Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » (১৮৬৯ –১৯৪৩) সতোরো শতাব্দিত নবাব আমলে মুরশিদাবাদের নবাব শিকার উপলক্ষে নদীপথে মেহেরপুর আসিয়াছিলেন (পঁচাত্তর পর্ব)




(১৮৬৯ –১৯৪৩) সতোরো শতাব্দিত নবাব আমলে মুরশিদাবাদের নবাব শিকার উপলক্ষে নদীপথে মেহেরপুর আসিয়াছিলেন (পঁচাত্তর পর্ব) মুরশিদাবাদের নবাব শিকার উপলক্ষে নদীপথে মেহেরপুর আসিয়াছিলেন । মেহেরপুরের প্রান্তবাহী ভৈরবের অবস্থা তখন শোচনীয় হয় নাই ; ভৈরব তখন বিশাল আকারে ভৈরব ছিল | নবাবের বজরাগুলি ভৈরব তটে নঙ্গর করা হইলে রাত্রিকালে সহসা এরূপ ঝড়-বৃষ্টি ও দুর্যোগ আরস্ত হইল যে, নবাব পারিষদ-বর্গ সহ বজরায় বাস করা নিরাপদ মনে করিলেন না। প্রচণ্ড ঝটিকায় বজরা ডুবিবার উপক্রম দেখিয়া নবাব বাহাদুর সদলে বজরা ত্যাগ করিয়া তীরে উঠিলেন। নদীতীরে কিছুদূরে এক ঘর সমৃদ্ধ গৃহস্থের বাস ছিল । গৃহস্বামিনীর নাম রাজু ঘোষানী । এই গোপাঙ্গনার খোঁয়াড়ে বিস্তর গো-মহিষ ছিল । দুগ্ধের ব্যবসায়ে তাহার আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল হইয়াছিল । সে অতিথিবৎসল ছিল এবং নিরাশ্রয় গরীব-দুঃখীকে অন্ন বিতরণ করিত | মা কমলা তাহার প্রতি প্রসন্না ছিলেন । সেই ঘন-ঘোর রাত্রিতে দারুণ দুর্যোগের মধ্যে নবাব বাহাদুর রাজু ঘোষানীর গৃহদ্বারে উপস্থিত হইয়া আশ্রয় প্রার্থনা করিলে, রাজু নবাবের পরিচয়

জানিতে না পারিলেও পরম সমাদরে অতিথি-সংকার করিয়াছিল । উৎকৃষ্ট সরু ধানের সুগন্ধযুক্ত চিড়া, “শুকো” দই, পাকা মর্তমান কলা এবং সুস্বাদু গুড় দ্বারা সে নবাব ও তাঁহার অনুচরবর্গের ক্ষুধা-নিবৃত্তি করিয়া সেই রাত্রিতে তাহাদিগকে তাহার গৃহে আশ্রয় দান করিয়াছিল । বিপন্ন নবাব রাজু ঘোষানীর গৃহে অতিবাহিত করিয়া পরিতৃপ্ত ঘোষানীরকে পুরস্কার দানের জন্য তাঁহার আগ্রহ হইল। নবাব বাহাদুর পরদিন প্রভাতে দেখিলেন, ঝড়-বৃষ্টি বন্ধ হইয়াছে, আকাশ নির্মল, আর কোন দুর্যোগের আশঙ্কা ছিল না । নবাব রাজুর নিকট বিদায় গ্রহণের সময় রাজুকে নিজের পরিচয় দিয়া তাহার উপকার করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন । এ কাল হইলে রাজু তাহার সহৃদয়তার পুরস্কার স্বরূপ হয়ত একখানি “সার্টিফিকেট অফ অনর' বা তাহার পুত্র “রায় বাহাদুর অথবা এরকম খেতাব ছাড়া সম্বর্ধিত হইত ; কিন্তু সে কালের নবাব-বাদশাহদের বুদ্ধি কিছু স্থুল ছিল, তাঁহাদের পুরস্কার দানের প্রণালীও বিভিন্ন রকম ছিল । নবাব বাহাদুরের আদেশ শুনিয়া রাজু ঘোষানী করজোড়ে নিবেদন করিল, তাহার পরম সৌভাগ্য যে, সে এক রাত্রি নবাব বাহাদুরের সেবা করিয়া ধন্য হইতে পারিয়াছিল ; সে গৃহস্থের কর্তব্য পালন করিয়াছিল । সে সাধারণ গৃহস্থ রমনী, নবাব বাহাদুরের মর্যাদা রক্ষা করিতে পারে, সে শক্তি তাহার নাই ; এ জন্য সে কুষ্ঠিত। সে কোনরূপ পুরস্কার গ্রহণে সম্মত হইল না। যাহা হউক, অনেক পীড়াপীড়ির পর সে অবশেষে বলিল, তাহার বিস্তর গরু-বাছুর ও মহিশ আছে, কিন্তু সেগুলিকে সে চরাইতে পারে, এরূপ বিস্তৃত গোচারণ ক্ষেত্র নাই । নবাব ইচ্ছা করিলে তাহাকে গোচারণের উপযুক্ত কিছু জমী দান করিতে পারেন । সেই জমীতে তাহার গরুর পাল চরিয়া বেড়াইবে । অতঃপর নবাব বাহাদুরের আদেশে রাজু ঘোষানীর গো-চারণের জন্য বিনা করে একটি বৃহৎ পরগণা প্রদত্ত হইল ; রাজু ঘোষানীর নামানুসারে এখন সেই পরগণা “রাজপুর পরগণা' নামে পরিচিত । রাজু ঘোষানী বিনা করে এই সুবিস্তীর্ণ ভূসম্পত্তি পাইয়া অল্পদিনে বহু অর্থের অধিকারিণী হইল । তাহার আর্থিক অবস্থা পূর্বেই স্বচ্ছল ছিল, এইবার সে রাজার মত সমারোহে বাস করিতে লাগিল ।”বৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply