পাকিস্তান আমল থেকে মেহেরপুরের অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন ডাক্তার বাকী গুণী মানুষ হিসেবে মেহেরপুর বাসী কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন (সাতাশ পর্ব ) ) মেহেরপুরের সমাজ সংস্কৃতিতে ডাক্তার আব্দুল বাকী ছিলেন বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে সংস্কৃতিসেবী, সঙ্গীতপিপাসু, শিল্প-সাহিত্যের সমঝদার এবং মজলিসি স্বভাবের মানুষ। মেহেরপুরের শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবীদের সাথে তার ছিল চমৎকার সম্পর্ক। ডাক্তার. আব্দুল বাকী নদীয়া জেলার তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার শিকারপুর গ্রামে উনিশ শত সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডাক্তার শরিয়ত উল্লাহ। ডাক্তার আব্দুল বাকী বরাবরই একজন কেতাদূরস্ত মানুষ ছিলেন।তিনি কলকাতা ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুল (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল) থেকে এল,এম,এফ ডাক্তারী পাশ করেন। দেশ বিভাগের আগে নদীয়ার শিকারপুরে ডাক্তার. আব্দুল বাকী দীর্ঘ দিন ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। উনিশ শত সাতচল্লিশ সালে দেশ বিভাগের সময়ে তিনি নির্যাতনের শিকার হন এবং এসময়ে তিনি কারাবরণও করেছিলেন। পরে মেহেরপুরে প্রায় অসহায় অবস্থায় চলে আসেন এবং মেহেরপুরের হোটেলবাজার যাদবপুর রোডে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। সন্তানরা জানান, উনিশ শত সাতচল্লিশ সালে আদি ভিটা ছেড়ে শূন্যহাতে আমার বাবা পূর্ব পাকিস্তানের মেহেরপুর জেলায় চলে আসেন। ডাক্তারী পেশায় বাবার অত্যন্ত হাত যশ ছিল।আজও তার নাম মেহেরপুর বাসী কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন।সমাজ সেবামূলক যত প্রতিষ্ঠান ছিল সে সমস্ত সংগঠনের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে ছিলেন। ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।প্রয়োজনে ফুটবল মাঠে প্রায়শঃ রেফারির দায়িত্ব পাল
ন করতেন।বাড়িতে গানের জলসায় কুষ্টিয়া থেকে ওস্তাদ এনামুল হক,ওস্তাদ রবি রায় মত গুণী শিল্পীরা সারারাত ভরে খেয়াল,ঠুমরী, ভজন প্রভৃতি সংগীত পরিবেশন করতেন। ডাক্তারী পেশায় যে সুনাম ছিল যা আজও মেহেরপুর বাসীর স্মৃতির মনিকোঠায় সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।আমার বাবার আত্মার শান্তি কামনায় আপনাদের দোয়া প্রার্থনা করি। মনে পড়ে একবার মেহেরপুরে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এলেন। উঠলেন জননেতা আহম্মদ আলীর বাসায়। আহম্মদ আলী সাহেবের বাসায় ভিতরের রুমে খাটে বসে আসেন মাওলানা ভাসানী। পাশে বসে ডাক্তার আব্দুল বাকী নেতার পেশার মাপছেন। নেতার মুখের কথা শেষ হয় না। ডাক্তার আব্দুল বাকী চুপচাপ পাশে বসে তার কথা শুনছেন এবং ঔষধ লিখে দিচ্ছেন। ডাক্তার আব্দুল বাকীর ডাক্তারী চেম্বার ছিল বর্তমান মেহেরপুর মহিলা কলেজের গলির কোনায়। রোগীদের সেবাই তার উদ্দেশ্য ছিল। কম খরচে তিনি চিকিৎসা দিতেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরুর গাড়িতে করে রোগীরা তার কাছে ছুটে আসতেন। সাইকেলে চড়ে কষ্ট করে তিনি গ্রাম-গঞ্জে রোগী দেখতে যেতেন। উনিশ শত সাতষট্টি সালে তার নেতৃত্বে মেহেরপুরে মধুচক্র নামে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলা হয়। তিনি ছিলেন মধুচক্রের সভাপতি এবং মেহেরপুর বড়বাজারের অধিবাসী মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন মীরু ছিলেন সাধারন সম্পাদক, সাথে ছিলেন ইসলাম আলী, কামরুল হাসান খান ও মীর রওশন আলী মনা। মেহেরপুরের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে মধুচক্রের ব্যাপক অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার পর বেশ কিছু সাহিত্য সংকলন প্রকাশ করে। এর মধ্যে ‘রক্ত স্বাক্ষর’ ও ‘আগামী’ নামে দুটি সংকলন উল্লেখযোগ্য। উনিশ শত ছিয়াত্তর সালে মেহেরপুর কৃষিশিল্প প্রদর্শনীতে মধু বুলেটিন প্রকাশ করে।উনিশ শত পচাত্তর থেকে উনিশ শত আটাত্তর সালে মধুমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায় প্রাচীন মুদ্রা, ভিউকার্ড, ডাকটিকেট, চিত্রশিল্প ও বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী প্রদর্শিত হয়। শুধু মধুচক্র নয়, মেহেরপুরের সকল সাহিত্য,সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জডিত ছিলেন। তাকে ছাড়া কোন সাহিত্য,সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন চলতো না। জানা গেছে, তিনি মেহেরপুরের ১৮ আঠারো টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন তিনি। আবদুল বাকী মেহেরপুরের একজন খ্যাতনামা ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রেফারী হিসেবেও বেশ নাম করেন। সে আমলে আবদুল বাকীর সাথে আরো দু‘জন কৃতী ফুটবল খেলোয়াড়ের নাম পাওয়া যায়, তারা হলেন প্রথম বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য ও বিশিষ্ট আইনজীবি এ্যাডভোকেট মহম্মদ মহসীন উনিশ শত দশ সাল থেকে উনিশ শত চৌষট্টি এবং মেহেরপুর থানাপাড়ার হরিপদ চ্যাটার্জী। তারা তিনজনই চমৎকার ফুটবল খেলে এলাকায় বেশ নাম করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ডাক্তার. আব্দুল বাকীর পুত্র-কন্যাদের মধ্যে অনেকেই সুগায়ক; মেধা-মননে প্রখর ও দীপ্তিমান। নানাকারণেই এক সময় মেহেরপুরে বাকি ডাক্তারের পরিবার খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিল। বড়ছেলে কানাডা প্রবাসী প্রকৌশলী মনজুর আহমেদ ছায়ানটে গান শিখেছেন এবং পাকিস্তানি জামানায় টেলিভিশনে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন এবং এখনো শেষ চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বড়মেয়ে সুরাইয়া জামান, ছোট ছেলে মামনুর আহমেদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিল্পী। বড় মেয়ে সুরাইয়ার কন্যা শাকিলা জাফর দেশ বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী। শাকিলা জাফরের বাল্যকাল কেটেছে আমাদের মেহেরপুরে। তিনি মেহেরপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন এবং ওস্তাদ মিথুন দে এবং ওস্তাদ সন্জুদের কাছ থেকে গান শিখেছেন। পরবর্তীতে বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়া ঢাকায়। ডাক্তার সাহেবের ষষ্ঠ কন্যা শাফিনাজ আরা ইরানী সঙ্গীতকেই বেছে নিয়েছেন জীবন চলার পাথেয় হিসেবে। ডাক্তার. আব্দুল বাকী উনিশ শত বিরাশি সালের ৩ জুন মেহেরপুরে তার বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। মেহেরপুরের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ডাক্তার আবদুল বাকীর অবদান মেহেরপুরবাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। আমরা বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। গ্রটার কুষ্টিয়া নিউজ।গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
Education
»
English News
»
world
»
Zilla News
» পাকিস্তান আমল থেকে মেহেরপুরের অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন ডাক্তার বাকী গুণী মানুষ হিসেবে মেহেরপুর বাসী কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন (সাতাশ পর্ব )
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: