নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে প্রথমবারের মতো বেসামরিক নভোচারী পাঠালো চীন
নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগংয়ে প্রথমবারের মতো বেসামরিক নভোচারী পাঠালো চীন। মঙ্গলবার (৩০ মে) দেশটির জিকুয়ান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে নভোযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। ‘শেনজু-১৬’ নামের এ মিশনে তিন নভোচারীর মধ্যে একজন বেসামরিক নাগরিক। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নভোচারী নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে যাচ্ছে শেনজু-১৬ মিশন। ছবি: এপি
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) ব্যবহার থেকে চীনকে বাদ দেয়ার পর মহাকাশে নিজস্ব স্টেশন তৈরি করে দেশটি। গত বছরের নভেম্বরে তিয়ানগং নামে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ করে দেশটি।
চীনকে দমাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একের পর এক কৌশল অবলম্বন করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এরই অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে চীনকে বাধ্যও করেছিল তারা। তবে এতকিছুর পরও দমানো যায়নি চীনের অগ্রযাত্রা। উল্টো প্রায় সব ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে দেশটি। মহাকাশে তৈরি করেছে নিজস্ব ‘তিয়ানগং স্পেস স্টেশন।’
মঙ্গলবার (৩০ মে) স্থানীয় সময় সকালে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিকুয়ান মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে একটি মনুষ্যবাহী মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়। ‘শেনজু-১৬’ নামে এ মিশনের মাধ্যমে তিন চীনা নভোচারীকে ছয় মাসের জন্য নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে পাঠানো হয়। এই তিন নভোচারী সেখানে পৌঁছালে আগে থেকেই মহাকাশ স্টেশনটিতে অবস্থান করা তিন নভোচারী পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।
আরও পড়ুন: মহাকাশ স্টেশন বানাচ্ছে চীনারা
তিয়ানগংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করা তিন নভোচারীর মধ্যে এক বেসামরিক ব্যক্তিও আছেন। এবারই প্রথম কোনো বেসামরিক নভোচারীকে মহাকাশে পাঠালো চীন।
এর আগে, সেখানে যাওয়া সব নভোচারীই চীনা সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য ছিল। এ ছাড়া, নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে বিশেষজ্ঞদেরও মহাকাশে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। ‘শেনজু-১৬’ মিশনে নেতৃত্ব দেয়া জিয়াং হেইপেং প্রথম কোনো চীনা নভোচারী যিনি চতুর্থবারের মত মহাকাশে যাচ্ছেন।
মিশন সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে চীনা মনুষ্যবাহী মহাকাশযান প্রোগ্রামের প্রধান ডিজাইনার জু জিয়ানপিং বলেন, ‘আমরা এবার বিশেষজ্ঞ নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন এখন পুরোপুরি কার্যকর। এতে নিয়মিত মহাকাশ অভিযানের জন্য আমাদের আরও নভোচারী প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নকাজে আমাদের প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীদের সেখানে পাঠানো হবে।’
মহাকাশে চীনের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে দেশটিকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার থেকে বিরত রাখা হয়। এরপরই মহাকাশে নিজস্ব স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করে চীন।
No comments: