Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ধর্ষকদের মুক্তিতে আমি বাকরুদ্ধ: বিলকিস বানো




ভারতের গুজরাটে বহুল আলোচিত বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন পাওয়া ১১ জন আসামির সবাইকে মুক্তি দেয়ার ঘটনায় মুখ খুলেছেন বিলকিস বানো। আসামিদের মুক্তির নিন্দার পাশাপাশি সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এ নারী। খবর আল জাজিরার। বর্তমানে বিলকিস বানোর বয়স ৪০-এর কোঠায়। ২০০০ সালে গুজরাটের পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে সেই সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস গণধর্ষণের শিকার হন। এছাড়া তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তার পরিবারের সবাইকে হত্যার দায়ে ২০০৮ সালে দোষী সাব্যস্ত করে ১১ জনকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সোমবার (১৫ আগস্ট) যাবজ্জীবন পাওয়া ওই ১১ জন আসামির সবাইকে মুক্তি দেয়া হয়। এর আগে শাস্তি মওকুফ চেয়ে আসামিদের একটি আবেদন মঞ্জুর করে রাজ্য সরকার। তাদের মুক্তির দুদিন পর বুধবার (১৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বিলকিস বানো বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে এভাবে চোখের সামনে ধর্ষকদের জেল থেকে ছাড়া পেতে দেখে রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন তিনি। বিচার ব্যবস্থার ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস ছিল সেটাও ভেঙে গেছে। বিলকিস বানোর ভাষায়, ‘কীভাবে একজন নারীর জন্য বিচার এভাবে শেষ হতে পারে? দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আমার আস্থা ছিল।’ আসামিদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলেও যোগ করেন বিলকিস। এ সময় নির্ভয়ে ও শান্তিতে বসবাসের দাবি জানান তিনি। বলেন, ‘আমাকে নির্ভয়ে ও শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দিন।’ আরও পড়ুন: গুজরাটে বিলকিস গণধর্ষণ মামলায় সব আসামির মুক্তি এদিকে ওই ১১ আসামির মুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদও হয়েছে। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা এ বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক উইমেন’স অ্যাসোসিয়েশনের মাইমুনা মোল্লাহ বলেন, তারা আসামিদের মুক্তির বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রত্যাহার চান। তিনি আরও বলেন, ‘বিলকিস বানো ও বেঁচে যাওয়া অন্যান্যদের শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার দিতে হবে।’ আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০২ সালে গুজরাটে গোধরায় হিন্দু তীর্থযাত্রী বহনকারী একটি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর মুসলিমবিরোধী গণহত্যার ঘটনা ঘটে। ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫৯ তীর্থযাত্রী নিহত হয়। এর জন্য উগ্র-হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো স্থানীয় মুসলিমদের দায়ী করে। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, এরপর গুজরাটজুড়ে মুসলিমবিরোধী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। যা গুজরাট দাঙ্গা হিসেবে পরিচিত। যা কয়েকদিন ধরে চলে। এ ঘটনায় প্রায় ২ হাজার মানুষকে (যাদের বেশিরভাগই মুসলিম) গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। শত শত নারীকে ধর্ষণ করা হয়। ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। নারকীয় ওই হত্যাযজ্ঞ থামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লড়াই করা মানবাধিকারকর্মীদের টার্গেট করার অভিযোগ রয়েছে। মুসলিমবিরোধী সহিংসতা ও হত্যাযজ্ঞের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর একটি হচ্ছে আলোচিত বিলকিস বানো গণধর্ষণ। সেই সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস। এছাড়া সালেহা নামে তিন বছরের একটি মেয়ে ছিল তার। উগ্র-হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর তাণ্ডব থেকে বাঁচতে ৩ মার্চ সালেহা ও পরিবারের আরও ১৪ সদস্যের সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন বিলকিস। দাহোদ জেলার লিমখেদা এলাকায় ধু ধু মাঠে গজিয়ে ওঠা ঝোপের মধ্যে আশ্রয় নেন সবাই। আরও পড়ুন: আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পার্থ-অর্পিতা কিন্তু এরপরও তাদের রেহাই দেয়া হয়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের তথ্য মতে, কাস্তে, তলোয়ার ও লাঠি নিয়ে সেই মাঠের মধ্যেই তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে ২০-৩০ জনের একটি দল। গণধর্ষণের শিকার হন বিলকিস। বিলকিসের চোখের সামনে তার পরিবারের সবাইকেই একে একে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। মাটিতে মাথা থেঁতলে মারা হয় তিন বছরের মেয়ে সালেহাকে। সে সময় মরার ছলে মাটিয়ে শুয়ে থেকে জীবন বাঁচান বিলকিস। এ ঘটনার পর দীর্ঘদিন এ নিয়ে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার ও সমাজকর্মীদের তৎপরতায় বিক্ষোভ শুরু হলে ২০০৪ সালে মামলা হয়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই)। এ সময় বহুল আলোচিত গণধর্ষণ ও হত্যা মামলাটি ‘বিলকিস বানো মামলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়। গুজরাটের আহমেদাবাদে সিবিআই’র একটি বিশেষ আদালতে শুনানি শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিলকিস। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মামলাটি আহমেদাবাদ থেকে সরিয়ে মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন সুপ্রিমকোর্ট। প্রায় চার বছরের তদন্ত ও শুনানি শেষে ২০০৮ সালে সিবিআই বিশেষ আদালত ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এর মধ্যে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে দু’জন চিকিৎসক ছিলেন। আরও পড়ুন: পানি সংকট নিরসনে ভারতে অভিনব প্রযুক্তি প্রমাণের অভাবে আরও সাত জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া শুনানি চলাকালেই এক জনের মৃত্যু হয়। এরও প্রায় ১৭ বছর পর ২০১৯ সালে বিলকিসকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দেন সুপ্রিম কোর্ট। এরপর মামলা মুম্বাই হাইকোর্টে গড়ায়। সেখানেও আগের সাজাই বহাল রাখা হয়। প্রায় ১৪ বছর পর তাদের সবাইকে মুক্তি দেয়া হলো। এ বিষয়ে সোমবার (১৫ আগস্ট) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সাক্ষাৎকারে রাজ কুমার নামে গুজরাট রাজ্য সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ১৪ বছর সাজাভোগের পর সম্প্রতি ওই ১১ আসামির পক্ষ থেকে সাজা মওকুফের আবেদন করা হয়। ভারতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ সাধারণত ১৪ বছর হয়ে থাকে। গোধরা জেলের সুজল মায়াত্র জানান, কিছুদিন আগেই একটি কমিটির অধীনে দোষীদের মুক্তি প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সুপারিশ পাঠানো হয় গুজরাট সরকারের কাছে। রোববার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে মুক্তির নির্দেশও দেয়া হয়।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply