মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় রয়েছে বেশ কিছু দুর্গমচর। এসব চরে নেই শিক্ষার সুব্যবস্থা। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন চরের হাজার হাজার শিশু। র বাসিন্দারা প্রকৃতির নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য জানালেন, চরের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য শিক্ষাবিস্তারে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক।
চাঁদপুর সদরের দুর্গম চর রাজ রাজেস্বর। জেলা শহর থেকে থেকে নদীপথে দেড় থেকে ২ ঘণ্টার পথ।
রাবেয়া বেগম স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর বন্ধ হয়ে যায় পড়াশুনা। কিন্তু অদম্য রাবেয়া থেমে যাননি। স্বামী সংসার ছেড়ে দিয়ে আবারও ফিরে আসেন পড়াশুনায়।
শিক্ষিত মানুষ হতে চান। রাবেয়ার মত জ্ঞানের মশাল জ্বালাতে চান চরের ছেলেমেয়েরাও। কিন্তু মাধ্যমিক পর্যন্তই শেষ। ফলে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত অনেকে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'শত প্রতিকূলতা ভেঙে আমরা স্কুলে পড়া লেখা করতে আসি। বড় হয়ে আমাদের জেলে বা কৃষক হতে হয়। মন চাইলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি না।'
একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেছেন চরের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও রয়েছে নানান প্রতিভা। অভিভাবকরা বলছেন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সুযোগ না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের সন্তানরা।
শিক্ষকরা বলেন, 'এখানকার ছেলে মেয়েরা খুবই গরীব। শহরে গিয়ে থেকে পড়াশুনা করবে। সেই সামর্থ্য তাদের নেই।'
চরে কলেজসহ উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদ।
তারা বলেন, 'যদি বিদ্যালয়টি এমপিভুক্তি হয়। শিক্ষকরা তথা এলাকার ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত উপকৃত হবেন।
চরের সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষা বিস্তারে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, 'প্রায় প্রতিটি চরে এখন স্কুল আছে। অবশ্যই সেখানে আরো স্কুল প্রয়োজন রয়েছে। আগামী ২-১ বছরের মধ্যে আমাদের এই সমস্যাগুলোও আর থাকবে না।'
চাঁদপুর পদ্মা মেঘনাকে ঘিরে ১৯টি চর রয়েছে। আর এসব চরে বাস করছে লক্ষ্যাধিক মানুষ।
No comments: