Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » মিথ :সাপ কি গরুর দুধ খায়




মিথ :সাপ কি গরুর দুধ খায় সাপ নিয়ে অনেকের স্বাভাবিক কৌতূহল থাকে। প্রাণীটি কীভাবে জীবন যাপন করে, জানতে চান অনেকে। সচরাচর সাপ দেখা যায় না। হাইবারনেশ বা শীতনিদ্রা, অন্ধকারে চলাচল ও দীর্ঘ সময় গর্তে লুকিয়ে থাকায় সাপের জীবন সম্পর্কে সরাসরি জানা যায় না সহজে। এ ছাড়া বিভিন্ন পৌরাণিক গল্পে রয়েছে সাপ নিয়ে নানা রকম মিথ বা কিংবদন্তি। এসব পড়ে বা শুনে মানুষ সাপ সম্পর্কে এমন সব ধারণা রাখে, যেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক নয়। এ রকম একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি হলো, সাপ গরুর দুধ পান করে। গ্রামে বড় হয়েছেন বা বাড়িতে গরু পোষা হতো, এমন অনেকে দাবি করেন, সাপকে তাঁরা গরুর পেছনের পা বেয়ে উঠতে দেখেছেন। কেউ কেউ আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বলেন, গরুর ওলান থেকে সরাসরি দুধ খেতেও দেখেছেন তাঁরা সাপকে। তাঁদের দাবির সঙ্গে যুক্তি জুড়ে দিয়ে কেউ কেউ বলেন, সাপের তো পিপাসা লাগে। তাই সাপ দুধ পান করতে পারে। মুভিতে দেখেছি, সাপ দুধ পান করে। সাপের পিপাসা লাগে, সত্যি। সে জন্য প্রাণীটি পানি পান করে। তবে দুধের বিষয়টি একদমই ঠিক নয়। পৃথিবীর কোনো সাপের প্রজাতি খাদ্য বা পানীয় হিসেবে দুধ পান করে না। দুধ পান করার কোনো প্রয়োজনীয়তা তাদের নেই। দুধ পান

করা বা করানো স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। সরীসৃপ হিসেবে তাই সাপের কোনো স্তন্যপায়ী গ্রন্থি নেই। দুধ বা ল্যাকটেট উৎপাদন করতে পারে না এসব প্রাণী। সাপের দাঁতের গঠন গরুর ওলান থেকে দুধ খাওয়ার উপযোগী নয়। গোয়ালঘরে বা গরুর আশপাশে সাপ সাধারণত ইঁদুর খুঁজতে বা ধরতে যায়। স্তন্যপায়ী প্রাণী জন্মের পর মায়ের দুধ পান করে। তাই মা-প্রাণীদের দেহে দুধ উৎপাদনের ব্যবস্থা থাকে। এসব প্রাণী অন্য কোনো প্রাণীর দুধ পান করে না। এর মধ্যে শুধু মানুষ ব্যতিক্রম। মানবশিশু মায়ের দুধ পান করলেও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দুধ সংগ্রহ করে গরু, ছাগল বা এ ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে। সাপের দাঁতের গঠন গরুর ওলান থেকে দুধ খাওয়ার উপযোগী নয়। গোয়ালঘরে বা গরুর আশপাশে সাপ সাধারণত ইঁদুর খুঁজতে বা ধরতে যায়। কৃষকের বাড়িতে গোয়ালঘরের পাশে গোলাঘর বা ভাঁড়ার ঘর থাকে। সেখানে ইঁদুর ও পোকামাকড় খাবারের লোভে উপস্থিত হয়। এগুলো খেতে সাপ উপস্থিত হতে পারে। সাপুড়েরা খেলা দেখানোর জন্য সাপ পালেন। কাঠের বাক্সে এসব সাপ আটকে রাখেন তাঁরা। বিশ্বের অনেক দেশে পোষা প্রাণী হিসেবেও সাপ পালন করা হয়। আবার পোষ না মানলেও কাচের বাক্সে রাখা হয় সাপ। অ্যাকুরিয়ামে যেভাবে মাছ রাখা হয়, সে রকম। যাঁরা সাপ পালেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো পুষ্টিকর তরল হিসেবে সাপকে দুধ খাওয়াতে চান। মনে করেন, সাপকে দুধ খেতে দিলে অতিরিক্ত পুষ্টি পাবে। কিছু মানুষ দুধ হজম করতে পারে না। তাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট বলা হয়। আর ল্যাকটোজ সহ্য করতে না পারার বিষয়টিকে বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। যেসব সাপকে চলচ্চিত্রে দুধ পানের দৃশ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়, সেগুলো আসে সাপুড়েদের সংগ্রহ থেকে। সাপুড়েরা সাপকে দীর্ঘদিন ডিহাইড্রেটেড করে রাখেন। খাবার ও পানীয় দেন না। তখন সাপ বাধ্য হয়ে যেকোনো তরল পান করে। অর্থাৎ সাপ এমনিতে দুধ পান করে না। শুধু পানি পান করে। তাও মাঝেমধ্যে। অন্যান্য সরীসৃপের মতোই, দুধের সঙ্গে সাপের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে কোনো সাপ যদি খুব বেশি তৃষ্ণার্ত হয়, তবে যেকোনো তরল দিলেই তা পান করতে পারে। দুধ দিলে দুধ যেমন পান করবে, অন্য যেকোনো তরল দিলেও পান করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ রকম তৃষ্ণার্ত সাপকে দুধ দিলে ভালোর চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। কোনো প্রাণী দুধ হজম করতে পারবে কি না, তা নির্ভর করে তাদের অন্ত্রে ল্যাকটেজ এনজাইমটি উপস্থিত আছে কি না, তার ওপর। দুধ হজমের জন্য অবশ্যই ল্যাকটেজের উপস্থিতি থাকতে হয়। এনজাইমটি ল্যাকটোজ নামের একটি প্রোটিন যৌগকে ভাঙতে পারে। আর বেশির ভাগ প্রাণীর দুধেই প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটোজ উপস্থিত থাকে (প্রক্রিয়াজাত না করা হলে)। তাই দুধ খেয়ে হজম করার জন্য এই এনজাইমের উপস্থিতি আবশ্যক। কিছু মানুষ দুধ হজম করতে পারে না। তাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট বলা হয়। আর ল্যাকটোজ সহ্য করতে না পারার বিষয়টিকে বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, অর্থাৎ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু। সাপের পাচনতন্ত্রে ল্যাকটেজ থাকে না। চিন্তা করলেই তাই বোঝা যায়, প্রাকৃতিকভাবে সব প্রজাতির সাপ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু। ভারত ও ইউরোপীয় পৌরাণিক কাহিনিতে দেখা যায়, সাপ গরুর ওলান থেকে দুধ চুমুক দিয়ে খায়। এগুলো শুধুই গল্প। ইতিহাসে এমন কোনো ঘটনা পাওয়া যায় না। কেউ এ রকম ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করতে পারেনি। জেনেটিক বা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সাপের দুধ পান করা যুক্তিযুক্ত নয়। পানিই একমাত্র তরল, যা সাপ পান করতে পারে। সব প্রজাতির সাপের জন্যই এটা সত্যি। প্রাণিজগতে সব জীবের বেঁচে থাকার জন্যই পানি প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট আরেকটি প্রশ্ন হলো, কিছু সাপ কি মায়ের দুধ পান করে? এর উত্তর হলো, কোনো সরীসৃপ মা তার সন্তানের জন্য দুধ উৎপাদন করে না। আসলে, সরীসৃপ প্রাণী তাদের বাচ্চাদের খাওয়ায় না, যেমন কচ্ছপ, টিকটিকি, কুমির। ডিম ফুটে বের হওয়ার আগে ডিমের ভেতরের কুসুম বাচ্চা সাপ শুষে নেয়। প্রয়োজনে সাপের ছানা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত কিছু না খেয়ে কুসুম থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে। বাড়তি কিছু খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। পানিই একমাত্র তরল, যা সাপ পান করতে পারে। সব প্রজাতির সাপের জন্যই এটা সত্যি। প্রাণিজগতে সব জীবের বেঁচে থাকার জন্যই পানি প্রয়োজন। কোনো প্রাণী পানি পান না করলে পানিশূন্যতায় ভুগবে এবং অবশ্যই মারা যাবে। সাপের বেঁচে থাকার জন্য খুব কম পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয়। মোটকথা, দুধ পানের কোনো প্রয়োজনীয়তা বা কারণ সাপের নেই। সাপ কী খায়, কীভাবে শিকার করে—এসব নিয়ে অনেক তথ্যচিত্র আছে। এগুলো দেখে সাপ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা সম্ভব। বেশ কিছু বইপত্রও লেখা হয়েছে এসব প্রাণী নিয়ে। এগুলোও জানার জন্য সহায়ক। তা ছাড়া ইন্টারনেটের বিপুল জগৎটি তো রয়েছেই। একটুখানি ঘাঁটাঘাঁটি করলেই বোঝা সম্ভব, কোনটা সত্যি আর কোনটা শুধুই কিংবদন্তি। সূত্র: পেট এডুকেট ডট কম, টাইমস অব ইন্ডিয়া






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply