সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ঈদুল আজহায় ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা সুরক্ষিত ও নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান এবং নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার দুপুরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নবনির্মিত ভবনে ঈদ সামনে রেখে দেশের সড়ক-মহাসড়কের পরিস্থিতি নিয়ে প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তাঁর বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশ দেন তিনি।
কঠিন বাস্তবতায় এবারের ঈদ উদযাপন হতে যাচ্ছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে বৈশ্বিক মহামারি করোনা, অন্যদিকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া বন্যা। সরকার নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে জনস্বার্থে গণচলাচল অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই করোনার পাশাপাশি অবিরাম বৃষ্টি সড়ক-মহাসড়ক ব্যবস্থাপনা, সুরক্ষা এবং তাৎক্ষণিক মেরামতে অতীতের মতো সড়ক ও জনপদ বিভাগকে অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জনগণের ঈদযাত্রা করতে হবে নির্বিঘ্ন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানতে চান, বৃষ্টি ও বন্যায় এখন পর্যন্ত কোনো সড়ক-মহাসড়ক জলমগ্ন হয়েছে কি না? যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কি না? সব জোন আসন্ন বৃষ্টিজনিত সড়ক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে পরিকল্পনা নিয়েছে কি না? সড়ক মেরামত তথা গর্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মেরামতে মোবাইল ট্রাক প্রস্তুত রাখা হয়েছে কি না?
এসব সমস্যা সমাধানে আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, একেক জোনের বাস্তবতা একেক রকম। গাড়ির চাপ মহাসড়কভেদে ভিন্ন। তাই আমি চাই আপনারা জোনভিত্তিক ও আন্তজোনভিত্তিক সমন্বয় করে পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। মহাসড়কে যান চলাচল যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তা আগে থেকেই মেরামত করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
ভুলতা, নবীনগর, চন্দ্রা, গাজীপুরের মতো রাজধানী থেকে বের হওয়ার পথগুলোতে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সেদিকে আগে থেকেই খেয়াল রেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক বা কমিউনিটি পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত সড়ক-মহাসড়কের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং যেকোনো মূল্যে সড়ক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের ঈদের আগের সাত দিন এবং পরের সাত দিন ফ্লাইওভার, আন্ডারপাসসহ চলমান কাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
বন্যাজনিত পানির প্রবাহ এবং গাড়ির অত্যধিক চাপের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর প্রতি নজর রেখে বিকল্প পথ ঠিক করে রাখার আহ্বানও জানান সেতুমন্ত্রী।
সড়ক-মহাসড়কে যাতে পশুর হাট না বসে, সে জন্য প্রতিটি জোন, সার্কেল ও বিভাগকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গ্রামমুখী মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে।
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সড়ক-মহাসড়ক এখন ভালো পর্যায়ে আছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি বাড়িয়েছে অবিরাম বৃষ্টি। তিনি বলেন, চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে অতীতের মতো এবারও সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
সড়ক ও মহাসড়ক অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
No comments: