চীন সরকারকে বিপাকে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্রের অপতৎপরতার তথ্য ফাঁস
ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিআইএ) গোপন এক অভিযান চালানোর অনুমোদন দিয়েছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের সামাজিক মাধ্যমগুলোয় দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলাই ছিল ওই অভিযানের লক্ষ্য।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চালানো অভিযানের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। ছবি: সংগৃহীত
২০১৯ সালে শুরু হওয়া ওই অভিযান সম্পর্কে জানেন এমন কয়েকজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিশেষ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাবেক ওই মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, চীনা সরকারের বিরুদ্ধে ওই অভিযানের জন্য সিআইএ একটি ছোট দল গঠন করে। ওই দলের সদস্যরা ভুয়া পরিচয়ে অনলাইন মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তার সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার চালাতে শুরু করে। বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে ফাঁস করা হয় চীন নিয়ে মর্যাদাহানিকর গোয়েন্দা তথ্যও।
রয়টার্স বলছে, গোপন অভিযানে সম্পৃক্ত সিআইএ সদস্যরা চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে নেতিবাচক প্রচারণা চালান। বিশেষ করে, এসব নেতা অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলে খবর ছড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: হুতিদের সঙ্গে না পেরে ইরানের দ্বারস্থ যুক্তরাষ্ট্র!
এছাড়াও চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে দুর্নীতিতে জর্জরিত প্রকল্প বলে প্রচার চালানো হয়। বলা হয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় শত শত কোটি ডলারের অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বেইজিং। দুই সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযানের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। এতে দেশটির সরকার বাধ্য হয়ে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি অর্থ ব্যয়ে বাধ্য হয়।
এদিকে, এ অভিযানের বিষয়টি জানার পর সিআইএ’র সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। গোপন অভিযান এখনো চলছে কি না এবং এর লক্ষ্য ও প্রভাব কী, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তবে সিআইএর মুখপাত্র চেলসি রবিনসন এসব প্রশ্নের বিষয়ে কোনো সাড়া দেননি।
বিষয়টি নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করে রয়টার্স। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, চীনের বিরুদ্ধে সিআইএ’র এ ধরনের অভিযান প্রমাণ করে যে মার্কিন সরকার সামাজিক ও সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানো এবং আন্তর্জাতিক মনোভাবকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে থাকে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলা /ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৬ অভিযোগ খারিজ
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গোপন ওই অভিযান এখনো চালু রেখেছেন কি না, সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র কেট ওয়াটার্সের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হওয়া হলে, তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে গোয়েন্দা ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন এমন দুই ব্যক্তির সঙ্গে সিআইএ’র এমন অভিযান নিয়ে কথা বলেছে রয়টার্স। তারা জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস থেকে এ ধরনের কোনো গোপন অভিযানের নির্দেশ দেয়া হলে সাধারণত পরবর্তী প্রেসিডেন্ট এলেও তা অব্যাহত থাকে।
Tag: English News others world
No comments: