ট্রাম্প বিজয়ের ১০ কারণ
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
ট্রাম্পের বিজয়ের কারণ কী? এমন প্রশ্ন অনেকেই আমাকে করেছে। কারণ নিয়ে নিশ্চয় আরো অনেক আলোচনা হবে, তবেও আপাত দৃষ্টিতে আমি নীচের কারণগুলি নির্ধারণ করেছি। আপনিও আপনার মতামত তুলে ধরুন।
কারণ অনেকগুলি, তবে কোনটা ঠিক কত ভূমিকা রেখেছে সেটি বলা দুষ্কর।
(১). বাইডেন প্রশাসন নানা ক্ষেত্রে দুর্বলতা দেখিয়েছে যেমন নিত্যপণ্যের দাম কমানো, ইসরায়েলকে গণহত্যা থামাতে ব্যর্থ হওয়া অথবা থামাতে না চাওয়া। কমলাকে প্রশাসনের অংশ হিসেবে এর দায় নিতেই হবে।
(২). মুখে যাই বলুক, কৃষ্ণাঙ্গ এবং আধা ভারতীয় একজন মহিলাকে বেশিরভাগ মানুষ মেনে নিতে প্রস্তুত না।
(৩). সারা পৃথিবীর মতোই প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং উগ্র জাতীয়তাবাদ এ দেশেও বেড়েছে।
(৪). ইমিগ্রেশন এবং দক্ষিণের খোলা বর্ডার দিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ এ দেশে ঢুকে পড়াটাকে শ্বেতাঙ্গরাতো বটেই এমনকি বাংলাদেশি অনেক আমেরিকানেরা মেনে নিচ্ছেনা। এইবারই প্রথম গাজা এবং ইমিগ্রেশন ইস্যুতে বাংলাদেশিরা এবং আরব মুসলিমরা ট্রাম্পকে সমর্থন করেছে।
(৫). ট্রাম্পের সমর্থকেরা একটা ব্যক্তিপূজায় বিশ্বাসী এবং খুবই নিবেদিতপ্রাণ। তাদের সবাই ভোট দিতে যায়, কিন্তু ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকেরা সবসময়ই ভোটে এত আগ্রহ নিয়ে অংশ নেয় না। বিশেষ করে তরুণ ভোটারেরা কম অংশ নেয় যদিও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা ইস্যুতে তারা ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে।
(৬). ল্যাটিনো এবং কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ ভোটারদের একটি অংশ যারা ডেমোক্রেটিক দলের সমর্থক ছিল তারা নানা কারণে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছে। কেউ কেউ হয়ত নারী প্রেসিডেন্ট চায়না, কেউ কেউ মনে করে তাদেরকে ডেমোক্রেটিক পার্টি পকেটের ভোট মনে করে তাদের চাকরিসহ অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টি উদাসীন।
(৭). ইউক্রেনে এত টাকা খরচ করার বিপক্ষেও কিছু মানুষ, এমনকি ডেমোক্রেটিক পার্টিতে আছে। তারা মনে করে ট্রাম্প ফিরে আসতে পারলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ থেমে যাবে। এমন প্রতিশ্রুতি তিনি নিজেই দিয়েছেন।
(৮). কিছু কিছু ইহুদি ডেমোক্রেটিক ভোটারেরা মনে করে ট্রাম্প ইসরায়েলের জন্য অনেক বেশি সাহায্য করবে। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে কিছু মুসলিম ভোটারও আবার মনে করে যেহেতু ডেমোক্রেটিক পার্টি গাজা ধ্বংস থামাতে পারেনি তাহলে ট্রাম্পই ভাল হবে, কিন্তু এইখানে তারা ভুলে গেছে ট্রাম্পের অতীত ইতিহাস এবং ইসরায়েলের ব্যাপারে তার সুদৃঢ় অবস্থান। তেল আবীব থেকে জেরুজালেমে দূতাবাস তিনিই সড়িয়ে এনেছিলেন এবং ৮০% ইসরায়েলের মানুষ ট্রাম্পকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়।
(৯). ট্রাম্প স্বপ্ন দেখিয়েছে আমেরিকার স্বর্ণযুগ একমাত্র তিনিই ফিরিয়ে আনতে পারবেন, কারণ আমেরিকার স্বার্থ - পৃথিবীর অন্যসব দেশের স্বার্থ নয় - তিনি দেখবেন।
(১০). অনেকেই বিশ্বাস করে ট্রাম্পের বিগত চার বছরের শাসনামলে পৃথিবীতে শান্তি ছিল, এত যুদ্ধ ছিলনা। তিনি আবার ক্ষমতায় এলে সব যুদ্ধের অবসান হবে।
শুধু সময়ই বলে দিবে ট্রাম্পের দেওয়া সব প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবসম্মত আর কতটা তার স্বভাবসুলভ মিথ্যাচার।
মো. খালেকুজ্জামান: লক হ্যাভেন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক
No comments: