আধুনিক তুরস্কের জাতির জনক মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন আর তাঁর আদর্শ আজ কেন হুমকির মুখে? “বন্ধুগণ, আগামীকাল আমরা প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করবো!” ১৯২৩ সালের ২৯শে অক্টোবরের আগের দিন নীতি নির্ধারকদের সাথে এক নৈশভোজে এমনটা বলেছিলেন মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক। পরের দিন পার্লামেন্টে এক ভোটের মাধ্যমে তুরস্ক নতুন ধরনের সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। “প্রজাতন্ত্র দীর্ঘজীবী হোক!” “মুস্তাফা কামাল পাশা দীর্ঘজীবী হোন!” আইন প্রণেতারা এমন স্লোগান দিচ্ছিলেন। তুরস্ক প্রজাতন্ত্র ঘোষণার এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিয়েছিল এবং ধীরে ধীরে একটি নতুন বৈশ্বিক কাঠামো তৈরি করেছিলে। তবে এই ঘোষণার শত বছর পর আতাতুর্কের সেই লিগ্যাসি বা আদর্শ এখন হুমকির মুখে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আধুনিক তুরস্কের জনক হিসেবে পরিচিত আতাতুর্ককে অনেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া উসমানীয় সাম্রাজ্য বা তুর্কী সাম্রাজ্যের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মূলহোতা হিসেবেও মনে করে থাকেন। তবে তাকে নিয়ে পরস্পর বিরোধী মত থাকলেও, আতাতুর্ক যে বিংশ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, তা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি ১৫ বছর তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর দেশটির নতুন ভূমিকা কী হবে তা সুনির্দিষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৮ সালেই উসমানীয় সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন শুরু হয়। ১৮৮১ সালে থেসালোনিকি নামে একটি গ্রিক শহরে জন্মগ্রহণ করেন মুস্তাফা কামাল। এই শহরটি সাবেক উসমানীয় সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। এই সাম্রাজ্য কোন দিকে মোড় নিচ্ছে সে বিষয়ে উদ্বিগ্ন একটি প্রজন্মের একজন সদস্য ছিলেন মুস্তাফা কামাল। তখনো তিনি অবশ্য আতাতুর্ক উপাধি পাননি। ১৯৩৪ সালে তুরস্কের পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে আতার্তুক উপাধি দেয়, যার অর্থ 'তুর্কি জাতির জনক'। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ এই সাম্রাজ্যটির ভৌগলিক সীমা তখন কমে আসছিল। জাতীয়তাবাদী এবং অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ডের ইতিহাসের অধ্যাপক ও তুরস্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইউসেল ইয়ানিকদাগ বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, “সেসময় সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য মনে করতো, উসমানীয় সাম্রাজ্যকে পতনের হাত থেকে বাঁচানোর একমাত্র পথ হচ্ছে একে পশ্চিমা ধারায় আধুনিকীকরণ করা।” সেনাদের এই দলটি ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমর্থন করতো। তিনি বলেন, “তার মানে এই নয় যে, তারা ধর্ম কিংবা ইসলামকে পছন্দ করতো না। বরং তারা মনে করতো, ধর্ম আসলে কোন না কোন ভাবে সামাজিক উন্নয়নের গতিকে ধীর করে দিচ্ছে।” এ কারণে মুস্তাফা কামাল আতার্তুক তার নিজের দেশের আধুনিকীকরণে কিছু সংস্কার আনেন যা তুরস্ককে চিরতরে বদলে দেয়। এই সংস্কারগুলোর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের মাধ্যমে তুর্কীদের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ করতে দেয়ার সুযোগ তৈরি করা। তার নেতৃত্বাধীন প্রজাতন্ত্র আন্দোলনের রেশ ধরে তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ১৯২৩ সালের ২৯শে অক্টোবর তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের জন্ম ঘোষণা করা হয়। নতুন দেশের মৌলিক বৈশিষ্ট ছয়টি মূল ধারণার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। কামাল আতাতুর্ক যেহেতু এই ধারণাগুলো প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাই একে কামালবাদ বা আতাতুর্কবাদও বলা হয়। এই ছয়টি ধারণা হচ্ছে প্রজাতন্ত্র, জনতুষ্টি, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং সংস্কারবাদ। অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মতে, তার লিগ্যাসির বা আদর্শের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ করা। ইয়ানিকদাগ বলেন, “উসমানীয় সাম্রাজ্য ছিল বহু-জাতি, বহু-ধর্মের মিলিত একটি সাম্রাজ্য। আর তিনি জানতেন এটিই এই সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল।” আতাতুর্কের উদ্দেশ্য ছিল এই সব জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে একটি মাত্র চেতনার অন্তর্ভুক্ত করে তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের অধীনে নিয়ে আসা। এই চেতনা ছিল: পুরো তুরস্কে একটি মাত্র জাতিগোষ্ঠী থাকবে, আর সেটি হচ্ছে ‘তুর্কি জাতীয়তাবাদ’। এটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য সংস্কার। এছাড়া গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ, ১৯২৬ সালের সাংবিধানিক সংশোধনের মাধ্যমে উসমানীয় খিলাফত বিলুপ্ত করা, সংস্কারকৃত ল্যাটিন বর্ণমালার মাধ্যমে আরবি বর্ণমালা প্রতিস্থাপন এবং ১৯২৮ সালে আইন করে তুর্কি বর্ণমালা চালুর জন্য আতাতুর্কের কাছে তুরস্ক ঋণী। একইভাবে, ‘আধুনিক তুর্কির প্রতিষ্ঠাতা’ ১৯২৬ সালে নতুন একটি আইন পাস করেন যার মাধ্যমে দেশটিতে ভোটাধিকার ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৪ সালে তার শাসনামলেই নারীরা ভোটাধিকার পায়। আর্জেন্টিনা, কলম্বো, মেক্সিকো বা ভেনেজুয়েলার আগে তুরস্কে এই অধিকার পায় নারীরা। তুরস্কে সম্মানিত মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক আঙ্কারাকে তুরস্কের নতুন রাজধানী ঘোষণা করেন। এর আগে আঙ্কারা কয়েক হাজার বাসিন্দার ছোট একটি শহর ছিল। দেশের রাজধানীকে ভৌগলিকভাবে কেন্দ্রীয় অবস্থানে আনতে এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আঙ্কারার আগে তুরস্কের রাজধানী ছিল ইস্তানবুল। তার এই কাজের জন্য নিজের দেশে একজন সম্মানিত ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তুরস্কের লেখক নেদিম গুরসেল বিবিসি মুন্ডোকে বলেন, “আমার মনে আছে, আমি যখন প্রাথমিক স্কুলে পড়াশুনা করতাম তখন আতাতুর্কের কীর্তি নিয়ে আমি কবিতা লিখতে শুরু করি।” “তুরস্কে নিঃসন্দেহে তার ব্যক্তিত্বের বেশ বড় সমর্থন রয়েছে। কামালিস্ট লিগ্যাসি বা তার আদর্শ শুধু তুরস্কের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং পুরো মুসলিম বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমার মনে হয়, বর্তমান সময়ে এসে আমাদের তার সমালোচনাও করা উচিত,” বলেন তিনি। “দ্য নভেল অব দ্য কনকারার” নামে একটি বই লিখেছেন তিনি যেখানে তুর্কিদের কাছে কিভাবে কনস্টান্টিনোপলের (বর্তমান ইস্তানবুল) পতন হয়েছিল সেই গল্প বলা হয়েছে। কামাল আতাতুর্ক এবং তার সঙ্গীরা মনে করতেন যে, তুরস্ককে পাল্টে দিতে যেসব সংস্কার করা দরকার সেগুলো কার্যকর করতে হলে কর্তৃত্ববাদই সবচেয়ে ভাল উপায়। “খুব কম সময়ের মধ্যে তিনি একজন কর্তৃত্ববাদী শাসকে পরিণত হন এবং তিনি মূলত গণতন্ত্রের নাম-নিশানা মুছে দিয়েছিলেন। ১৯৩২ সালের দিকে তিনি গণতন্ত্রের কিছু উপাদান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সব মিলিয়ে তিনি একজন কর্তৃত্ববাদী শাসক ছিলেন,” বলেন আলি ইয়াইসিউগলু। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির উসমানীয় সাম্রাজ্য এবং আধুনিক তুরস্ক বিষয়ক ইতিহাসবিদ। বিতর্কিত চরিত্র তুরস্কের সীমানার বাইরে ইউরেশিয়ার এই দেশটিকে বদলে দেয়া ব্যক্তি সম্পর্কে আলাদা আলাদা মতামত রয়েছে। মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক গ্রেকো-টার্কিশ বা গ্রিস-তুরস্ক যুদ্ধে তুর্কি সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই যুদ্ধটি ১৯১৯ সাল থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্বল সেনা নিয়েও তিনি এই যুদ্ধে জয় লাভ করেছিলেন। ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থল বা তথাকথিত এশিয়া মাইনরের এই যুদ্ধে দু'পক্ষই নৃশংসতা চালিয়েছিল এবং লাখ লাখ মানুষকে বিতাড়িত করে। আতাতুর্ক আনাতোলিয়া (বর্তমান তুরস্ক) থেকে গ্রিক সেনা এবং জাতিগত গ্রিক বাসিন্দাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেন। পরে অবশ্য এই বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয় এবং এর নাম দেয়া হয় “গ্রিস ও তুরস্কের মাঝে জনসংখ্যা বিনিময় করা”। এ কাজটি করা হয়েছিল মূলত ভূ-রাজনৈতিক কারণে। ১৯২৩ সালের লসান চুক্তির আওতায় এই জনসংখ্যা বিনিময়ের অংশ হিসেবে ১৫ লাখ গ্রিক অর্থোডক্স খ্রিস্টানকে তুরস্ক থেকে গ্রিসে বিতাড়িত করা হয়। এদের অনেকে কখনোই তুরস্কের বাইরে বসবাস করেননি। এছাড়া মুসলিম কিছু জনসংখ্যাকেও তুরস্ক থেকে গ্রিসে বিতাড়িত করা হয়েছিল। মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক আর্মেনিয়াতেও মতভেদের জন্ম দিয়েছিলেন। দেশটি ১৯২২ সাল পর্যন্ত একটি পরাধীন দেশ ছিল। আর্মেনিয়ার জনগণ দাবি করেছিল যে, তাদের ভূখণ্ডের কিছু অংশ তুরস্কের দখলে ছিল এবং অন্যান্য কিছু এলাকা সোভিয়েত রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল। “আমার মনে হয় না আর্মেনীয়রা আতাতুর্ককেই সম্পূর্ণভাবে দায়ী করে। কিন্তু তিনি যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আর্মেনিয়ার গণহত্যার সময়ও নৃশংসতা অব্যাহত রেখেছিল,” বিবিসি মুন্ডোকে বলেন ইয়াইসিউগলু। “এর কারণ হচ্ছে অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে, এর মাধ্যমে তুর্কীরা লাভবান হয়েছিল। সেসময় লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল এবং ১০ লাখের বেশি মানুষকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। কারণ আতাতুর্কের ঘনিষ্ঠ অনেক কর্মকর্তা ছিল “যারা গণহত্যায় অংশ নিয়েছিল এবং যুদ্ধে আর্মেনীয়দের বিপক্ষে লড়াই করেছে,” বলেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওই ইতিহাসবিদ। কুর্দি প্রশ্ন তুরস্কের মধ্যেও একটি জাতিগত গোষ্ঠী রয়েছে যারা মনে করে কামালের প্রতিষ্ঠিত আদর্শের কারণে তারা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। তারা হচ্ছেন কুর্দি জনগোষ্ঠী। উসমানীয় সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যাওয়ার পর, তুরস্কে কুর্দি জনগোষ্ঠীর গতিধারা বদলে দেয়া হয়। ধর্মনিরপেক্ষ জাতি গঠনে কামালের প্রতিষ্ঠিত নতুন আদর্শের আওতায় পুরনো সাম্রাজ্যের অনেক মানুষ আগ্রাসনের শিকার হয়েছেন। তার আদর্শ ছিল এক ভাষা, এক জাতিগত বিশ্বাস এবং এক সাংস্কৃতিক মতাদর্শে তুরস্ক প্রতিষ্ঠা করা। রিচমন্ড ইউনিভার্সিটির ইউসেল ইয়ানিকদাগ বলেন, কুর্দিদের স্বকীয়তা অস্বীকার করা হচ্ছিল কারণ কামাল চেয়েছিলেন, তুরস্কে বসবাস করা সবাই মেনে নিবে যে তারা এখন ‘তুর্কী’। ফলে ১৯৩৬ এবং ১৯৩৯ সালে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দেরসিম এলাকা যা বর্তমানে তুনসেলি নামে পরিচিত সেখানকার বাসিন্দারা নতুন প্রতিষ্ঠিত তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর ফলে তুর্কী সামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ হারায় কুর্দি জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। এই ঘটনা কুর্দি বিদ্রোহের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। তারা এখনো তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চলেছে। সেসময় দেশের জাতীয়তাবাদীদের জন্য এটি বেশ আকর্ষণীয় ছিল। কারণ আতাতুর্ক তখনও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন এবং তার দত্তক নেয়া কন্যা সাবিহা গোকেন যিনি দেশটির প্রথম নারী পাইলট ছিলেন, তিনিও এই আক্রমণে অংশ নিয়েছিলেন। “ধর্মনিরপেক্ষতা কারো কারো জন্য স্বস্তিকর হলেও অনেকের জন্য এটা ছিল কুর্দি, আর্মেনীয়, গ্রিক, চেচেন, আরব, সার্কাসিয়ানদের পরিচয়কে অস্বীকার করা,” বলেন ইয়ানিকদাগ। আদর্শ হুমকিতে? অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আতাতুর্কের লিগ্যাসি বা আদর্শ এবং তিনি তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের আওতায় যা গড়ে তুলেছিলেন- তা এখন হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষতা। ২০২০ সালের জুলাইয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান তুরস্কের সবচেয়ে আইকনিক স্থাপনা হাগিয়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করার ঘোষণা দেন। হাগিয়া সোফিয়া প্রথমে একটি ব্যাসিলিকা বা খ্রিস্টানদের গির্জা ছিল পরে যেটিকে ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদের আদেশে মসজিদে পরিণত করা হয়। কিন্তু পরে আতাতুর্ক ১৯৩৫ সালে দেশটিকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে হাগিয়া সোফিয়াকে একটি যাদুঘরে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। এই স্থাপনাটিকে মুসলিম বা খ্রিস্টানদের প্রার্থনা স্থল হিসেবে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেন তিনি। এ কারণেই তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট কয়েক দশক পর সোফিয়ায় নামাজের অনুমতি দিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। “আতাতুর্ককে সরাসরি আঘাত যাতে করতে না হয় সে বিষয় বরাবরই সতর্ক থাকতেন এরদোয়ান। কারণ তুরস্কে আতাতুর্কের সমর্থকরা তাকেও সমর্থন দিয়ে এসেছে। কিন্তু একই সাথে গত কয়েক বছর ধরে তিনি আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠিত নীতি এবং আদর্শকে নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন,” বলেন ইতিহাসবিদ আলি ইয়াইসিউগলু। তার মতে, হাগিয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত সেটারই “উল্লেখযোগ্য এবং স্পষ্ট” ইঙ্গিত। প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম কয়েক বছর, যেসব গির্জাকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময় মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছিল সেগুলোকে যাদুঘরে পরিণত করা হয়। ইস্তানবুলের বিখ্যাত হাগিয়া সোফিয়া ছাড়াও একই শহরের সেইন্ট সেভিয়র অব হরা নামে আরেকটি গির্জা এবং ট্রাবজোন এলাকার আরেকটি হাগিয়া সোফিয়াকেও যাদুঘরে পরিণত করা হয়। “গত ১০ বছর ধরে এরদোয়ানের সরকার ধীরে ধীরে এই স্থাপনাগুলোকে আবার মসজিদে রূপান্তর করতে শুরু করেছে,” বলেন ইয়াইসিগলু। “তাদের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ও নাগরিক জীবনে আবারো ইসলামকে এমন ভাবে সূচনা করার প্রতি ইঙ্গিত করে যা অবশ্যই মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের আদর্শের পরিপন্থী।” অনেক বিশেষজ্ঞের মতো ইয়াইসিগলুও মনে করেন, এরদোয়ানের পদক্ষেপ বড় কোন নীতির অংশ যাতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ছাপ রয়েছে। একই সাথে এটি সেই সাম্রাজ্য ছোট আকারে প্রতিষ্ঠার একটি প্রয়াস যেখানে ইসলাম একটি বড় ভূমিকায় ছিল। আতাতুর্ক তার নিজের দেশকে যেমন করে গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এটা অবশ্যই তার পরিপন্থী।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
English News
»
politics
»
world
» আধুনিক তুরস্কের জাতির জনক মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন আর তাঁর আদর্শ আজ কেন হুমকির মুখে?
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News

No comments: