আফগানিস্তানের মতো সিরিয়া থেকেও সেনা সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার তিনটি ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে পরাজয়ের পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন।
আফগানিস্তানের মতো সিরিয়া থেকেও সেনা সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
সামরিক সূত্র ইরানের চ্যানেল আল-আলমকে এই খবর দিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, যে তিনটি ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে তার মধ্যে একটি ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত যার অবস্থান ছিল সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আজ-জাওয়ার প্রদেশের আল ওমর তেলক্ষেত্রের কাছে।
বাকি দুটি ঘাঁটির অবস্থান ছিল সিরিয়ার দূরবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাসাকা প্রদেশের সীমান্তবর্তী কামিশলি এলাকায়।
২০১১ সালে সিরিয়ায় বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব শুরু করে। এরপর ২০১৪ সালে তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র কয়েকটি দেশ সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালায়।
বহু দেশের সমন্বয়ে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক জোট করলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাদের কার্যকর কোনো হামলা চালাতে দেখা যায়নি।
এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাশিয়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে।
আরও পড়ুন: খাদ্য সংকটে আফগানিস্তান, এগিয়ে আসছে না কেউ
রাশিয়া, ইরান এবং হিজবুল্লাহ সহায়তায় সিরিয়ার সেনারা ধীরে ধীরে দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে সক্ষম হলেও আমেরিকা দেশটিতে অবৈধভাবে দামেস্ক সরকারের বিনা অনুমতিতে বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলে।
এ সমস্ত ঘাঁটির অনেক সিরিয়ার তেল সম্পদ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত বলে বাশার আল-আসাদের সরকার সুস্পষ্ট অভিযোগ করে আসছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হয়েছে।
এদিকে ইরাকি শিয়া বদর সংস্থার মহাসচিব হাদি আল-আমেরি একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ তাদের সামরিক উপস্থিতি এ বছরের শেষনাগাদ শেষ করবে। আমরা ইরাক থেকে বিদেশি বাহিনি প্রত্যাহারের সময়সীমার ওপর জোর দিচ্ছি। এ বছরের শেষের দিকে আমারা ইরাক থেকে বিদেশি বাহিনীর প্রস্তাব দেখব।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে সম্মাননা পেল বাংলাদেশ
গত দুই দশক আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করে রেখেছিল আফগানিস্তান। গত ৩১ আগস্ট সর্বশেষ সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে মাত্র দু’দিনের মাথায় সিরিয়া থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের খবরটি সামনে এল।
এশিয়ার কেন্দ্রীয় দেশ থেকে ওয়াশিংটন তাদের কুটনৈতিক উপস্থিতি শেষ করেছে। যদিও তালেবানরা নতুন শাসনব্যবস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের কুটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল।
কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে এশিয়া অঞ্চলে হস্তক্ষেপ করে লাভ নেই। তাই তারা সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পিছু ফেরার এসব সিদ্ধান্তে ওয়াশিংটন কুটনৈতিক নীতির সমালোচনা করছেন অনেক মার্কিনি। তাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত লজ্জা ও অপমানজনক।
সূত্র: তাসনিম নিউজ এজেন্সি, পার্সটুডে।
Tag: English News world
No comments: