Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » » যুক্তরাষ্ট্রের শেষ পরিবারতন্ত্র:কোথায় থামবে?




মিসরের ফারাওরা যেমন পিরামিড প্রবর্তন করেছেন, তেমনি শিকাগোর ডোনাল্ড ই স্টিফেন আবিষ্কার করেছেন মিউজিয়াম অফ হামেলস। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘর। এই জাদুঘরে মূলত চীনামাটির অসংখ্য পুতুল আছে। যেগুলো প্রাথমিকভাবে মারিয়া হামেলের আঁকার ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে। মারিয়া হামেল একজন জার্মান নান ছিলেন। রোজমন্ট ভিলেজ। ছবি:সংগৃহীত ডোনাল্ডের সব সংগ্রহ একটি মলের ভেতর প্রদর্শন করা হয়েছে। এখানে বার্লিনের চার্লি চেকপয়েন্টের সেনাদের দুলর্ভ মূর্তিও প্রদর্শিত হয়েছে। স্টিফেন ডোনাল্ড ২০০৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইলিনয়ের রোজমন্টের মেয়র ছিলেন। তার এই জাদুঘর নিছক জাদুঘর নয়, এটি যেমন নিখুঁত শিল্পকর্মের নান্দনিক নিদর্শন তেমনি একটি রাজবংশের স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শিকাগোর রোজমন্ট গ্রামকে পারিবারিক রাজনীতির রোল মডেল হিসেবে দেখা যেতে পারে। ডোনাল্ড স্টিফেন ও তার পুত্র ব্রাড স্টিফেন এই শহরে প্রায় ৭০ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছে। স্টিফেনের এই পরিবার সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের শেষ রাজনৈতিক যন্ত্র, যেটা বছরের পর বছর ধরে সচল আছে। ১৯৫৬ সালে এই রোজমন্ট ভিলেজটি গড়ে ওঠার আগে এটি শিকাগোর একটি ভাগাড় ছিল। স্টিফেন তখন ছিলেন ২৭ বছরের একজন তরুণ ব্যবসায়ী। স্টিফেনের মত কয়েকজন তরুণ খ্যাপাটের উদ্যোগে আজকের রোজমন্ট গ্রামটি বর্তমান রুপ লাভ করেছে। ও -হারে বিমানবন্দর কাছাকাছি হওয়ার কারণে দ্রুত বদলে গেল রোজমন্ট গ্রাম। সব কর্পোরেট সুবিধা নিয়ে একটি আধুনিক রোজমন্টকে পেল এখানকার বাসিন্দা। হাইওয়ে নির্মিত হলো। রেললাইন সংযোগ দেয়া হলো। বেশ কিছু কনভেনশন সেন্টার বানানো হলো। হকি ও বাস্কেটবল কোর্ট করা হলো। থিয়েটার হল বানানো হলো। এর বাইরের দিকটায় খোলা হলো একটি ক্যাসিনো। অফিস, কার পার্কিং এবং বহু কক্ষবিশিষ্ট হোটেল গড়ে উঠল রোজমন্টে। আরও পড়ুন:প্রমোদতরীতে বাকি জীবন কাটাতে সব বিক্রি বৃদ্ধ দম্পতির বর্তমানে রোজমন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে স্টিফেন পরিবার। ব্রাড স্টিফের হাতে রয়েছে এই ক্ষমতা। তিনি ডোনাল্ড স্টিফের এর ছেলে। তার বাবার মৃত্যুর পর রোজমন্ট ব্রাড এর নিয়ন্ত্রণে আসায় সবাই খুব খুশিই হয়েছে। ২০০৯ সালে তার প্রথম মেয়র নির্বাচনে ব্রাড ৯১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। সর্বমোট ৯৮৮ ভোট। তখন থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে কখনও হারেননি ব্রাড। কাজে কর্মে তিনি তার বাবার মতই গুণী। শুধু একটি বিষয় ছাড়া। সেটা হলো তার বাবার মত ব্যক্তিগত জীবনটা তত রঙ্গিন হয়নি ব্রাডলির। তার বাবা ছয়টি বিবাহ করেছিলেন, কিন্তু একজন স্ত্রীই রয়েছে ব্রাডলির। এখন ব্রাডলিই স্টিফেন পরিবারের অভিভাবক। তারা শুধু রাজনীতিকেই নিয়ন্ত্রণ করছে না; বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি চাকরি সবকিছুতেই স্টিফেন পরিবার শীর্ষে। ক্রিস্টোফার স্টিফেন, ব্রাডলির ভাতিজা একটি কনভেনশন সেন্টার দেখাশোনা করছেন। ব্রাড স্টিফেন- ২, ব্রাডের ছেলে একটি মলের দায়িত্বপ্রাপ্ত। ২০২০ সাল পর্যন্ত ডোনাল্ড স্টিফেন-৩ যিনি ডোনাল্ডের নাতি, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত। স্টিফেন পরিবারের আরেক সদস্য কারেন স্টিফেন সিটি পার্কের পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা রোজমন্টের বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে কাজ করছেন। ব্রাড স্টিফেন বছরে আয় করেন ২ লাখ ৯০ হাজার ডলার। তার ভাতিজা ক্রিস্টোফার ৩ লাখ ৩৫ হাজার ডলার আয় করেন কনভেনশন সেন্টার থেকে। ডোনাল্ড স্টিফেন-৩ পান ২ লাখ ১৫ হাজার ডলার। মেয়র হিসেবে ডোনাল্ড স্টিফেন ‍দুবার অভিযুক্ত হয়েছিলেন এবং দুবারই খালাস পেয়েছেন। তাকে নিয়ে গুজব ছিল শিকাগোর ইতালিয়ান মাফিয়াদের সঙ্গে গভীর যোগসূত্র রেখেছিলেন ডোনাল্ড। কিন্তু বর্তমান মেয়র ব্রাড স্টিফেনের রেকর্ড অত্যন্ত পরিষ্কার। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি জানান, তার পরিবারের সদস্যরা সবাই পরিশ্রম করে কারণ তারা জানে তারা অন্যদের তুলনায় অনেক সুযোগ সুবিধা পায়। ‘আমি সবসময় তাদের অন্যদের থেকে বেশি আরামদায়ক পরিবেশে রাখার চেষ্টা করি’। তার ভাতিজা ক্রিস্টোফার যে একটি কনভেনশন সেন্টার চালায় তার সম্পর্কে তিনি বলেন, সে জানে যে দেয়ালে তার দাদার নাম লেখা আছে। সুতরাং আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, তার বানানো সবকিছু খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে। আরও পড়ুন:প্রমোদতরীতে বাকি জীবন কাটাতে সব বিক্রি বৃদ্ধ দম্পতির রোজমন্টের এই রাজনৈতিক পরিবারতন্ত্রের মত শিকাগোতে আগেও এ ধরণের মেশিন প্রচলিত ছিল। তখন মেয়র ছিলেন রিচার্ড জে দালি। প্রত্যেকটি নির্বাচনে ভোটারদেরকে নিজেদের পক্ষে টানা হত। হয়রানিমূলক মামলা দেয়ার ভয় দেখানো হত। এরপর ধীরে ধীরে শিকাগোর এই মেশিন ভেঙ্গে পড়ে। তবে রোজমন্টের মেশিন এখনও সচল আছ। এমনকি রোজমন্টের ব্রাড স্টিফেনের নিজের রাজনৈতিক পার্টি আছে। দ্য রোজমন্ট ভোটার লীগ। রোজমন্টের পুলিশ কমান্ডার ফ্রাঙ্ক সিসিলিও এর মতে, এতে যুক্ত না হয়ে কাজ করা অসম্ভব। তবে পরিবারতন্ত্র কতদিন রাজনৈতিক মেশিন হিসেবে কাজ করতে পারে? ডোনাল্ড স্টিফেনও চেয়েছেন তার উত্তরাধিকার টিকে থাকুক বছরের পর বছর। তার ছেলেও এর পরিবর্তন চাননি। নিজেকে একটি বেজবল দলের ম্যানেজার ভাবতে পছন্দ করেন তিনি। সব সদস্যকে জানেন। তার মতে, এটা একটা বড় পরিবারের মত। সবাই সবাইকে আগলে রাখছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্টিফেন পরিবারের কি হবে? হয়ত কিছুই হবে না। তবে, রোজমন্ট মডেল এখন আগেরমত দাপুটে নেই। তাদের রাজতন্ত্র হয়ত টিকে আছে কিন্তু সেটা আর কতদিন? মহামারীর পর রোজমন্ট বদলে গেছে। স্টিফেন পরিবারের বিশাল কার পার্কিংয়ের জায়গাগুলো এখন বেশিরভাগ সময় নিরব থাকে। এক সময় তাদের কনভেনশন সেন্টারগুলো নানা রঙ্গে উৎসবমুখর থাকত এখন সেই শহর ঋণগ্রস্ত। এর জন্য অবশ্য ৩৮ মিলিয়ন ডলার খরচও হয়েছে। হাতে বন্দুক চোখে সানগ্লাসপড়া কেউ হয়ত রোজমন্টের জন্য হুমকি নয় এখনও, কিন্তু একদিন মানুষ এই রাজনৈতিক মেশিন নিয়ে ঠিকই ভাববে, ভাবতে বাধ্য হবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply