
রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা যখন হিমসিম খাচ্ছে, ঠিক সে মুহূর্তে প্রশাসনের নাকের ডগায় বিষ ফোঁড়া হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে লেগুনা বা টেম্পু স্ট্যান্ড। এমটাই অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তারা বলছেন, পুলিশ-প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে দাঁড়িয়ে থাকার অঘোষিত লাইসেন্স পেয়েছে বাহনগুলোর সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে বিআরটিএ বা সিটি করপোরেশন দায় না নিলেও বলছেন, গড়ে ওঠা টেম্পু স্ট্যান্ডগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ। তবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, নির্দিষ্ট স্থান না থাকা ও জনগণের স্বার্থেই এ বিষয়ে কিছুটা নমনীয় তারা।
লেগুনা, হিউম্যান হলার বা টেম্পু.রাজধানীর প্রায় সব সড়কেই দেখা মিলবে হরহামেশাই। ছোট যান, কিছুটা ভাড়া কম, গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছনোর জন্য বাহনটির পরিচিতি বহুদিনের। তবে, এর যতসামান্য উপকারিতার চেয়ে নগরীতে এর অসুবিধাটাই বেশি বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। সমস্যার অন্যতম যে বিষয়টি তা হচ্ছে নগরীর প্রায় সব প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে টেম্পু স্ট্যান্ড। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
যাত্রীরা বলেন, 'ভালো একটি জায়গায় যদি স্ট্যান্ড করা যেতে তাহলে ভালো হতো। যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে এই লেগুনা। এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পুলিশ দেখেও কিছু বলে না। এটি তাদের ভুল সিদ্ধান্ত।'
যানজট নিরসনে সরকার ও নাগরিক সেবা সংস্থাগুলো যখন বারবার হোঁচট খাচ্ছে, তখন কিভাবে এই টেম্পুগুলো রাস্তা দখল করে আছে, তা অকপটেই স্বীকার করেন লেগুনা শ্রমিকারা। তারা বলছেন, প্রভাবশালী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করেই চলছেন তারা।
লেগুনা চালকরা বলেন, 'নেতা-পুলিশ সবাই টাকা খাই। ৭০০ করে টাকা দিই। টাকা নিতে খাতা কলম নিয়ে হাজির হয় তারা।'
এ বিষয়ে বিআরটিএ বলছে, অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা স্ট্যান্ডগুলোর ব্যাপারে তাদের নেই কোন পদক্ষেপ।
বিআরটিএ সচিব শওকত আলী বলেন, 'উচ্ছেদ করার ক্ষমতা বিআরটিএ'র নেই। বিআরটিএ যানবাহনের অপরাধে ব্যবস্থা নেবে।'
আর সিটি করপোরেশনও এই স্ট্যান্ডকে অবৈধ বললেও বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে এমনই প্রশ্ন তাদের.!
সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের মহাখালী-গাবতলী যে বাস স্ট্যান্ড আছে। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। টেম্পু স্ট্যান্ডের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। এসব গুলোই আইনের বাইরে।'
নানা অভিযোগ থাকলেও সাধারণ মানুষের চলাচলে সুবিধার কথা ভেবে টেম্পু স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা বলে ইঙ্গিত ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের।
ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'জনস্বার্থে যানবাহন দাঁড়ানোর জন্য বা ঘুরানোর জন্য একটি জায়গা দিতে হবে। একক ভাবে যদি কেউ দায়িত্বে অবহেলা করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তবে সব কিছুই বিবেচনায় এনে দুর্ভোগ কমিয়ে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ ও সুশৃঙ্খলার মধ্যে পরিবহণ ব্যবস্থা আনার প্রতি মত দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাজধানীর যততত্র অবৈধ টেম্পু স্ট্যান্ড
Tag: others
No comments: