Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » কচুরিপানায় ভরে গেছে মেহেরপুরের ভৈরব নদী হুমকিতে জলজ জীববৈচিত্র্য




মেহেরপুরের ভৈরব নদী দেখভালের অভাবে খননের ৫ বছর যেতে না যেতেই কচুরিপানায় ভরে গেছে। কচুরিপানার জঞ্জালে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীটির বেহাল দশা। হুমকিতে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র। কমে গেছে মাছের উৎপাদন ফলে জেলেদের জীবন-জীবিকাতেও টান পড়েছে। এলাকাবাসী বলছে সরকার ভৈরব নদীটি পুণর্খনন করে নদীটির নাব্যতা এনে জীবন বাঁচিয়েছে। তবে নদীটির ভারতীয় অংশ খনন না করার ফলে স্রোত হারা হয়েছে ভৈরব। স্রোতের অভাবে কচুরিপানা দখল করেছে ২৯ কিলোমিটার এলাকা। যদি এভাবে চলে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে নদীটি মৃত খালে পরিণত হতে পারে বলে সচেতনদের ধারণা।

পানি ?উন্নয়ন বোর্ডের ভাষ্য কচুরিপানার জটে নদীতে পানির স্রোত কমে গেছে। স্রোতের অভাবে একই স্থান থেকে কচুরিপানা নদীর বেশিরভাগ স্থনে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি সরকার ভৈরবের বাকি অংশ খনন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই সময় একেবারে কচুরিপানা পরিষ্কার করে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। নদটির কাথুলী, গাড়াবাড়িয়া, সহগলপুর, কুলবাড়িয়া, কালাচান্দপুর, দারিয়াপুর অংশ ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, নদীর বেশিরভাগ অংশের পানি ঢেকে গেছে কচুরিপানায়। সামান্য কিছু অংশ এলাকার মানুষ গোসল করার জন্য পরিষ্কার করেছে। সেখানে স্বচ্ছ পানি দেখা গেছে। কিছু মাছ শিকারিকে কচুরিপানা সরিয়ে ছিপ ফেলে মাছ ঘরার আয়োজন করতে দেখা গেছে। সদর উপজেলার কালাচান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা বর্ষীয়ান আলহামদু মিয়া, রহমান শেখ, মছের আলী বলেন, একসময় নদীতে অনেক স্রোত ছিল। দেশ ভাগের আগে ভৈরব নদীতে পানির জাহাজ চলত। খুলনা যশোর মেহেরপুর হয়ে কলকাতায় যেত পণ্যবাহী জাহাজ। সেসব এখন ইতিহাস। ২০১৭ সালে সরকার ভৈবর নদী খনন করলে এলাকার মানষের মধ্যে আনন্দ ও উৎসাহ দেখা দিয়েছিল। কিন্তু অযতœ অবহেলায় নদী কচুরিপানায় ভরে গেছে। অনেকে ময়লা ফেলে কচুরিপানায় ওপরে। কচুরিপানা পচে দুর্গন্ধ বের হয়। সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে ভৈরব বয়ে গেছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা গৃহিনী আয়েশা খাতুন বলেন, নদী খননের পরে স্বচ্ছ পানিতে এলাকার অনেকে গোসল করত। ছেলে মেয়েরা গোসল করতে গিয়ে ছোট জাল দিয়ে ছোট ছোট মাছ ধরে আনতো। এখন কচুরিপানার কারণে কেউ নদীতে গোসল করতে নামে না। মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের পরিবেশবিদ অধ্যাপক মাসুদ রেজা বলেন, ২০১৫ থেকে ২০১৭ মেয়াদে প্রায় ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হয় ২৯ কি.মি. ভৈরব নদী। খননের পর খরস্রোতা হয়ে জেগে উঠে নদীটি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে অবমুক্ত করা হয় মাছের পোনা। ধীরে ধীরে মৎস্যজীবীদের বিচরণ ভূমি হয়ে ওঠে ভৈরব। ভৈরবের পানি দিয়ে এলাকায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছিল। অথচ খনন পারবর্তী এই পাঁচ বছরের ব্যাবধানে সেই সুবিধা এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে কচুরিপানা। নদীর বুকে এখন কচুরিপানার রাজত্ব। এর সাথে যোগ হয়েছে পৌরসভার পয়ঃনিষ্কাসনের দূষিত পানি। ফলে ভৈরব খনন পরবর্তী মানুষ দিন দিন যে সুফল পেতে শুরু করেছিল সেই সুফল থেকে আবার বঞ্চিত হতে হচ্ছে ভৈরব পাড়ের অধিবাসীরা। মেহেরপুর পৌর শহরের থানা পাড়ার বাসিন্দা জাকের আলী বলেন, যখন পুনরায় ভৈরব খনন করা হয় তখন এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে মৎস্যজীবী মানুষগুলো তাদের জীবিকার উৎস খুঁজে পেয়েছিল। কিন্তু কয়েকবছর যেতে না যেতেই আবারো কচুরিপানায় ভরে যায় নদীটি। কচুরিপানা অপসারণ না করার কারণে মানুষ হতাশ হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাহিনুজ্জামান বলেন, ভৈরব তার সৌন্দর্য় হারিয়েছে কচুরিপানার জন্য এটি একেবার সত্য। সম্প্রতি দেশে কচুরিপানা অপসারনের জন্য একটি মেশিন তৈরি করা হয়েছে। পানি উন্নয়নের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে একটি মেশিনের জন্য। সরকার নতুন করে আবারো ভৈরবের বাকি ৩০ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নিয়েছে। ওই সময় কচুরিপানা সরিয়ে ফেলা হবে। উল্লেখ্য ভৈরব নদী খনন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল ঐতহিাসিক মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে ভৈরব নদী খননের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মতো ভৈরব নদীর মেহেরপুর অংশে ২৯ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রসিকপুর গ্রাম থেকে এই খনন কাজ শুরু হয় ২৩ এপ্রিল ২০১৫ সালে। ৩০ এপ্রিল ২০১৭ সালে খনন কাজ শেষ হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৭০ কোটি ৬৫ লাখ ৫১ হাজার ২১৬ টাকার খরচ করে ভৈরব নদী খনন করে। বর্তমানে ভৈরবের বাকি ৩০ কি.মি. মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা অংশের খনন কাজ চলছে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply