Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ইউরোপের জন্য ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জরুরি বার্তা




১৯৪০ সালে নাৎসি বাহিনীর কাছে পরাজিত হয় ফ্রান্স। ওই পরাজয়ের পর আশু হুমকি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য দেশের অভিজাতদের ব্যাপক নিন্দা জানান ফরাসি ইতিহাসবিদ মার্ক ব্লোচ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি: সংগৃহীত প্রায় ৮৪ বছর পর ইতিহাসবিদ ব্লোচকে উদ্ধৃত করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক সতর্কতা বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, ইউরোপের অভিজাতরা সেই একই মারাত্মক আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন। গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) এলিসি প্রাসাদে দ্য ইকোনমিস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপ বিষয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এটা ছিল তার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য। কয়েকদিন আগেই (২৫এপ্রিল) ইউরোপের ভবিষ্যত সম্পর্কে একটি দীর্ঘ বক্তৃতা দেন। দুই ঘন্টার ক্যাস্ট্রো স্টাইলের ম্যারাথন ওই বক্তৃতায় পারমাণবিক অস্ত্রের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে শুরু করে ইউরোপীয় বিভিন্ন জোটের প্রসঙ্গ উঠে আসে। ম্যাক্রোঁর সমালোচকরা সেটাকে নির্বাচনী প্রচারণা, সচরাচর ফরাসি আত্ম-স্বার্থ এবং নিজের শাসনামল সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের বুদ্ধিবৃত্তিক অসারতা বলে অভিহিত করেছেন। আমাদের চাওয়া, তাদের এমন মূল্যায়ন সঠিক হোক। ম্যাক্রোর বার্তাটি প্রকৃতক্ষেই যতটা উদ্বেগজনক, ততটাই আকর্ষক। আরও পড়ুন: ‘আফ্রিকায় আধিপত্য হারানোই ম্যাক্রোঁর দুশ্চিন্তার কারণ’ সাক্ষাৎকারে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে ইউরোপ আসন্ন বিপদের মুখোমুখি। সেই সঙ্গে অনেকটা হতাশার সুরেই তিনি বলেন, ‘সবকিছুই খুব দ্রুত ভেঙে পড়তে পারে’। ইউরোপকে নিরাপদ করতে সামনে অনেক কাজ রয়েছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু এই মুহূর্তে একদিকে নিজ দেশে তার জনপ্রিয়তা তলানিতে রয়েছে, অপরদিকে জার্মানির সাথেও সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। ফলে তার বার্তা উপেক্ষা করা হতে পারে এমন একটা ঝুঁকি রয়েছে। ম্যাক্রোঁ যে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন তার পিছনে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে রয়েছে রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান। যুদ্ধ রাশিয়াকে আমূল বদলে দিয়েছে। ম্যাক্রোঁ বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, পারমাণবিক হুমকি, অস্ত্র ও যুদ্ধকৌশলে প্রচুর বিনিয়োগ-সংঘাতের সমস্ত খাতে ‘আগ্রাসী’ ভূমিকা গ্রহণ করেছে মস্কো। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কথায়, রাশিয়া এখন কোন সীমানা মানছে না। এখন মলদোভা, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া বা প্রতিবেশী যেকোনো দেশই যেকোনো সময় তার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে জেতে ইউরোপের নিরাপত্তা ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন ম্যাক্রোঁ। আরও পড়ুন: রাশিয়াকে ক্রিমিয়া ফেরত দিতে বললেন ম্যাক্রোঁ ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপের সামনে যে নতুন বিপদ তার মোকাবিলায় তাকে এখনই সাড়া দিতে হবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা মোতায়েন নিয়ে তিনি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সে বিষয়েও নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে ইউক্রেনে ইউরোপীয় সেনা মোতায়েনের পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন ম্যাক্রোঁ। তার এই প্রস্তাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মিত্র দেশ আতঙ্ক ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন, সেনা মোতায়েনে মিত্র দেশগুলোর অনাগ্রহ রাশিয়াকেই অনুপ্রাণীত করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের সামরিক বোঝাপড়ার বিষয়েও কথা বলেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, আগামীতে যে ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হোন না কেন, ইউরোপকে অবশ্যই ওয়াশিংটনের ওপর সামরিক নির্ভরতা এবং সামরিক সক্ষমতার বিষয়টাকে আন্তরিকভাবে নেয়ার ক্ষেত্রে সকল অনীহাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে কয়েক মাসের মধ্যে একটি বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। ব্রিটেন ও নরওয়ের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোকে সেই বিতর্কে নিয়ে আসা ইউরোপীয় প্রতিরক্ষার জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরি করবে যা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কম বোঝা চাপবে। আরও পড়ুন: ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য পুতিনের পরাজয় জরুরি: ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে প্রদত্ত সুরক্ষা আরও প্রসারিত করার বিষয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক বলে জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তার মতে, এটা নাটকীয়ভাবে অহেতুক গোঁড়ামি ভেঙে ফেলবে এবং বাকি ইউরোপের সাথে ফ্রান্সের সম্পর্ককে আরও মশৃণ করবে। ম্যাক্রোঁনের দ্বিতীয় প্রতিপাদ্য হলো ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পিছনে পড়ে যাওয়ায় শিল্পের ক্ষেত্রে একটা বড় ব্যবধান তৈরি হয়েছে যা উদ্বেগজনক। ম্যাক্রোর মতে, এটা শক্তি ও প্রযুক্তির ওপর বিশেষ করে নবায়নযোগ্য এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় একটা নির্ভরতা তৈরি করেছে। ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপকে এখনই কাজ শুরু করতে হবে, তা নাহলে আর কখনই নাগাল পাবে না। তিনি বলেছেন, আমেরিকানরা ‘চীনাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম মানানোর চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে’। আরও পড়ুন: ইউরোপ ধ্বংস হওয়ার ঝুঁকিতে: ফরাসি প্রেসিডেন্ট মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইনকে ‘একটি ধারণাগত বিপ্লব’ অভিহিত করে তিনি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের মতো দুর্বল শিল্পগুলোতে ভর্তুকি দিচ্ছে। তার কথায় ‘আপনি এমনভাবে চালিয়ে যেতে পারবেন না যেন এটি ঘটছে না।’ এক্ষেত্রে ইউরোপকে মার্কিন ও চীনা ভর্তুকি এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার সাথে তাল মেলানো নয়, ম্যাক্রোঁর সমাধানসূত্র আরও মৌলিক। তিনি ইউরোপের কাজ করার পদ্ধতিতেও গভীর পরিবর্তন চান। তিনি গবেষণা ব্যয় দ্বিগুণ করা, শিল্পকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা, পুঁজিবাজার মুক্ত করা এবং ইউরোপীয়দের ঝুঁকি নেয়ার প্রবৃত্তিতে আরও তীক্ষ্ণ করার পক্ষে। দ্য ইকোনমিস্টের নিবন্ধ থেকে সংক্ষেপে অনূদীত






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply