মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে এখনই আলোচনা নয়
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে সিঙ্গাপুর। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বলেছেন, মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে আলোচনায় বসার সময় এখনও হয়নি। কারণ ২০২১ সালে গৃহীত শান্তি পরিকল্পনা পূরণে জান্তার পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান (বায়ে)। ছবি: সংগৃহীত
শুক্রবার ওয়াশিংটনে (১৭ জুন) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ী সামরিক জোটের সমন্বয়ে গঠিত থাইল্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক সরকার মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের সঙ্গে নতুন করে ‘পরিপূর্ণ যোগাযোগ’ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু তাই নয়, রোববার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিতব্য এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
স্ট্রেইট টাইমস জানিয়েছে, এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালাকৃষ্ণান বলেন, ‘আসিয়ানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে গেলে, আমাদের একটা পাঁচ-দফা ঐকমত্য রয়েছে।
যা ২০২১ সালে আসিয়ান ও মিয়ানমার জান্তার মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। ওই ঐকমত্য অনুযায়ী, অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি মিয়ানমারের সবগুলো পক্ষের মধ্যে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করে সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ২০ মাসে মিয়ানমারে ৬৫০০ বেসামরিক মানুষকে হত্যা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালাকৃষ্ণান এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। গত শুক্রবার (১৭ জুন) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি।
ওই সংবাদ সম্মেলনেই এক প্রশ্নের জবাবে বালাকৃষ্ণান বলেন, ‘আমরা পাঁচ দফা ঐকমত্য পূরণে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি এখনও দেখিনি। তাই আমরা বিশ্বাস করি, শীর্ষ পর্যায়ে এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়েও মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে এখনই কোনো আলোচনা নয়।’
বালাকৃষ্ণান আরও বলেন, আসিয়ান নেতারা চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনের সময়ই তাদের এই অবস্থান জানিয়ে দেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে রোববারের বৈঠকে যোগ দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কেননা সেখানে জান্তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সেনাদের অপরাধ নিয়ে আর্জেন্টিনার আদালতের শুনানিতে রোহিঙ্গারা
বালাকৃষ্ণান বলেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট মিয়ানমার সংকট সমাধানের জন্য শেষ পর্যন্ত সমস্ত পক্ষের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন। তবে এমন আলোচনা কখন হতে পারে সে ব্যাপারে তার কোনো ধারণা নেই।
তিনি বলেন, ‘শেষবার মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেতে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আমি আশা করি, এবার আর এত বেশি সময় লাগবে না। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে সহিংসতার মাত্রা কমছে। আমাদের সবার জন্যই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

No comments: