Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » ”(১৮৬৯ –১৯৪৩) সতোরো শতাব্দিত নবাব আমলে মেহেরপুরে একটি গড় নির্ম্মাণ করেন সেই গড়ের নীচে একটি 'পাতালঘর' নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন সেই স্থান এখনও “গড়বাড়ী' নামে পরিচিত( ছিয়াত্তর পর্ব)




”(১৮৬৯ –১৯৪৩) সতোরো শতাব্দিত নবাব আমলে মেহেরপুরে একটি গড় নির্ম্মাণ করেন সেই গড়ের নীচে একটি 'পাতালঘর' নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন সেই স্থান এখনও “গড়বাড়ী' নামে পরিচিত( ছিয়াত্তর পর্ব) মেহেরপুরে একটি গড় নির্ম্মাণ করেন । সেই গড় এখন বর্তমান নাই, কিন্তু যে স্থানে সেই গড় নির্মিত হইয়াছিল, সেই স্থান এখনও “গড়বাড়ী' নামে পরিচিত । তাহা “গড়ের পু্করিণী' নামে পরিচিত এবং এখন তাহা মিউনিসিপালিটার সম্পত্তি, “রিজার্ভড ট্যাঙ্ক' । রাজু ঘোষানীর উত্তরাধিকারীরা দস্যুভয়-নিবারণের জন্য এই গড়ের নীচে একটি 'পাতালঘর' নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন ; সেই পাতালঘর কিরূপ দীর্ঘ ও কতদূর বিস্তৃত ছিল, তাহা জানিবার উপায় নাই। আমাদের বাল্যকালে এই গড়ের কিয়দংশ খুড়িয়া দেখা হইয়াছিল । শুনিয়াছিলাম, সেই সময় মেহেরপুরের কোন ইংরাজ সিভিলিঘান ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে এই কার্যা আরম্ভ হইয়াছিল ; কিন্তু তিনি সেই কাজটি শেষ করিয়া যাইতে পারেন নাই । তিনি কে, মিঃ এফ, এ, শ্যাক. কি, জে, ডি, এগু্ারসন-_তাহা স্মরণ নাই ; মিঃ এগুারসন বঙ্গসাহিত্যে সুপণ্ডিত ছিলেন ; তিনি ইন্দ্র সেন” বলিয়া নিজের নাম স্বাক্ষর করিতেন এবং ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরিত্যগ করিয়া অক্সফোর্ডে আমাদের দেশীয় ভাষার অধ্যাপক নিযুক্ত হইয়াছিলেন ৷ তিনি সদাশয় ও দেশীয়দের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন রাজ-পুরুষ ছিলেন। আমরা বাল্যকালে গড়-বাড়ীর ভূগর্ভস্থ অংশ কিছু কিছু পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছিলাম |

ছোট ছোট পাতলা ইট বহুদূর পর্যন্ত প্রসারিত ছিল । তাহা দেখিয়া পাতালঘরের ছাদ বলিয়াই মনে হইয়াছিল, কিন্তু ছাতের নীচে যে অংশ ছিল, তাহা কোন দিন খুঁড়িয়া দেখা হয় নাই। দীর্ঘকাল তাহা একই ভাবে পড়িয়াছিল। এতকাল পরে তাহা খুড়িয়া দেখিলে পাতালঘরের অনাবিষ্কৃত অংশের সন্ধান হইতে পারে ; কিন্তু সে জন্য আর কেহ কোন চেষ্টা করেন নাই । বর্তমান মিউনিসিপাল অট্রালিকার অদূরে 'কালাচাঁদ মেমোরিয়াল' হলের পূর্বে যেখানে এখন একটি ছোটখাট কাঁটাল বাগানের অস্তিত্ব বিরাজিত, এবং যাহার ছায়ায় মিউনিসিপালিটীর অনুগ্রহে একটি ক্ষুদ্র উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছে, সেই স্থানে মাটীর নীচে উল্লিখিত পাতালঘরের অস্তিত্ব বর্তমান ছিল | এখন তাহা সমভূমিতে পরিণত হইয়াছে । রাজু ঘোষানীর বংশধররা দীঘি খনন করাইয়া তাহার পশ্চিম পার্থে পাতালঘর নির্ম্মাণ করাইলেও তাঁহারা সেখানে সর্বদা বাস করিতেন না; প্রায় তিন মাইল দক্ষিণে অবস্থিত আমদহ নামক গ্রামে তাঁহারা প্রাসদোপম বাসভবন নির্ম্মাণ করাইয়া সেই স্থানে বাস করিতেন । এখন সেখানে তাঁহাদের বাস্তৃভিটার চিহ্নমাত্র নাই : একটা জলাশয়ের ধারে একটি উচ্চ টিপি সেই অট্টালিকা অস্তিত্বের স্মৃতি বহন করিতেছে; কিন্তু প্রায় দুইশত বৎসর পূর্বে যেখানে প্রাসাদোপম অক্টালিকা ছিল-_সেই স্থানের অবস্থা দেখিয়া তাহা অনুমান করা কঠিন । কৃষকরা এখন সেখানে ধান্য এবং অরহর, সর্ষ, ছোলা প্রভৃতি রবিশস্যের আবাদ করে | আমার ভ্রাতা শ্রীমান সুরেন্দ্রনাথ সেই টিপির ভিতর হইতে বিস্তর অনুসন্ধানের ফলে দুইখানি ইঞ্টক আবিষ্কার করিয়াছিলেন ; তাহাতে দেবনাগরী হরপে কাহারও নামের আদ্যক্ষর লিখিত ছিল । এই সকল স্থান প্রত্ুতত্ববিদ্গণের গবেষণার যোগ্য । শুনিয়াছি, গোয়ালা চৌধুরীদের আমদহের এই বাসভবনের সহিত মেহেরপুরস্থ উক্ত পাতালঘরেব যোগ ছিল । তাঁহারা সুড়ঙ্গপথে তাঁহাদের বাসভবন হইতে অন্যের অদৃশ্য ভাবে গড়ের পাতালঘরে যাইতে পারিতেন । দস্যুর আক্রমণ হইতে ধন-সম্পত্তি রক্ষা করিবার জন্য তাহারা তাঁহাদের টাকা, মোহর ও অলঙ্কারাদি উক্ত পাতালঘরে লুকাইয়া রাখিতেন । বিপদের সম্ভাবনা দেখিলে তাঁহারা সপরিবার সুড়ঙ্গপথে পাতালঘরে আশ্রয় গ্রহণ করিতেন, এরূপ কিংবদস্তীও বাল্যকালে শুনিতে পাইতাম । নবাব আলিবদী খাঁর রাজত্বকালে বর্গীর দল তাহাদের অন্যতম অধিনায়ক ভাস্কর পণ্ডিত দ্বারা পরিচালিত হইয়া পুনঃ পুনঃ বঙ্গদেশ আক্রমণ করিয়াছিল ; তাহারা দক্ষিণ বঙ্গের বনু পল্লী লুঠিত ও বিধ্বস্ত করিয়াছিল-_ইহা কাল্পনিক কাহিনী নহে । “ছেলে ঘুমুলো, পাড়া জুড়ুলো, বর্গী এল দেশে, বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে ?”__ ছেলেমেয়েদের ঘুম পাড়াইবার এই ছড়া বাল্যকালে বহু পল্লীগৃহিনীর মুখে সর্বদাই শুনিতে পাইতাম । আমাদের গ্রামে এই ছড়ার প্রভাব একটু বেশীই ছিল । মেহেরপুর অঞ্চলেও বর্গী দস্যুর শুভাগমন হইয়াছিল । তাহাদের আগমন-সংবাদ পাইয়া রাজু ঘোষানীর বংশধররা তাঁহাদের সঞ্চিত ধনসম্পত্তি সহ আমদহের বাসভবন হইতে পৃবেবাক্তি সুড়ঙ্গ পথে মেহেরপুরের গড়ের পাতালঘরে পলায়ন করিয়া সেই স্থানেই আশ্রয় গ্রহণ করেন । দস্যুরা তাঁহাদের বাসগ্ৰহের বিভিন্ন অংশ খুঁজিতে খুঁজিতে পাছে সুড়ঙ্গ-পথ দেখিতে পায় ও সেই পথে পাতালঘরে প্রবেশ করে, এই আশঙ্কায় তাঁহারা সেই পথ বন্ধ করিয়াছিলেন । মেহেরপুরস্থ গড়বাড়ীতে পাতালঘরে প্রবেশের ও তাহা হইতে বাহির হইবার একটি দ্বার ছিল । গৃহস্বামী পরিজনবর্গ সহ পাতালঘরে আশ্রয় গ্রহণ করিলে তাঁহাদের একজন বিশ্বস্ত ভৃত্য সেই দ্বার বাহির হইতে রুদ্ধ করিয়া গড়ের সন্নিহিত একটি প্রাচীন ও সুবৃহৎ তেতুলগাছে উঠিয়া লুকাইয়া থাকে । বর্গীরা তাঁহাদের আমদহের বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া জন প্রাণীকেও দেখিতে পাইল না, ধনাগারে ধনরত্বাদি কিছুই ছিল না । তাহারা অনুসন্ধানে জানিতে পারিল, মেহেরপুরের গড়ে তাঁহাদের যে বাড়ী আছে, তাঁহারা সেই স্থানে আশ্রয় লইয়াছেন । বর্গীর দল আমদহ হইতে মেহেরপুরে আসিয়া গোয়ালা চৌধুরীদের গড় আক্রমণ করিল ; কেহই তাহাদিগকে বাধা দিল না। কিন্তু তাহারা গড়ের ভিতর প্রবেশ করিয়া কোন গৃহে পুরবাসীদের সন্ধান পাইল না। অগতা তাহারা বিফলমনোরথ হইয়া মেহেরপুর ত্যাগ করিল । কিন্তু দুই একজন বর্গী দস্যু তখনও গড়ের সন্নিহিত বনের ভিতর ঘুরিতে লাগিল । যে বিশ্বস্ত ভৃত্য তেতুলগাছের ডালে বসিয়া গড়ের চারিদিক বর্গীদের দাপাদাপি ও লাফালফি লক্ষ্য করিতেছিল, সে যখন দেখিল, বর্গীরা বিফল মনোরথ হইয়া চলিয়া গিয়াছে, তখন সে ঠেতুলগাছ হইতে নামিয়া প্রভৃকে সুসংবাদ জানাইতে গড়ের দিকে অগ্রসর হইল |।”বৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কবৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply