Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » দালালের খপ্পরে সৌদি আরবে গিয়ে নিখোঁজ রকিবুল গাংনী উপজেলার মাইলমারী গ্রামের আবেদীনের ছেলে




গত তিন মাস আগে রকিবুল ইসলাম সৌদি আরবে গিয়ে মারা গেছে না জীবিত রয়েছে জানে না বাবা-মা। জমি বন্ধক, গরু বিক্রি ও ঋণ করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে এখন দিশেহারা তার পরিবার। রকিবুল ইসলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মাইলমারী মসজিদ পাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। রকিবুল দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট। বাবা-মায়ের অভাবের সংসার। তাই তো বাধ্য হয়ে বাবার সাথে এলাকায় কৃষি কাজ করতো রকিবুল। একদিন বাবা জানতে পারেন নিজ গ্রামের পাশের পাড়ার শাকের কর্মকারের ছেলে সাবুর হোসেন বিদেশে লোক পাঠায়। বেতনও ভালো দেয়। জমি বন্ধক রেখে, গোয়ালের দুইটা গরু বিক্রি ও এনজিওতে ঋণ করে ছেলেকে১ হাজার ২ শত রিয়াল বেতনে ক্লিনার ভিসা দিবে বলে পাঠিয়ে দেন সৌদি আরব। যেতে সাড়ে চার লাখ টাকা নগদ গুনে দিতে হয়েছিল দালাল সাবুর হোসেনের হাতে। সৌদি আরবের ক্লিনার ভিসায় পাঠানোর কথা থাকলেও তা না দিয়ে রাজমিস্ত্রির ভারি ভারি তাবুক (সিমেন্টের বড় বড় ব্লক) টানার কঠিন পরিশ্রমের কাজ দেওয়া হয় তাকে। রকিবুল ওই কাজ করতে অপারগতা জানালে প্রতারক চক্র তাকে ক্লিনারের কাজ দেবে বলে আজ না কাল, এ সপ্তাহ না ওই সপ্তাহ এভাবে প্রায় তিন মাস ঘুরাতে থাকে। ওদিকে রকিবুল ঘর ভাড়া ও খাবারের টাকা দিতে পারছে না বলে তাকে রুমে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি কোন খাবারো দেয়া হয় না। এ ঘটনা জানতে পেরে রকিবুলের গরীব অসহায় পিতা নিজের যা কিছু আছে তাই বিক্রি ও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে প্রতি সপ্তাহে ৭ হাজার ২ শত টাকা বাংলাদেশ থেকে বিকাশের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠাতে শুরু করে। এ ঘটনায় রকিবুল ইসলামের পিতা জয়নাল আবেদীন আদম দালাল সাবুর হোসেনের ওপর রাগারাগি করেন। স্থানীয় আরজ আলী জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে চলতি মাসের ১ তারিখে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাবের আলীর বাড়িতে বসে ইউপি সদস্যের মধ্যস্থতায় রকিবুলকে কাজ দেয়ার জন্য সাবুর হোসেনকে আরো ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ওই সময় পার হয়ে ১০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও দালাল সাবুর হোসেন রকিবুলকে কাজ দিতে পারে নাই। এমনকি ১৫ দিনের সময়সীমা পার হওয়ার পরের দিন থেকে রকিবুল ইসলাম এর আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, ১৫ মার্চের আগে রকিবুলকে সৌদি আরবে থাকা খাওয়ার জন্য আমার নিজের হাতে বিকাশের মাধ্যমে ৭ হাজার ২ শত টাকা করে পাঠিয়েছি। আনুমানিক প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আমি পাঠিয়েছি। রকিবুলের বাবা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ক্ষেত খামারে কাজ করে খাই। আমার যা কিছু ছিল বিক্রি করে সাবুর হোসেনের কাছে দিয়েছি আর কিছুই নাই। বড় আশা নিয়ে ছেলে রকিবুলকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে প্রতারণা করলো। আমি আমার ছেলে ও টাকা ফেরত চাই। সেই সাথে প্রতারক চক্রের সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই রকিবুল ইসলাম ১৫ মার্চের পর আর ফোন ধরেনা। সে মারা গেছে না জীবিত—এই চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা এছমা বেগম। অপেক্ষায় আছেন ছেলেকে ফিরে পাবার। এছমা বেগম বলেন, রকিবুলকে ফেরত চাই। আমার বুকের ধন আমার কাছে ফিরে আসুক। আমি ওই দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মাইলমারী গ্রামের কাবের আলী জানান, গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে রকিবুল ইসলামকে সৌদি আরবে পাঠানোর টাকা দেওয়ার সময় আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল। সাবুর হোসেন তাকে সৌদি আরবে নিয়ে ১ হাজার ২ শত রিয়াল বেতনে ক্লিনারের কাজ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর তাকে ক্লিনারের কাজ দেওয়া হয়নি। সাবুর হোসেনের কাছ থেকে শুনেছি তাকে নাকি সৌদি আরবে রাজমিস্ত্রির কাজ দেয়া হয়েছিল তার বয়স কম হওয়ার কারণে সে নাকি ওই কাজ করতে পারে নাই। তবে রকিবুল ইসলামের বর্তমান অবস্থা কি সেটা আমার জানা নাই। শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে সাবুর হোসেনকে বাড়িতে পাওয়া যায় নাই। মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমার ওপর আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। রকিবুল ইসলাম নিখোঁজ নেই আমার সাথে তার কথা হয়। তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ দেওয়া হয়েছে সে করতে পারছে না। সেজন্য কোম্পানি তাকে বসিয়ে রেখেছে কোন ডিউটি দিচ্ছে না। কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা জানান, এই ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নাই। তবে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি হোক এটা আমি চাই। গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply