ফাইনালের আড়ালে লাতিন ও ইউরোপের মর্যাদার লড়াই
বাতাসে বাজছে বিউগলের করুণ সুর। মরুর বুকে পর্দা ওঠা দ্য গ্রেটেস্ট শো আর্থের মঞ্চ ভাঙার অপেক্ষা। ৬৩ ম্যাচ শেষ। বাকি মাত্র এক ম্যাচ। আর সেটাই বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মহারণ। পুরো বিশ্বের চোখ আটকে গেছে কাতারে। আরও স্পষ্ট করে বললে লুসাইলে। সেরা দুই দলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ফাইনালের লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপ ও লাতিনের দুই প্রতিনিধি। ছবি-সংগৃহীত বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই দলের শিরোপার লড়াইয়ের আড়ালে ইউরোপ-লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের মর্যাদার লড়াইও এটি। বাংলাদেশ সময় রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় মুখোমুখি হবে দুই অঞ্চলের দুই প্রতিনিধি। ফ্রান্সের সামনে এবার টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ২০ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফরাসিরা। চার বছর আগের সেই সৌরভ এবার মরুর বুকেও ছড়িয়ে দিচ্ছে কোচ দিদিয়ের দেশমের দল। করিম বেনজেমা-পগবাসহ একঝাঁক তারকা ফুটবলার চোটের কারণে খেলতে না পারলেও দাপটের সঙ্গে ফাইনালে উঠে এসেছে ফ্রান্স। এখন তাদের সামনে নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বার বিশ্বজয়ের হাতছানি। অন্যদিকে, ২০১৪ সালের পর আরও একবার ফাইনালের মঞ্চে আর্জেন্টিনা। এবারও ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসির জাদুকরী পারফরম্যান্সে ভর করে চূড়ান্ত লড়াইয়ের টিকিট কেটেছে আলবিসেলেস্তেরা। আট বছর আগের ফাইনালে জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হেরে বেদনায় পুড়তে হয়েছিল আকাশী-সাদাদের। এবার আর না পাওয়ার বেদনায় কাঁদতে চায় না তারা। সৌদি আরবের কাছে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলেও পরের ম্যাচগুলোতে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠে ফাইনাল মঞ্চে উঠে এসেছে কোচ লিওনেল স্কালোনির দল। এর ফলে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর আবারও ইউরোপ ও লাতিনের ফাইনাল মহারণ নিশ্চিত হয়েছে। দুটি ফাইনালেই আছে মেসির আর্জেন্টিনা। ইউরোপের প্রতিপক্ষ শুধু বদল হয়েছে। আট বছর আগে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি। এবার ফ্রান্স। কাতার বিশ্বকাপসহ এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ১১ বার মুখোমুখি হচ্ছে লাতিন ও ইউরোপ। সবশেষ দ্বৈরথে না পারলেও রোমাঞ্চকর এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে লাতিন আমেরিকাই। আগের ১০ ফাইনালে লাতিনরা জিতেছিল সাতবার; আর ইউরোপ জয় পেয়েছে তিনবার। লাতিনদের মধ্যে পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল, বাকি দুটি আর্জেন্টিনা। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে এই দ্বৈরথে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জার্মানি। একবার ফ্রান্স। অবাক করা বিষয়, দুইবারই আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল জার্মানরা। ১৯৫৮ সালে সুইডেনে আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ইউরোপ ও লাতিন অঞ্চলের দল ফাইনালে মুখোমুখি হয়। সেবার স্বাগতিক সুইডেনকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। আরও পড়ুন: ফাইনাল নিয়ে কাশেফের ভবিষ্যদ্বাণী, জিতবে কোন দল? অবাক করা বিষয় হচ্ছে, সেলেসাওরা তাদের পাঁচটি শিরোপাই জিতেছে ইউরোপের প্রতিপক্ষকে হারিয়ে। এর মধ্যে দুইবার হারিয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে। আর্জেন্টিনারও দুটি শিরোপা এসেছে ইউরোপের দলকে হারিয়ে। ১৯৭৮ সালে নেদারল্যান্ডস ও ১৯৮৬ সালে জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। এবার ইউরোপের ঝান্ডাবাহী ফ্রান্স। তাদের হারিয়ে ৩৬ বছর পর নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে মুখিয়ে আছে লাতিন প্রতিনিধি আর্জেন্টিনা। এবার লাতিন-ইউরোপ দ্বৈরথে যে কারণে ভিন্ন মাত্রা কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিএনটি স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দুই মহাদেশের ফুটবল নিয়ে ফরাসি তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পের মূল্যায়ন ছিল, লাতিন আমেরিকার চেয়ে ইউরোপ অঞ্চলের দলগুলো উঁচুমানের ফুটবল খেলে। তার মতে, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা উঁচুমানের ফুটবল খেলে না। উদাহরণ হিসেবে, নেশন্স লিগের প্রসঙ্গ টানেন তিনি। বলেন, যখন বিশ্বকাপ শুরু হবে তার আগেই আমরা প্রস্তুত হতে পারি। এছাড়া আগের বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান টেনে সে আরও বলেছিল, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল হাইলেভেলের ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপে অংশ নেয়। লাতিন আমেরিকার ফুটবলটা আসলে ইউরোপের মতো উন্নতি করতে পারেনি। যার কারণে বিশ্বকাপের সাম্প্রতিক চিত্রের দিকে তাকালে আপনি দেখবেন ইউরোপিয়ানরা সব সময় জিতে আসছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে লাতিন অঞ্চলের তিন দেশ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও উরগুয়ে ছাড়া কেউই বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। ২০০২ সালে সবশেষ ব্রাজিল শিরোপা জেতার পর আর কোনো লাতিন দলের সৌভাগ্য হয়নি ট্রফি স্পর্শ করার। আরও পড়ুন: ফাইনালের আগে মেসিকে ছেলের আবেগঘন বার্তা এমবাপ্পের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তখনই ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল লাতিন আমেরিকার সাবেক ও বর্তমান অনেক খেলোয়াড়। লাতিন অঞ্চলে খেলতে গেলে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তা জানিয়েছিলেন তারা। খোদ মেসি বাস্তবতা বুঝে বলেছিলেন, সে (এমবাপ্পে) কোন পরিপ্রেক্ষিতে কী বলেছিল তা জানি না। কিন্তু আমরা এ নিয়ে কথা বলেছি। আমরা যখন বাছাইপর্ব খেলে ফিরে আসি তা নিয়ে স্পেনের ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। যখন আমরা কোয়ালিফায়ার খেলে ফিরতাম এবং তাদেরকে বলতাম, জানো তোমাদের জন্য ওখানে গিয়ে খেলে বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করা কতটা কঠিন হবে? আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের ফাইনালের আড়ালে লাতিন ও ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই হচ্ছে- এটা বলাই চলে। সেই সঙ্গে এমবাপ্পের বিতর্কিত সে মন্তব্য আরও তাতিয়ে দিতে পারে মেসিদের। তবে দিনশেষে মাঠের লড়াইয়ে কার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয় সেটি জানতে আর কিছু সময়ের অপেক্ষা কেবল। এদিকে, আর্জেন্টিনা চিরশত্রু হলেও লাতিন প্রতিনিধি হওয়ায় নিজেদের সমর্থনের কথা জানিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন। এছাড়া অনেক ব্রাজিলিয়ানও আজ সমর্থন দিচ্ছেন মেসির আর্জেন্টিনাকে। বলাই যায়, দ্বৈরথটা হতে যাচ্ছে দুই অঞ্চলের ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বেরও।Slider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: