ক্সেকযারের চোখেমুখে হতাশা স্পষ্ট। এ সপ্তাহের মহাজাগতিক নিলামে তার ওঠানো জিনিসগুলো এখন পর্যন্ত তেমন একটা সাড়া ফেলতে পারেনি। সে অনেক আশা করেছিল যে নিলামে তোলা গ্রাঞ্জিগার থেকে ধরে আনা সোনালি ক্রক্সখ্রত সরীসৃপটার অনেক দাম উঠবে। অর্ধেক যন্ত্র আর অর্ধেক প্রাণের এই ভয়ঙ্কর প্রাণীটাকে ধরতে গিয়ে গ্রাঞ্জিগারের মিথেন বৃষ্টিতে সাত–আট জন শ্রমিককে হারিয়েছে সে। এদের সবাইকেই ইউরেনাস থেকে চড়া দামে দাস হিসাবে পাচার করে এনেছিল সে। এমন একটা শিকারের দাম নিলামে যেমনটা চড়া হবে বলে সে মনে করেছিল, শেষমেশ তার কিছুই হয়নি। ক্সেকযার এখনো ভেবে পাচ্ছে না যে ক্রিমারিয়ান গ্রহের গ্রাকাঙ্গুলাটা নিলামে কীভাবে এত কম দামে বিকিয়ে যেতে পারে! আট পায়ের আর দুই মাথার ভয়ঙ্কর জানোয়ারগুলোকে কে না চায় পোষা প্রাণী বানিয়ে খাঁচায় পুরে রাখতে? হ্যাঁ, ঝামেলা একটাই, গ্রাকাঙ্গুলারা জন্মগতভাবে একটু বেশি খায়। তা, খেলোই না হয় ওরা একটু বেশি! এটাও তো দেখতে হবে যে জানোয়ারগুলোকে পুষতে কখনো জোড়া কেনার প্রয়োজন হয় না। ওগুলো উভলিঙ্গ, কোনোমতে একটাকে কিনতে পারলে নিজে নিজেই ফি বছর নতুন বাচ্চা পয়দা করবে। ক্রেতা তখন বাচ্চাগুলোকে রাখতে চাইলে রাখল, না হলে বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিলো। কিন্তু কিসের কি? পানির দরে জানোয়ারটাকে নিয়ে গেল ব্রেসেস্তিয়া গ্রহের এক মহাজন। আর রাআআআশের সুলতানের যাদু–ছড়ি, গ্রিশমানকোলার এক সামন্ত রাজার টেলিপোর্টেশান করার চাদর কিংবা রোমহানাশাঙ্খ্রার স্যাঁতস্যাঁতে গুহা থেকে উদ্ধার করে আনা কৃত্রিম সিঙ্গুলারিটি মেশিনের কথা তো না বললেই না। এগুলো নিলামে ঠিক দামে বিক্রি করা গেলে দুই–তিন চান্দ্রবছর আর কোনো কিছু না করে দিব্যি শুয়ে বসে কাটিয়ে দিতে পারার কথা। অথচ যে দামে এবার এগুলো বিকিয়েছে, তাতে মজুরদের পেছনে হওয়া খরচটা কেবল কোনোমতে উঠিয়ে আনা গেছে। এটুকু ভেবে অবশ্য ক্সেকযার একটু লজ্জা পেয়ে যায়— আসলে সব ব্যবসায়ীই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই এক কথা বলে। তার আসলে বলা উচিত যে লাভ হয়েছে ঠিকই, খুব বেশি না হতে পারে বটে তবে আবার অতখানি কমও ঠিক না। ইদানীং নিলামে যারা আসে, তারা আসলে হলো গিয়ে সব বারো ভুত। কে যে কি পছন্দ করে আর কি করে না, বোঝা বড়ই মুশকিল। “এবার আপনাদের সামনে হাজির করছি এই ছোট্ট গ্রানাইটের পাত্রটি,” নিলাম পরিচালনাকারী গ্রাঙ্কাচুয়া মঞ্চে উঠে দাঁড়িয়ে বলল। দেখতে প্রকাণ্ড, কথা বলার ভঙ্গিতে কঠিন নাটকীয়তা। মঞ্চের সামনে বসে থাকা অদ্ভূতদর্শন সব ক্রেতা তার হাতের পাত্রটি দেখার জন্য পারলে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সেটা দেখে ক্সেকযার ফোঁস করে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে। নিলামে ওঠানো তার একটা জিনিসেও ক্রেতারা তাদের এখন দেখানো এই আগ্রহের সিকি ভাগও দেখিয়েছে কিনা সন্দেহ। যে এই পাত্রটাকে নিলামে তুলেছে, তাকে ক্সেকযারের রীতিমতো হিংসা হতে থাকে। মোটা শরীরের পেছনে হাত মুড়িয়ে মঞ্চের ওপরে পায়চারি করতে থাকে গ্রাঙ্কাচুয়া। তার করা নাটকটাকে চরমে নিতে জিজ্ঞেস করল, “আপনারা সবাই নিশ্চয় জানতে চান যে এই পাত্রের ভেতরে আসলে কী আছে!” তার কথাগুলো ক্রেতাদের কানে ঢুকছে বলে ক্সেকযারের কাছে মনে হচ্ছে না। গ্রানাইটের পাত্রে কী রাখা আছে ক্রেতারা সেটা নিজেরাই দূর থেকে পাকা জহুরীর মতো আন্দাজ করার চেষ্টা করছে। গ্রাঙ্কাচুয়া হঠাৎ করে মেকিভাবে তার কণ্ঠস্বরটাকে একটু মোটা করে বলল, “এই পাত্রে আছে—” ক্সেকযার নিজেও এখন বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। জিনিসটাতে আসলে আছে কী? ভাল করে দেখার জন্য সে ভিড় ঠেলে সামনের দিকে এগোতে থাকে। মঞ্চের পেছন দিক থেকে একদল বাজিয়ে তাদের ঢাকগুলোতে ছোট ছোট করে বাড়ি দিতে থাকে— “ঠররর… ররর… ররর… ররর… ররর… ঠররর… ররর… ররর… ররর… ররর…।” গ্রাঙ্কাচুয়ার নাটকটা পূর্ণতা পাবার জন্য এর থেকে ভাল কোনো উপাদান আর থাকতে পারে না! টানটান উত্তেজনার একটা আবহ তৈরি হয়েছে মঞ্চটাকে ঘিরে। ঢাকের শব্দের সাথে সাথে ক্রেতাদের হৃদপিণ্ডগুলোও যেন তাদের বুকের খাঁচায় এসে এসে বাড়ি দিতে থাকে। গ্রাঙ্কাচুয়ার চর্বিস্বর্বস্ব থলথলে হাতে ধরে থাকা পাত্রটির দিকে উৎসুক জনতা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। বাজিয়ের দল এবার একটা পেতলের থালায় লাঠি দিয়ে করে শব্দ তুলে তাদের তালটাকে শেষ করে দেয়— “ঠিশশশশশশ…।” নিলাম চলতে থাকা ঘরটাতে একটা সুনসান নীরবতা এসে ভর করে। এবার গ্রাঙ্কাচুয়ার বলার পালা। সে এখন সবাইকে জানিয়ে দেবে যে পাত্রের ভেতরের জিনিসটা আসলে কী। সে পাত্রটাকে খুব সাবধানে ওপরের দিকে ছুঁড়ে মেরে আবার লুফে নেয়— “এই পাত্রের ভেতরে রাখা আছে পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষটার পুড়ে যাওয়া দেহের ছাই!” ক্রেতাদের মুখ দিয়ে অস্ফুট একটা শব্দ বেরিয়ে আসে। ক্সেকযার খুব দ্রুত সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। তাদেরকে দেখেই বেশ বোঝা যাচ্ছে যে এই ফালতু জিনিসটার জন্য পকেটের সব টাকা খরচ করতে তারা সবাই এক পায়ে খাড়া। গ্রাঙ্কাচুয়া তার সামনে বসা ক্রেতাদের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলে, “কিন্তু এখন সবার মনে যেন একটাই প্রশ্ন— এও কীভাবে সম্ভব… এও কীভাবে সম্ভব?” ক্রেতারা একে অন্যের সাথে ফিসফিস করে কথা বলতে থাকে। তাদের কারো কারো চেহারায় বিস্ময়, কারো অবিশ্বাস। মঞ্চের ওপরে হতে থাকা নাটকে এই মুহুর্তে ক্সেকযারের কোনো আগ্রহ নেই। সে এখন রীতিমতো দুশ্চিন্তা করতে শুরু করেছে। নিলামে কোনো একটা জিনিসের প্রতি ক্রেতাদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ অন্য বিক্রেতাদের জন্য চিন্তার কারণ। অতিরিক্ত আগ্রহের কারণে স্বাভাবিকভাবেই জিনিসটার দাম চড়া হতে থাকে। শেষমেশ জিনিসটা যে কিনে ফেলে, সে ফতুর হয়ে যায়। এর পরে তার অন্য জিনিস কেনার মতো হাতে আর তেমন টাকা থাকে না। আর বাকি ক্রেতারা না কিনতে পেরে এক ধরণের হতাশায় ভোগে। এটাই অন্য বিক্রেতাদের চিন্তার মূল কারণ। হতাশাগ্রস্ত ক্রেতারা নিলামের বাকি জিনিসগুলো কেউ আর কিনতে চায় না। আর কেউ যদি কেনেও, তাহলেও ভাল দাম ওঠে না। ক্সেকযার তার হাতে ধরে থাকা মালামালের তালিকাটার দিকে তাকায়। বহু খরচ করে নিয়ে আসা মহাকাশের দুর্লভ আকরিক পেইনাইটের তৈরি রাণী ননয়ার মুকুট আর সার্তমিনশ্চের হ্রদ থেকে তুলে আনা ডার্ক ম্যাটার এখনো তার নিলামে তোলা বাকি। সেগুলোর ভাল দাম পেতে হলে যেভাবেই হোক না কেন, ক্রেতাদের এই ছাইপাশের ওপর থেকে দৃষ্টি সরাতে হবে। “আমি বলব, কেন নয় বন্ধুরা, সবই সম্ভব!” গ্রাঙ্কাচুয়া হাসতে হাসতে তার হাতে ধরা পাত্রটি ক্রেতাদের দেখিয়ে বলে, “নিরপেক্ষে বিশেষজ্ঞ দল তাদের পরীক্ষা চালিয়ে ব্যাপারটা আমাদেরকে শতভাগ নিশ্চিত করেছেন। ৎক্ষিওরিয়ান বীরেরা পৃথিবীকে দখল করে নেওয়ার সময়ে এই মানুষটিকেই সেখানকার সর্বশেষ অধিবাসী হিসাবে তারা আগুনে পুড়িয়ে মেরেছিল।‘ কিন্তু কিভাবে ক্রেতাদেরকে এই জিনিস কেনা থেকে বিরত রাখা যেতে পারে সেটা ক্সেকযার বুঝতে পারে না। একটা তীব্র অস্থিরতা তাকে পেয়ে বসতে থাকে। একটু দম নিয়ে গ্রাঙ্কাচুয়া বলতে থাকে, “ৎক্ষিওরিয়ান বীরেরা এই মানুষটার দিকে তাদের পালসার বন্দুকটি তাক করে বলেছিল যে সে যেন তাদেরকে প্রভু বলে মেনে নেয়… কিন্তু না, মানুষটা ওদের মুখের ওপরে চরম ঔদ্ধত্যে থুতু ছিটিয়ে দিল। অবাধ্যতার পরিণাম?” হাত দুটো কোমরের ওপরে রেখে মঞ্চের একপাশ থেকে ধীর পায়ে হেঁটে অন্যপাশে যায় গ্রাঙ্কাচুয়া। তারপর বলতে থাকে, “চোখের পলকে অবাধ্য মানুষটা ভস্ম হয়ে গেল! ছাই হয়ে লুটিয়ে পড়ে থাকল পৃথিবীর তেজস্ক্রিয় মাটিতে!” ক্সেকযার এখন আর ঠিকমতো চিন্তা করতে পারছে না। তার গোটা শরীর অসাড় হয়ে আসতে থাকে। তার পা দুটো যেন এখন আর তার শরীরটাকে ধরে রাখতে পারছে না। ক্রেতাদের এমন দুর্ল্ভ একটা জিনিস নিজের সংগ্রহে রাখার আগ্রহ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ক্সেকযার তার অভিজ্ঞতা থেকে বেশ বুঝতে পারে যে জিনিসটা অনেক চড়া দামে বিক্রি হবে। “সেই অর্থে কিন্তু বন্ধুরা আমার, শুধু পৃথিবীরই নয়—” গ্রাঙ্কাচুয়া তার শরীর দুলিয়ে দুলিয়ে বলতে থাকে, “গোটা মহাবিশ্বেরই সর্বশেষ মানুষের অবশেষ এখন আমার হাতে।” কিছুক্ষণ আগেও বিস্ময় আর অবিশ্বাসের দোলাচলে থাকা ক্রেতারা এবার নিশ্চিন্ত বোধ করতে থাকে। তাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে গ্রাঙ্কাচুয়ার মুখে সূক্ষ্ম একটা হাসির রেখা ফুটে ওঠে— যাক, ক্রেতাদের ভেতরে আগ্রহ তৈরি করা গেছে! জিনিসটা বিক্রি করতে পারলে সেও কমিশন পাবে। তাই যত দাম বেশি হবে, ততই তারও লাভ! মহাবিশ্বের সর্বশেষ মানুষটার অবশেষ নিজের সংগ্রহে রেখে দেয়ার জন্য তাদের সবার মধ্যে এক ধরণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। মুহুর্তের ভেতরে লাফিয়ে লাফিয়ে জিনিসটার দাম বাড়াতে থাকে তারা। অবস্থা বেগতিক দেখে ক্সেকযার চিৎকার করে বলল, “দাঁড়ান সবাই—”, সে যে খুব ভেবেচিন্তে সবার আগ্রহ বন্ধ করার জন্য একটা বুদ্ধি বের করেছে, তাও নয়। দরদাম হাঁকতে থাকা ক্রেতারা সবাই অবাক হয়ে তার দিকে তাকায়। ক্সেকযার নির্বিকার ভঙ্গিতে গ্রাঙ্কাচুয়ার দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, “বুজরুকি মারার জায়গা পাওনা তুমি?” সবার মুখ দিয়ে অস্ফুট একটা শব্দ বেরিয়ে আসে। তাহলে কি এতক্ষণ ধরে নিলাম পরিচালনাকারি তাদের ভুলভাল বুঝিয়েছে? গ্রাঙ্কাচুয়া মঞ্চের ওপরে দাঁড়িয়ে আড়ষ্টবোধ করতে থাকে। সৃষ্টিকর্তার কসম! তার বলা একটা কথাও মিথ্যা না, বড়জোর একটু রঙ চড়িয়েছে সে! ক্সেকযার যেন বোমা ফাটাল, “আগ্রাসী ৎক্ষিওরিয়ানদের হাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার আগেই একদল মানুষকে মহাকাশযানে করে গোপনে পৃথিবীর বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।” ক্রেতাদের সবার মধ্যে ততক্ষণে মৃদু গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই পুরো ব্যাপারটাতে তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে থাকে। ক্রেতাদের ভিড়ের ভেতর থেকে কেউ একজন জিজ্ঞেস করে, “তারপর?” “তারপর—” কথাটা শেষ করতে গিয়ে ক্সেকযারের তার গলার স্বরটাকে এমনভাবে নিচে নামিয়ে ফেলল যে যেন গলাটা তার ধরে আসছে। গ্রাঙ্কাচুয়ার মতো না হলেও অভিনয়টা তার একেবারে খারাপ না। “… তারপর ওদের সবাই একটা আকস্মিক দূর্ঘটনায় মারা পড়ে।” “তা সেটা তুমি জানলে কী করে?” ভীড়ের ভেতর থেকে প্রশ্ন এলো। ‘আমি জানি…,’ কয়েক সেকেন্ড সময় নেয় ক্সেকযার। নিজের ঠোঁট দুটোকে ভিজিয়ে নেয় সে। ক্রেতাদের আগ্রহ পুরোপুরি ঘুরিয়ে দিতে পেরে সে দারুণ খুশি। কিন্তু চোখেমুখে সেটা প্রকাশ করতে দেয়া যাবে না। দৃঢ়কণ্ঠে বলল সে, “আমি জানি কারণ আমি হলাম সেই দূর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র মানুষ।” ক্রেতারা সবাই হা হয়ে তাকিয়ে থাকে ক্সেকযারের দিকে। অনেকে আবার সন্দেহে ভুরু কুঁচকে ফেলে— ক্সেকযার কি আসলেও মানুষ? কীভাবে বুঝবে তারা— ওরা দেখতে যে কেমন সেটাই তো কেউ জানে না। ৎক্ষিওরিয়ান বীরেরা বলতে গেলে মানুষদেরকে শেকড় ধরে উপড়ে ফেলেছে! ক্রেতাদের চোখে সংশয় আর অবিশ্বাস দেখতে পেয়ে ক্সেকযার ততক্ষণে কথা বলার সাহস পেয়ে গেছে। সে আড়চোখে মঞ্চে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রাঙ্কাচুয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে তার গলাটা উঁচিয়ে বলল, “এখন আপনারাই বলুন— আমি যদি এখনো বেঁচেই থাকি, তাহলে এটা কীভাবে মহাবিশ্বের সর্বশেষ মানুষের অবশেষ হতে পারে?
Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: