করোনার অ্যান্টিবডি কত দিন থাকে-জানালেন বিজ্ঞানীরা
মহামারি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ করোনাজয়ীদের ঝুঁকিও কমছে। কারণ তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি (রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা) তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এখন নতুন তথ্য জানালেন বিজ্ঞানীরা।
Bashundhara LP Gasবিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগী কয়েক মাসের ব্যবধানে এ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। নতুন গবেষণায় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে মানুষ পুনরায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। অর্থাৎ সাধারণ ঠান্ডা–জ্বরের মতোই এটা মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, রোগীদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তিন মাসের ব্যবধানে হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন কিংস কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক।
অ্যান্টিবডি কত দিন থাকছে মানুষের শরীরে—এ প্রশ্ন মহামারির শুরু থেকেই উঠছে। এ নিয়ে গবেষণাও হচ্ছিল। যুক্তরাজ্যে এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হলো। যুক্তরাজ্যের গাইস অ্যান্ড সেন্ট থমাস এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের ৯০ জন রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। এ গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ার দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা বেশ শক্তিশালী এবং পরবর্তী সময়ে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে সক্ষম। তবে ৬০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটছে। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো, তিন মাস পরে এ সংখ্যা ১৭ শতাংশে নেমে আসছে। অর্থাৎ এ ৬০ শতাংশ মানুষের মধ্যে শুধু ১৭ শতাংশের শরীরে তিন মাস পরে অ্যান্টিবডি থাকছে, যা করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে সক্ষম। এ সময়ের মধ্যে অ্যান্টিবডি ২৩ ভাগের ১ ভাগে নেমে আসছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে শরীরে অ্যান্টিবডি আছে কি না- এটা জানাই যাচ্ছে না।
কিংস কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, রোগীদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তিন মাসের ব্যবধানে লোপ পেয়ে যাচ্ছে। কিংস কলেজ লন্ডনের এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কেটি ডুরেস।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে এ অ্যান্টিবডি আবার নষ্ট হচ্ছে। এটা অবশ্য নির্ভর করছে মানুষের শরীরে সংক্রমণের মাত্রা কতটুকু তার ওপর। এ মাত্রার ওপর নির্ভর করছে অ্যান্টিবডি কত দিন থাকবে।
কিংস কলেজের এ গবেষণা এমন সময়ে এলো, যখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করোনার টিকা আবিষ্কারে লাগাতার কাজ করছে। এ টিকার বিষয়টিও উঠে এসেছে গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, মানুষের শরীরের রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থা বিভিন্ন পন্থায় করোনার সঙ্গে লড়াই অব্যাহত রাখে। তবে এই লড়াইয়ের সম্মুখে থাকে অ্যান্টিবডি।
গবেষণা থেকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, মৌসুমি রোগের মতো এ করোনায়ও মানুষ একাধিকবার আক্রান্ত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, টিকা মানুষকে খুব বেশি দিনের জন্য সুরক্ষা দিতে পারবে না।
কেটি ডুরেস বলেন, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর রোগীর শরীরে যদি তিন মাস অ্যান্টিবডি থাকে, তবে টিকা থেকেও সে তিন মাসই সুরক্ষা পাবে। ধারণা করা হচ্ছে, টিকার এক ডোজ যথেষ্ট হবে না সুরক্ষার জন্য।
No comments: