Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » সুডোকু যেভাবে জনপ্রিয় হলো




সুডোকু যেভাবে জনপ্রিয় হলো সুডোকু একধরণের লজিক্যাল পাজল। বাংলায় বলা যায় ধাঁধা। সংখ্যার সাহায্যে এ ধাঁধা সমাধান করতে হয়। সুডোকুতে মোট ৮১টি ঘর থাকে। ঘরগুলোর মধ্যে আবার ৩×৩ আকারের ৯টি বর্গ থাকে। প্রতিটি কলামে ও সারিতে ১-৯ পর্যন্ত সংখ্যা একবার বসাতে হবে। একই সংখ্যা একাধিক বার বসানো যাবে না। আবার প্রতিটি ৩×৩ আকারের বর্গেও একই শর্ত মানতে হবে। যাহোক, সুইডিশ গণিতবিদ লিওনার্ড অয়লারের হাত ধরে প্রথম সুডোকুর উদ্ভব হয়। এরপর ফ্রান্সের বিভিন্ন পত্রিকা ঘুরে তা যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের হাওয়ার্ড গার্নস নামের এক স্থপতি যুক্তরাষ্ট্রে সুডোকু জনপ্রিয় করেন। এরপর সুডোকু জাপানে পৌঁছে যায়। মূলত জাপানে যাওয়ার পরই সুডোকু বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর সুডোকুকে জনপ্রিয় করার কাজটি করেন জাপানের নাকোলি পাজল কোম্পানির সভাপতি মাকি কাজি। জাপানের সুডোকু জনপ্রিয় হওয়ার একটা বিশেষ কারণ ছিল। জাপানে সুডোক আসার আগেও নানা ধরণের ধাঁধা ও পাজলের চল ছিল। কিন্তু ভাষার কারণে সেগুলো সমাধান করা একটু জটিল ছিল। তাছাড়া, ভাষাগত সমস্যার কারণেই জাপানের ধাঁধাগুলো দেশের বাইরের মানুষ বুঝতে পারতেন না। জাপানি ভাষার ধাঁধার সম্পূর্ণ অর্থ বজায় রেখে সেই পাজল অনুবাদ করাও ছিল বেশ জটিল। কিন্তু সংখ্যার ধাঁধার ক্ষেত্রে এ ধরণের সমস্যা নাই। ফলে জাপানে সংখ্যাভিত্তিক পাজল অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৮৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে নিকোলিস্ট পত্রিকায় নিয়মিত সুডোকু প্রকাশ করেন মাকি কাজী। এ ধরণের সুডোকু আগে যুক্তরাষ্ট্রের ডেল পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সেই সুডোকুকে আরেকটু আধুনিকায়ন করেছেন মাকি কাজি। তিনি সুডোকুতে আরও দুটি নতুন নিয়ম যোগ করেন। প্রথম, সুডোকুর মধ্যে একটা ভিন্ন প্যাটার্ন থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি, ৮১টি ঘরের মধ্যে ৩২টির বেশি ঘর পূরণ করা যাবে না। এই দুটি শর্তের কারণে সুডোকু আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সুডোকুকে জনপ্রিয় করতে মাকি কাজি ৬০ দেশে ভ্রমণ করেন। এরপর ধীরে ধীরে সুডোকু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাজ্যে সুডোকুর প্রচার করেন হংকংয়ের বিচারক ওয়েন গোল্ড। তিনি একটি জাপানি দোকানে আংশিক পূরণ করা একটি ধাঁধা দেখেছিলেন। ধাঁধার বইটি তিনি কিনে নেন। এরপর ছয় বছর খাটাখাটি করে একটি তৈরি করেন কম্পিউটার প্রোগ্রাম। উদ্দেশ্য, অতি দ্রুত নতুন ও অন্যন্য সুডোকু তৈরি করা। গোল্ড জানতেন, যুক্তরাজ্যের পত্রিকাগুলোতে অনেক আগের থেকেই বিভিন্ন ধাঁধা ও পাজল ছাপা হয়। তিনি বৃটেনের দ্য টাইমস পত্রিকায় তাঁর সুডোকু প্রমোট করেন। ২০০৪ সালের ১২ নভেম্বর বৃটেনে দ্য টাইমস পত্রিকায় প্রথম সুডোকু ছাপা হয়। নাম দেওয়া হয় সু ডোকু। ২০০৫ সালের জুলাই মাস থেকে ব্রিটেনের ‘চ্যানেল ৪’ সুডোকুর প্রচার শুরু করে। একই বছর ২ আগস্ট বিবিসির প্রোগ্রাম গাইড রেডিও টাইমস সাপ্তাহিক ১৬×১৬ বর্গের সুপার সুডোকু ফিচার করে। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাম্পশায়ারে দ্য কনওয়ে ডেইলি সান পত্রিকায় ওয়েন গোল্ডের সুডোকু প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল। সুডোকু নিয়ে প্রথম টিলেভিশন শো প্রতিযোগিতা হয় ২০০৫ সালে ১ জুলাই। ব্রিটিশ চ্যানেল স্কাই ওয়ানে ‘সুডোকু লাইভ’ নামে প্রথম এ শো হয়েছিল। শো-এর উপস্থাপন করেছিলেন ক্যারল ভর্ডারম্যান। মোট দল ছিল ৯টি। প্রতি দলে এক জন খেলোয়াড় এবং সঙ্গে একজন সেলিব্রেটি ছিল। সে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বৃটেনের উইনচেনশিয়ার ফিল কোলিন। পুরস্কার হিসাবে পেয়েছিলেন ২৩ হাজার পাউন্ড। এই শো যারা দেখেছেন, তাঁদেরও এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল। অর্থাৎ, দর্শকরা বাসায় বসেই অংশগ্রহণ করত। এ প্রতিযোগিতার পর যুক্তরাষ্ট্রে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সুডোকু। একই বছর বিবিসিও সুডো-কিউ নামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ প্রতিযোগিতায় ৪×৪ ও ৬×৬ বর্গের সুডোকু ছিল। ২০০৭ সালে এ প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগে চার সেশন চলে এটা। ২০০৬ সালে একটি ওয়েবসাইটে অস্ট্রেলিয়ান গীতিকার পিটার লেভির সুডোকু নিয়ে একটি গান প্রকাশ করা হয়। গানটিতে দারুণ সাড়া পড়ে। তবে এতো বেশি সাড়া পড়েছিল যে, উচ্চ ট্রাফিকের (অনেক ভিজিটর) কারণে গানটিকে সরিয়ে নিতে হয়। এরপর ব্রিটিশ ও অস্ট্রেলিয়ান রেডিও গানটি কিনে নেয়। জাপানি দূতাবাস গানটিকে পুরস্কারের জন্যও মনোনীত করেছিল। যাহোক, সুডোকু এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে, কম্পিউটার, মোবাইলফোন এমনকি বিভিন্ন ওয়েবসাইটেও সুডোকু মেলানো যায়। পাওয়া যায় মোবাইল অ্যাপও। পাশাপাশি সুডোকু নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক গেম। ই-বুক রিডার কিন্ডল, নুক ও আইফোনেও সুডোকুর দেখা পাওয়া যায়। একসময় নোকিয়া মোবাইলের স্বর্ণযুগেও সুডোকু ছিল। ২০০৬ সাল থেকে বিশ্ব সুডোকু চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়। অলিম্পিকের মতো বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ এ প্রতিযোগিতার জন্য দল পাঠায়। দলগত এবং ব্যক্তিগত উভয় প্রতিযোগিতাই আছে সুডোকুতে। প্রতিটি দেশ ছয়জন খেলোয়াড় ও একজন ক্যাপ্টেন পাঠাতে পারে। তবে ক্যাপ্টেন খেলায় অংশগ্রহণ করেন না। প্রতিযোগিতায় সুডোকুর বিভিন্ন ধাঁধার বৈচিত্রময় সমাধান করতে হয়। সুডোকু আজ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এক ধাঁধা। বুদ্ধির ব্যায়ামও হয় সুডোকু মেলালে। অনেকের হাত ধরে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে সুডোকু। বুদ্ধিতে গোড়ায় শান দিতে চাইলে সুডোকুর বিকল্প নাই। সূত্র: উইকিপিডিয়া ও সুডোকু ডট কম






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply