রাশিয়া-ন্যাটো সংঘাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা!
রাশিয়া বনাম পশ্চিমাদের ছায়াযুদ্ধ যেনো ক্রমেই রূপ নিচ্ছে সত্যিকারের সংঘাতে। একদিকে, ইউক্রেনের পতন হলে রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট ন্যাটোদেশগুলো এমন আশঙ্কায় মস্কোকে দমনে কৌশল খুঁজছে জোটটি। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে, সরাসরি পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে ক্রেমলিন।
ন্যাটো ইউক্রেনে সেনা পাঠালে জোটটির সাথে সরাসরি সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। ছবি: সংগৃহীত
শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের উস্কানিতেই ঘোলাটে হচ্ছে গোটা পরিস্থিতি, অভিযোগ তুলেছে মস্কো। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত মস্কোর সঙ্গে সামরিক জোটটির সম্পর্ক। এ অবস্থায় বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে কোনোভাবে সংঘাত বাধলে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ দেখবে বিশ্ব।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই রাশিয়া ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যকার তিক্ত সম্পর্ক ভূরাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। এর মধ্যে সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চলছে দু'পক্ষের নানা বাকবিতণ্ডা।
কিয়েভে সেনা পাঠানো নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের পর সরাসরি পশ্চিমাদের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সীমান্তে কিংবা ইউক্রেনে সেনা পাঠালে ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, মস্কোর হাতে পশ্চিমা দেশগুলোয় আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র রয়েছে বলেও সতর্ক করেন পুতিন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা নেই ন্যাটোর
ন্যাটো-রাশিয়া সম্পর্ক যখন ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, ঠিক তখনই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন, যুদ্ধে ইউক্রেনের পতন হলে রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট হবে ন্যাটো দেশগুলো। এমন আশঙ্কার পর জোটের সদস্যদের, বিশেষ করে বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মস্কো। ন্যাটো-রাশিয়া সংঘাতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর পরিকল্পনা আছে বলেই দেশটি বারবার পরিস্থিতি উস্কে দিয়ে, সংঘর্ষ বাধাতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও কোনো হুমকি-ধামকি দিয়ে দমানো যাবে না বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে রাশিয়া।
ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে কি-না, এমন আশঙ্কা বরাবরই মস্কো উড়িয়ে দিলেও পুতিনের পরমাণু হামলার হুমকির পর, নতুন করে শুরু হয়েছে সমালোচনা। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে ন্যাটো কি প্রস্তুত? এমন প্রশ্নও উঠেছে।
আরও পড়ুন: সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে হাঙ্গেরির সম্মতি
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, একদিকে, ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে পিছু হটলেও অন্যদিকে ঠিকই মস্কোকে দমনে কৌশল খুঁজছে ন্যাটো। রাশিয়াকে শক্তি দেখাতে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া চালাচ্ছে জোটটি। মস্কোর সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় লাখো সেনাবহর নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
পাশাপাশি বাল্টিক সাগরেও তড়িঘড়ি করে শক্তিশালী হচ্ছে জোটটি। প্রতিরক্ষা জোরদার করতে রুশ সীমান্তে বাঙ্কার নির্মাণের পরিকল্পনাও নিয়েছে। ন্যাটোর দাবি, আগামী ২০ বছর মস্কোর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ১৯৬২ সালের কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর পশ্চিমাদের সঙ্গে সবচেয়ে টানাপোড়েনে রাশিয়া। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে কোনোভাবে সংঘাত হলে, বাধতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
Tag: English News politics world
No comments: