) নামক কোষের একটি জটিল নেটওয়ার্ক। উৎসটি স্নায়ুতন্ত্রকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (CNS) এবং পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্র (PNS) এই দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করে এবং নিউরনের গঠন ও কার্যাবলী, যেমন তথ্য গ্রহণ, স্মৃতি সংরক্ষণ এবং অঙ্গের সমন্বয় নিয়ন্ত্রণ, ব্যাখ্যা করে। এটি সেন্সরি নিউরন, মোটর নিউরন, এবং ইন্টার নিউরন সহ কাজের ভিত্তিতে নিউরনের প্রকারভেদ বর্ণনা করে এবং অবশেষে ব্যাখ্যা করে যে কীভাবে সোডিয়াম-পটাশিয়াম পাম্পের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক চার্জ বা সংকেত এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনে প্রবাহিত হয়। কিভাবে আমাদের শরীর স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে অনুভূতি গ্রহণ এবং মস্তিষ্কে প্রেরণ করে? আমাদের শরীর স্নায়ুতন্ত্রের (Nervous system) মাধ্যমে যেভাবে অনুভূতি গ্রহণ করে এবং মস্তিষ্কে প্রেরণ করে, তা একটি জটিল ও বিশেষ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিউরন বা স্নায়ুকোষের মাধ্যমে সংঘটিত হয়। নিচে ধাপে ধাপে অনুভূতির পরিবহন প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা হলো: ১. অনুভূতির গ্রহণ এবং নিউরনের ভূমিকা • স্নায়ুতন্ত্রের কাজ: আমাদের শরীর জুড়ে থাকা স্নায়ুতন্ত্রের জন্যই আমরা যেকোনো স্পর্শ, গন্ধ বা ব্যথার অনুভূতি টের পাই। স্নায়ুতন্ত্র নিউরন নামক কোষের একটি জটিল নেটওয়ার্ক গঠন করে, যা পুরো দেহের মধ্যে সিগনাল আদান প্রদান করে। • নিউরন এবং তথ্য সংগ্রহ: স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একক হলো নিউরন। এই নিউরনগুলোই শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে ইলেকট্রিক ইম্পালস এর মাধ্যমে তথ্য নেয় এবং অন্য নিউরনের মাধ্যমে তা মস্তিষ্কে পাঠিয়ে দেয়। • ডেনড্রাইটের মাধ্যমে গ্রহণ: নিউরনের যে অংশটি মূলত অনুভূতি বা তথ্য গ্রহণ করে, তার নাম ডেনড্রাইট (Dendrite)। ডেনড্রাইটগুলো মানব দেহের বিভিন্ন ইন্দ্রিয় থেকে অথবা অন্য নিউরণ থেকে তথ্য গ্রহণ করে। একটি নিউরনে বহু ডেনড্রাইট থাকতে পারে (একটি নিউরণের তথ্য গ্রহণের ক্ষমতা এর ডেনড্রাইটের সংখ্যার উপর নির্ভর করে, যা ৪,০০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে)। • সেন্সরি নিউরনের কাজ: তথ্য গ্রহণের পর, সেন্সরি নিউরন (Sensory neuron) সেই অনুভূতি বা তথ্য দেহের ভিতর অথবা বাইরের উৎস থেকে মস্তিষ্কে (CNS) নিয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি একটি খুব গরম বল ধরেন, হাতের সেন্সরি নিউরনগুলো সেই তথ্য মস্তিষ্কে পাঠিয়ে দেয়। ২. নিউরন জুড়ে সিগনাল বা ইম্পালস পরিবহন অনুভূতি বা ইম্পালস হলো ইলেট্রিক্যাল চার্জ যা সোডিয়াম-পটাশিয়াম পাম্পের মাধ্যমে এক নিউরন থেকে আরেক নিউরনে প্রবাহিত হয়। • রেস্টিং পটেনশিয়াল (Resting Potential): যখন কোনো অনুভূতি প্রবাহিত হয় না, নিউরন নিষ্ক্রিয় থাকে। এই অবস্থাকে রেস্টিং পটেনশিয়াল বলে, যেখানে একটি বৈদ্যুতিক বিভব বজায় থাকে। ◦ এই অবস্থায় নিউরনের অ্যাক্সোপ্লাজম (ভিতর) এর বাইরে ১০ গুণ বেশি Na+ (সোডিয়াম) ও Cl- (ক্লোরাইড) আয়ন থাকে। ◦ অন্যদিকে, অ্যাক্সোপ্লাজমে (ভিতরে) বাইরের থেকে ২৫ গুণ বেশি K+ (পটাশিয়াম) আয়ন থাকে। ◦ এর ফলে, নিউরনের ভিতরে নেগেটিভ চার্জ (সাধারণত -70mV) এবং বাইরে পজিটিভ চার্জ বজায় থাকে। এই -70mV হলো রেস্টিং মেম্ব্রেন পটেনশিয়াল। ◦ আয়নের এই আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে Na+/K+ আয়ন পাম্প। পজিটিভ সোডিয়াম আয়ন (Na+) ভিতরে প্রবেশ করে নেগেটিভ ভোল্টকে নিউট্রাল করতে চাইলেও, পাম্প তা হতে দেয় না। • ইম্পালস পরিবহন: যখন কোনো অনুভূতি আসে, এই আয়নগুলির ভারসাম্য পরিবর্তন হয় এবং ইলেকট্রিক্যাল চার্জ বা ইম্পালস নিউরনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। ৩. মস্তিষ্কে তথ্য প্রেরণ • নিউরন সংযোগ (Synapse): অনুভূতি মস্তিষ্কে পৌঁছানোর জন্য নিউরনগুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়। পরপর দুটো নিউরনের প্রথমটির অ্যাক্সন (কোষদেহ থেকে উৎপন্ন লম্বা তন্তু) এবং পরেরটির ডেনড্রাইটের মধ্যে সিন্যাপস (Synapse) গঠিত হয়, যা একটি স্নায়ুসন্ধি হিসেবে কাজ করে। • নেটওয়ার্ক গঠন: এভাবে অনেক নিউরন একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি বিশাল জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। • মস্তিষ্কে কেন্দ্রীভূতকরণ: এই পুরো নেটওয়ার্কের অনুভূতি বা সিগনালগুলো মেরুদন্ডের স্পাইনাল কর্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্কে কেন্দ্রীভূত হয়। ৪. মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া অনুভূতির তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর পর, কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র (CNS) (মস্তিষ্ক ও সুষুম্না কাণ্ড) সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন সৃষ্টি করে। এরপর মস্তিষ্ক মোটর নিউরনের মাধ্যমে সেই কমান্ড বা নির্দেশ বিভিন্ন অঙ্গ, পেশি বা গ্রন্থিকে সরবরাহ করে। এই প্রক্রিয়াটিকে তুলনা করা যেতে পারে একটি বিশাল টেলিফোন নেটওয়ার্কের সাথে: যেখানে ডেনড্রাইটগুলো হলো কলারের ফোন যা তথ্য গ্রহণ করছে, সেন্সরি নিউরনগুলো হলো কেবল যা তথ্যকে দ্রুত গতিতে (ইলেকট্রিক ইম্পালস হিসেবে) প্রধান এক্সচেঞ্জ (স্পাইনাল কর্ড) হয়ে মূল সদর দপ্তর (মস্তিষ্ক) এ পৌঁছে দিচ্ছে, যেখানে সিন্যাপস হলো টেলিফোন সুইচবোর্ড যা সংযোগ স্থাপন করছে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপাদান কী? কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রের (Central Nervous System বা CNS) উপাদানগুলো নিম্নরূপ: কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র গঠিত হয় নিম্নলিখিত অংশগুলো নিয়ে: 1. মস্তিষ্ক (Brain) 2. সুষুম্না কাণ্ড (Spinal Cord) 3. চোখের রেটিনা (Retina of the eye) মস্তিষ্ক খুলি (skull) দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে এবং সুষুম্না কাণ্ড মেরুদন্ডের কশেরুকা (vertebrae) দ্বারা ঘেরা থাকে। উল্লেখ্য, স্নায়ুতন্ত্রের দুটি প্রধান ভাগের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র (CNS) হলো একটি, এবং অপরটি হলো পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম বা PNS। PNS কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রের (CNS) সঙ্গে শরীরের যোগাযোগ রক্ষা করতে সাহায্য করে। স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকরী একক কী? আপনার প্রশ্ন অনুযায়ী, স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একককে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে। এই নিউরন বা স্নায়ুকোষগুলো স্নায়ুতন্ত্রের মৌলিক উপাদান এবং এদের মাধ্যমেই সমস্ত সংকেত আদান-প্রদান হয়। নিউরণ সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য: • স্নায়ুতন্ত্র হলো নিউরন নামক কোষের একটি জটিল আর বিশেষ নেটওয়ার্ক, যা পুরো দেহের মধ্যে সিগনাল আদান-প্রদান করে এবং বিভিন্ন অনুভূতি দেয়। • মস্তিষ্ক কোটি কোটি স্নায়ুকোষ (নিউরন) দিয়ে তৈরি। • একটি মাত্র মানব মগজে ১,০০০ কোটি স্নায়ুকোষ বা নার্ভ সেল রয়েছে। • নিউরণের প্রধান কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে ইলেকট্রিক ইম্পালস এর মাধ্যমে তথ্য নেওয়া এবং সেই তথ্যকে অন্য নিউরনের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠিয়ে দিয়ে তদনুযায়ী প্রতিবেদন সৃষ্টি করা। • নিউরনগুলো স্নায়ুতন্তু দিয়ে পুরো শরীর জুড়ে একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত রয়েছে। কাজের ভিত্তিতে নিউরন কত প্রকার? আপনার জিজ্ঞাসা অনুযায়ী, কাজের ভিত্তিতে নিউরনকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় [৩]। কাজের ভিত্তিতে নিউরনের প্রকারভেদগুলো নিচে বর্ণনাআপনার জিজ্ঞাসা অনুযায়ী, কাজের ভিত্তিতে নিউরনকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় [৩]। কাজের ভিত্তিতে নিউরনের প্রকারভেদগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো: ১. সেন্সরি নিউরন (Sensory neuron): * এই নিউরনের কাজ হলো দেহের ভিতর অথবা বাইরের সেন্স বা অনুভূতি মস্তিষ্কে (CNS) নিয়ে যাওয়া [৩]। * উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি খুব গরম কোনো বস্তু হাতে ধরেন, তবে হাতের সেন্সরি নিউরনগুলো সেই তথ্য আপনার মস্তিষ্কে (CNS) পাঠিয়ে দেয় যে আপনি খুব গরম বস্তু হাতে ধরেছেন [৩]। ২. মোটর নিউরন (Motor neuron): * মোটর নিউরনের কাজ হলো মস্তিষ্কের কমান্ড বা নির্দেশ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, পেশি, বা গ্রন্থিকে সরবরাহ করা [৪]। * যেমন, যখন মস্তিষ্কে গরম বস্তুর অনুভূতি পৌঁছায়, তখন মস্তিষ্ক মোটর নিউরনের মাধ্যমে আপনার হাতের বিভিন্ন মাংসপেশিকে নির্দেশ দেয় যে বলটা খুব গরম এবং হাতের পেশিগুলো তখন বলটিকে ফেলে দিতে নির্দেশিত হয় [৪]। ৩. ইন্টার নিউরনস (Inter neurons): * ইন্টার নিউরনগুলো মস্তিষ্কের মধ্যে অবস্থিত [৪]। * এগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত করে এবং বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদানে সাহায্য করে [৪]। * মানব মস্তিষ্কে যে ১,০০০ কোটি স্নায়ুকোষ রয়েছে, ইন্টার নিউরনগুলো তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে [৪]। এই তিন ধরনের নিউরন মিলেই স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সিগনাল আদান-প্রদান করে






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply