নিহত দু্ই তরুণ শিবিরকর্মী ছিলেন এবং তিনবছর আগে দলের আন্দোলন ও মিছিলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে পরিবার বলছেন। (ফাইল চিত্র)
বাংলাদেশের যশোর জেলায় এক শ্মশানঘাট থেকে দুজন ছাত্রের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিন সপ্তাহ আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে আবুজার গিফারির এবং শামীম মাহমুদ নামে দুজন কলেজ ছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এবং এগুলো তাদেরই লাশ বলে পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তাদের দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জামায়াতের ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে তারা জড়িত ছিল বলেই তাদের ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পুলিশের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
আজ বুধবার সকালে যশোর সদর উপজেলার বহরামপুর সার্বজনীন শ্মশানঘাটে স্থানীয়রা পূজা করতে এসে তাদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় বলে স্থানীয় সূত্র থেকে জানানো হচ্ছে।
নিহতদের পরিবার তাদের লাশ সনাক্ত করেছে বলে জানানো হয়েছে।
শামীম মাহমুদের বাবা রুহুল আমিন বিবিসি বাংলার আকবর হোসেনকে বলেছেন তার ছেলে তিন বছর আগে ছাত্রশিবিরের সাধারণ কর্মী হিসাবে দলের সঙ্গে জড়িত ছিল, কিন্তু কোনো পদে ছিল না। সেসময় তার ছেলে দলীয় নির্দেশে দলের আন্দোলন অর্থাৎ হরতাল মিছিলের সঙ্গে জড়িত হয় বলে তিনি জানান।
কার কাছে আমরা আবেদন করব? পুলিশ যেখানে বলেছে আমরা জানি না, সেখানে কী করে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে পারি?
রুহুল আমিন, নিহত এক তরুণের পিতা
মিঃ আমিনের অভিযোগ ''শতভাগ রাজনৈতিক কারণে'' তার ছেলে এবং গিফারিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন আবুজার গিফারি বর্তমানে কালীগঞ্জ থানা শিবিরের পৌর সভাপতি।
তিনি জানান আটদিনের ব্যবধানে দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
''এখন দুটো লাশই একসাথে পাওয়া গেছে। এটা তো কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটা সুপরিকল্পিত এবং আমরা মনে করছি প্রশাসনেরই পুরো হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।''
শামীম মাহমুদের বাবা মিঃ আমিন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন আইনগত কোনো প্রতিকার পাবার আশা তারা ছেড়ে দিয়েছেন।
''কার কাছে আমরা আবেদন করব? পুলিশ যেখানে বলেছে আমরা জানি না, সেখানে কী করে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে পারি? আইন আমাদের পক্ষে নেই। আমরা তাই কিছুই করব না- সব আমরা মহান আল্লার হাতে সঁপে দিয়েছি,'' জানান মিঃ আমিন।
বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেবার অভিযোগ একেবারে নতুন কোনো ঘটনা নয়।
এমনকী কখনও কখনও ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদেরও তুলে নেওয়ার অভিযোগ শোনা গেছে।
তবে আইনশঙ্খলাকারী বাহিনী বরাবরই এধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
জামায়াতের ইসলামির ছাত্র সংগঠণ ইসলামি ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল বলে তাদের ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটণায় পুলিশের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
No comments: