শ্রীলঙ্কায় ১ কেজি আপেল এখন ১ হাজার রুপি
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কায় ফলমূল ও শাকসবজির দাম এখন আকাশছোয়া। দেশটির স্থানীয় বাজারে এক কেজি আপেলের দাম এখন ১ হাজার রুপি। আর প্রতি কেজি নাশপাতি ১ হাজার ৫০০ রুপি। খবর এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের।
১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশটি। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র ঘাটতি। মূলত করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর সময় থেকে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে; যা বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
দেশের এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নাগরিকরা। রাজধানী কলম্বোয় খাদ্যপণ্য বিক্রেতা ফারুখ বলেন, ‘৩-৪ মাস আগে আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হতো ৫০০ রুপি। এখন তা ১ হাজার রুপি বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি কেজি নাশপাতি ৭০০ রুপি দরে বিক্রি হতো, এখন প্রতি কেজি দেড় হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। মানুষের কাছে টাকা নেই। কেনার ক্ষমতা নেই।’
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা খুবই স্বচ্ছ, যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফারুখ আরও বলেন, শ্রীলঙ্কা সরকার চীনের কাছে সব বিক্রি করেছে। এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। চীনের কাছে সব বিক্রি করায় শ্রীলঙ্কার কাছে কোনো অর্থ নেই। অন্যান্য দেশের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সবকিছু কিনছে শ্রীলঙ্কা।
রাজা নামের অপর এক খাদ্য বিক্রেতা বলেন, ‘প্রতিদিন দাম বাড়ছে এবং মানুষের কাছে কোনো নগদ অর্থ নেই। কোনো ব্যবসা নেই। গোতাবায়াকে পদত্যাগ করতেই হবে।’
দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুত অগ্রসরমান দেশ হিসেবে বিবেচিত শ্রীলঙ্কা এখন বিপুল ঋণের বোঝা আর বিদেশি মুদ্রার অভাবে প্রায় দেউলিয়া। জ্বালানি তেল কিনতে না পারায় দেশটিতে এখন বিদ্যুৎ মিলছে না। স্কুল-কলেজে কাগজের অভাবে পরীক্ষা বন্ধ। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। এ পরিস্থিতিতে জনবিক্ষোভে সরকারও পতনের দ্বারপ্রান্তে।
আরও পড়ুন : রমজানে বাংলাদেশিদের পদচারণায় মুখর কলকাতা
পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। কিন্তু বিরোধী দলগুলো তা মানছে না। সরকার ভেঙে দিয়ে সর্বদলীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে তারা।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বাদে মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যের সবাই ইতোমধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এর মধ্যে রাজাপক্ষে পরিবারের অন্তত চার সদস্য রয়েছেন। তাদের দলও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
No comments: