যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় কিছুটা কঠোরে একমত সিনেট
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীদের গুলিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, বিশেষ করে কিশোরদের আক্রমণে স্কুলে বহু শিশু হতাহতের দুটি ঘটনার পর অবশেষে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য একটি আইন প্রণয়নে একমত হয়েছে সিনেট ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের নিয়ে গঠিত একটি আন্তদলীয় গ্রুপ। এতে ২১ বছর বয়সের নিচে কেউ আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করতে গেলে তার অতীত জীবন খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা চালু করা এবং অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বেচাকেনার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আন্তদলীয় গ্রুপটি ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে এলেও তাতে সবসময় রিপাবলিকানদের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার দশজন রিপাবলিকানের সমর্থন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রস্তাবগুলি রিপাবলিকান দ্বারা সমর্থিত হওয়ার অর্থ হল সেটিকে আইনে রূপান্তরিত করার মতো যথেষ্ট ভোট রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, 'এটি সঠিক দিকে অগ্রসর হওয়া' কিন্তু অস্ত্র সহিংসতা কমাতে যা দরকার তার চাইতে অনেক কম। এর আগে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন পাশের চেষ্টা কংগ্রেসে পর্যাপ্ত ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছে। বন্দুকধারীদের গুলিতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের পরপর দুটো ঘটনার পর আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন আরো কঠোর করার দাবিতে শনিবার হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বহু মানুষ ব্যক্তিগত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারান। তাদের একটি বড় অংশ শিশু যারা নিজের স্কুলেই প্রাণ হারান। বেশিরভাগ সময় স্কুলে হামলায় জড়িতরা কিশোর বয়সী। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে গত চব্বিশে মে টেক্সাসের ইউভ্যালডে এলেমেন্টারি স্কুলে এক বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিতে উনিশটি শিশু ও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এরই মাত্র দশদিন আগে নিউইয়র্কের বাফালো শহরের একটি সুপারমার্কেটে আরেক ঘটনায় নিহত হয় দশ জন। দুই হাজার আঠারো সালে, পার্কল্যান্ডের একটি স্কুল শুটিংয়ে ১৪জন শিক্ষার্থী ও তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছিলেন। দুই হাজার বারো সালে কানেকটিকাটের স্যান্ডি হুক এলেমেন্টারি স্কুলে হামলায় ছয় সাত বছর বয়সী বারোটি শিশুসহ ২৬ জন নিহত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রনে বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এরকম বহু ঘটনার নজির যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একটি বড় অংশ। অস্ত্র রাখার অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা অত্যন্ত ক্ষমতাধর। বহু বছর চেষ্টা করেও দেশটিতে কোন প্রশাসন এব্যাপারে একটি কঠোর আইন প্রণয়নে সমর্থ হয়নি। মে মাসের দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রণয়নে আবারো নতুন করে দাবি উঠেছে। সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের নিয়ে গঠিত আন্তদলীয় গ্রুপ এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমেরিকান শিশুদের নিরাপত্তা দিতে, স্কুলগুলো নিরাপদ করতে, দেশব্যাপী সহিংসতা কমাতে আজ আমরা একটি কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন দ্বিপক্ষীয় প্রস্তাব ঘোষণা করছি।" "আমাদের পরিবারগুলো আতঙ্কিত এবং সমাজে নিরাপত্তাবোধের অনুভূতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য কিছু একটা করতে একত্রিত হওয়া আমাদের দায়িত্ব।" মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, স্কুলে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ বাড়ানো, সেই সাথে পারিবারিক সহিংসতার দায়ে সাজা ভোগকারী এবং কারো কাছ থেকে দুরে থাকার জন্য আদালতের আদেশ বা রেস্ট্রেইনিং অর্ডার যেসব ব্যক্তিদের উপর রয়েছে অস্ত্র ক্রয়ের সময় তাদের অতীত ইতিহাস তদন্ত করার পর তা ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানিয়েছেন তারা। যত দ্রুত সম্ভব এসব প্রস্তাব পাশ করার জন্য সেনেটের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন তিনি যত কঠোর চেয়েছিলেন এসব প্রস্তাব ততটা কঠোর হয়নি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন অ্যাসল্ট অস্ত্র নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে চাপ দিয়েছিলেন। টেক্সাস ও বাফালোর স্কুল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো স্কুলে হামলার ঘটনায় বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যাসল্ট অস্ত্র ব্যাবহার করা হয়েছে। জো বাইডেন বলেছেন, "যা করা দরকার এতে সেরকম সবকিছু না থাকলেও সঠিক পথের দিকে যাওয়ার উদ্যোগ এতে প্রতিফলিত হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা একটি জাতীয় লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করার দাবিও জানাচ্ছেন যাতে বন্দুকের মালিকের নাম নিবন্ধিত থাকবে। সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার, যিনি একজন ডেমোক্র্যাট, তিনি বলেছিলেন যে, এই পরিকল্পনাগুলি ‘একটি ভাল প্রথম পদক্ষেপ’ এবং আইনটির খুঁটিনাটি বিস্তারিত প্রস্তুত হয়ে গেলে তিনি দ্রুত বিলটি সেনেটের ভোটে নিয়ে যেতে চান। সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা রিপাবলিকান সদস্য মিচ ম্যাককনেল বলেছেন যে এই পদক্ষেপগুলি প্রমাণ করে ‘সংলাপ এবং সহযোগিতা কত মূল্যবান’। বিশ্বের ধনী দেশগুলির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্রে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। দেশটির অনেকেই মনে করেন বন্দুক রাখা একজন ব্যক্তির অধিকার। "অস্ত্র রাখা এবং বহন করা" দেশটির সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত একটি অধিকার। কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম কোন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন দুই দলেরই সমর্থন পেলো। এর আগে ডেমোক্র্যাটদের চেষ্টা বারবার রিপাবলিকানদের বাধার মুখে পড়েছে। প্রায় এক দশক আগে কানেকটিকাটের স্যান্ডি হুকে একটি স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনায় কুড়িটি শিশু নিহত হওয়ার পর নেয়া আইন কঠোর করার প্রচেষ্টা কংগ্রেসে পর্যাপ্ত ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছিল। সিনেট বা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ, বর্তমানে ৫০ জন ডেমোক্র্যাট এবং ৫০ জন রিপাবলিকানদের সমর্থন নিয়ে বিভক্ত অবস্থায় রয়েছে। আইন প্রণয়নের জন্য ‘ফিলিবাস্টার’ বলে পরিচিত দেরি করিয়ে দেয়ার যে কৌশলটি রয়েছে তা এড়াতে অন্তত ৬০ টি ভোট থাকতে হবে। নতুন প্রস্তাবগুলো যে কুড়িজন উত্থাপন করেছেন তাদের দশজন রিপাবলিকান, যার অর্থ প্রস্তাবগুলিতে ফিলিবাস্টার অতিক্রম করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা রয়েছে। ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ, প্রতিনিধি পরিষদ, এই সপ্তাহে বন্দুকের বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলো পদক্ষেপের বিষয়ে ভোট দিয়েছে। কিন্তু সিনেটে রিপাবলিকান বিরোধিতার অর্থ বিলটির আইন হিসেবে পাশ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম হবে। তার মানে রবিবার দুই দল যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা মোকাবেলায় সেটিই এখন একমাত্র আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ। সূত্র: বিবিসি এসিSlider
বিশ্ব
জাতীয়
সাম্প্রতিক খবর
খেলাধুলা
বিনোদন
ফিচার
mujib
w
যাবতীয় খবর
জিওগ্রাফিক্যাল
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: