বিলাওয়ালকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় পিপিপি
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তরুণ রাজনীতিক বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় তার দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। বিলাওয়াল এখন পিপিপির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। ছবি: সংগৃহীত
৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সামনে করে এরই মধ্যে বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে পিপিপি। গত বুধবার (৩ জানুয়ারি) লাহোরের বিলাওয়াল হাউজে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির (সিইসি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পিপিপির আগেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। গত ২৭ ডিসেম্বর সাবেক তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মনোনীত করে দলটি। নওয়াজ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ১৫ নম্বর আসন খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রদেশের মানসেহরা ও লাহোর ১৩০ নম্বর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, আসন্ন নির্বাচনে লাহোর ১২৭ নম্বর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিলাওয়াল। তিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) অন্যতম নেতা শায়েস্তা পারভেজ মালিক ও পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে লড়বেন।
নির্বাচন জিততে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিলাওয়াল ও তার দল পিপিটি। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে প্রচারাভিযান শুরু করবে দলটি। বিলাওয়াল গত সপ্তাহে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমতি পেলেন নওয়াজ
প্রায় এক সপ্তাহ পর বুধবার (৩ জানুয়ারি) বৈঠকে বসে পিপিপির সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ কমিটি (সিইসি)। বৈঠকের পরপরই পিপিপির অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে বৈঠকের ছবিসহ একটি বিস্তারিত পোস্টে জানানো হয় যে, সিইসির সদস্যরা দলের সভাপতি আসিফ আলি জারদারি ও চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বে আস্থা প্রকাশ করেছেন।
পোস্টে আরও বলা হয়, দলের সভাপতি আসিফ আলি জারদারি পাকিস্তান পিপলস পার্টির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী হিসেবে ছেলে ও দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নাম প্রস্তাব করেন। সিইসির সদস্যরা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পিপিপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে সমর্থন করেছেন।’
বৈঠকে দলের এবাবের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়েও আলোচনা করা হয়। ইশতেহারে যুব-উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল বলেন, ‘আমি লাহোর থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কেউ পছন্দ করুক বা না করুক।’ তিনি আরও বলেন, পিএমএল-এন ও পিটিআই উভয়ই দেশে সরকার চালিয়েছে। কিন্তু তারা কেউই দেশে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারেনি। পিপিপিই একমাত্র দল যারা তাদের ইশতেহারে জনগণের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় খালাস /নওয়াজ শরিফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ‘জল্পনা’ কি সত্যি হচ্ছে
সরকার গঠনের পর তিনি জনগণকে বিনামূল্যে ও মানসম্মত শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, কর্মীদের মজুরি ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে ও বিআইএসপি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, পিপিপি প্রতিটি জেলা সদরে এনার্জি পার্ক স্থাপন ও ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরিকল্পনা করেছে।
৩৪ বছর বয়সী বিলাওয়াল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোর নাতি। বাবা-মার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। গত বছরের এপ্রিলে ইমরান খানের সরকার উৎখাতের পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
No comments: