
রংপুর সিটি করপোরেশনের হাট-বাজার ইজারার অন্তত অর্ধশত কোটি টাকার হদিস নাই। গত ছয় বছরে করপোরেশনের রাজস্ব খাতে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে নামকাওয়াস্তে। এই কয়েক বছরে হাট-বাজারের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে মাত্র সাড়ে সাত লাখ টাকা।
২০১২ সালে প্রতিষ্ঠার পর ছয় বছরে হাট-বাজার ইজারা থেকে ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ছিলো। এর ৪৫ শতাংশ সংশ্লিষ্ট হাট-বাজারের উন্নয়নে ব্যয়ে ছিলো আইনি বাধ্যবাধকতা। কিন্তু সিটি বাজারে একটি শেড আর বুড়িরহাটে ১৪টি টিউবওয়েল বসানো ছাড়া আর কিছুই হয়নি, যাতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে সাত লাখ টাকা। বছরের পর বছর উন্নয়ন না হওয়ায় ভোগান্তিতে ক্ষুব্ধ মানুষ।
সময় সংবাদের কাছে আসা একটি গোপন নথিতে মিলেছে দুর্নীতির প্রমাণ। অর্ধশতাধিক হাট-বাজারের এই নগরীতে মাত্র ২১টির ইজারা দেখানো হয়েছে। তাতেও নেই নিয়ম-কানুনের বালাই। মানা হয়নি প্রতিবছর ২৫ শতাংশ হারে ইজারা মূল্য বাড়ানো, উন্মুক্ত টেন্ডারের প্রধান শর্তগুলো। একে-অপরকে দায় চাপিয়ে এড়িয়ে গেলেন অভিযুক্ত সচিব ও প্রধান নির্বাহী। তবে ক্যামেরায় ধরা পড়লো তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর স্বীকারোক্তি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, 'আমি মেয়রের তত্বাবধায়নে চাকরি করি। কিছু বললে চাকরি চলে যাবে। হাটবাজার ইজারাই দুর্নীতি হয়।'
আগের মেয়াদে মুখের কথায় পছন্দের লোকদের ইজারা দেয়া এবং ব্যাংকে জমা হওয়া ইজারার টাকা ফেরত দেখিয়ে আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ করলেন বর্তমান মেয়র।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, 'যাদের সাক্ষরে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
দায়িত্ব গ্রহণের পর দরপত্র প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করে দেয়ার কৃতিত্ব দাবি করলেও টেন্ডারে অংশ নিতে আসা সাধারণ ঠিকাদারদের পিটিয়ে বের করে দেয়ার এই ঘটনা বর্তমান আমলের। আর এভাবে সবচে বড় হাটের ইজারা পেয়েছেন মেয়রের দলের নেতা। তাও আবার গত বছরের চেয়ে সাত লাখ টাকা কমে।
রংপুরে হাট-বাজার ইজারার অর্ধশত কোটি টাকা উধাও
Tag: Featured
No comments: