পর্তুগালের পার্লামেন্টে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র বিল
পর্তুগালের পার্লামেন্টে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ অনুমোদনের একটি বিল বা প্রস্তাব তোলা হয়েছে। প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) প্রস্তাবটি পাস হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিলটি পাস হলে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষয়টি বৈধতা পাবে।
স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষয়টিকে ‘ইউথানেশিয়া’ বলা হচ্ছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এটি শুধুমাত্র বয়স্কদের জন্য অনুমোদিত হবে। তবে এটা শুধু তখনই অনুমোদন দেয়া হবে যখন কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা ‘চলমান, পুনরাবৃত্তিমূলক, গুরুতর, অবাধ ও অবহিত’ হয়।
স্বেচ্ছামৃত্যু হলো নিজ ইচ্ছায় মৃত্যুবরণ করা বা আত্মহত্যা করা। অধিকাংশ ধর্মেই এ স্বেচ্ছামৃত্যু বা আত্মহত্যা করা পাপ। পর্তুগালের অর্ধেকের কম নাগরিক চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে স্বেচ্ছামৃত্যু তথা আত্মহত্যার অনুমতি দেয়ার পক্ষে। তবে দেশটির ক্যাথলিক চার্চের মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।
শুধু পর্তুগাল নয়, স্বেচ্ছা মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের বহু দেশে বিতর্ক চলছে। তবে এ বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশই ইতোমধ্যে এ ধরনের মৃত্যুকে আইনি বৈধতা দিয়েছে। সবশেষ গত বছর নিউজিল্যান্ডে ‘নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু’ আইন কার্যকর করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আইনে ইউথানেশিয়া বেআইনি ও এটাকে নরহত্যা বা হত্যা বলে গণ্য করা হয়। তবে এটি তিনটি ইউরোপীয় দেশে সম্পূর্ণ বৈধ। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ওনেদারল্যান্ডস। তবে চিকিৎসায় সহায়তায় মৃত্যুর আরও কিছু ধরন রয়েছে। যা আরও অনেক ইউরোপীয় দেশে বৈধ।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) পর্তুগালের পার্লামেন্ট স্বেচ্ছা মৃত্যুকে বৈধতা দিয়ে প্রণীত আইন অনুমোদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সেটি হলে নির্দিষ্ট সীমিত পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি মিলবে।
বিবিসি বলছে, পর্তুগালের পার্লামেন্টে আইনটি অনুমোদিত হলে দেশটির কেবল প্রাপ্তবয়স্করাই স্বেচ্ছামৃত্যুর সুবিধা পাবেন। এছাড়া স্বেচ্ছামৃত্যু সেসব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্যই অনুমোদিত হবে যদি তাদের ইচ্ছা ‘সাম্প্রতিক এবং পুনরাবৃত্তিমূলক, গুরুতর ও মুক্তভাবে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও বলেছে, স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে চাওয়া ব্যক্তিকে অবশ্যই ‘অত্যন্ত জটিল বা গুরুতর এবং নিশ্চিত কোনো আঘাত বা দুরারোগ্য রোগের কারণে প্রচণ্ড তীব্র যন্ত্রণার পরিস্থিতিতে’ থাকতে হবে। গত বুধবার পর্তুগালের একটি পার্লামেন্টারি কমিটি এই আইনের চূড়ান্ত সংস্করণটি অনুমোদন করে।
আরও পড়ুন: মেগান ইস্যুতে রাজপরিবার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য হ্যারির
তবে এই আইন নিয়ে ইউরোপের দেশটিতে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে। এই ইস্যুতে প্রধান বিরোধী দল গণভোটের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে সরকার বারবারই গণভোটের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।
অবশ্য জনমত জরিপগুলো বলছে, পর্তুগালের প্রায় অর্ধেক ভোটারই ডাক্তারি সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি দেয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে এই ধরনের মৃত্যু বেছে নেয়ার বিধান বা প্রস্তাবকে চার্চের অনুমোদন পায়নি।
Tag: English News lid news others world
No comments: