মেহেরপুরের সাহিত্য:মুন্সী শেখ জমিরুদ্দীন (১৮৭০ – ২ জুন ১৯৩৭) খ্যাতনামা লেখক ও ইসলাম প্রচারক ------------------------------------------------------------- আমার জীবনী ইলাম-গ্রহণ বৃত্তান্ত
-মুন্সী শেখ জমিরউদ্দিন পরম দয়ালু আল্লাহতালার নামে আরম্ভ করিতেছি ৷ আমার নাম শেখ মোহাম্মদ জমিরুদ্দীন। ১২৭৭ সালের ১৫ই মাঘ সোমবার তারিখে, জেলা নদীয়ার অন্তর্গত গাড়াডোব - বাহাদুরপুর গ্রামে আমার জন্ম হয় । আমার পিতার নাম শেখ আমিরুদ্দীন। তিনি একজন গোঁড়া মুসলমান ছিলেন এবং মুসলমান ধর্ম্মের নিয়মানুসারে যাবতীয় ক্রিয়া কলাপ করিতে কখনও কুণ্ঠিত হইতেন না। আমার পিতা আমাকে মুসলমান ধৰ্ম্মে দৃঢ় বিশ্বাসী করণার্থে আমার পাঁচ বৎসর বয়ঃক্রম কালে আমাকে একটা মতবথানায় ভর্তি করিয়া দেন। আমি মক্তবথানাতে কল্পেক বৎসর অতি যত্ন ও পরিশ্রম করিয়া পবিত্র মুসলমান ধৰ্ম্মে দৃঢ় বিশ্বাসী হইয়া, রোজা নমাজ ইত্যাদি কার্যা করিতে আরম্ভ করি। তাহার পর আমার পিতা বাঙ্গালা ভাষা শিক্ষা করণার্থে আমাকে বঙ্গ বিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। আমি বাঙ্গালা ব্যিালয়ে ভর্তি হইয়া অতি অল্প দিনের মধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করি। পরে আমার পিতা আমাকে ইংরেজী ভাষা শিক্ষার্থে কোন স্কুলে প্রেরণ করেন। কিন্তু সেখানে আমার বিশেষ অসুবিধা হওয়াতে আমি কৃষ্ণনগরে গমন করি । কৃষ্ণনগরে পড়িতে পড়িতে মিসনারীদিগের সহিত আমার আলাপ হয় । তাঁহারা আমাকে বড় স্নেহ করিতেন; আবার আমিও তাঁহাদিগকে বড় ভক্তি করিতাম। পরে জনৈক মিসনারী আমাকে “বাইবেল” ও “ইসলাম দর্শন” ইত্যাদি কতকগুলি খ্রীষ্ট ধৰ্ম্ম সংক্রান্ত পুস্তক প্রদান করেন; আমি তাহা অতি যত্ন পূর্ব্বক পাঠ করি। উক্ত পুস্তক যে আমি সমস্তই যুঝিতে পারিতাম এমন নহে । যে যে স্থানে বুঝিতে না পারি- তাম, সেই সেই স্থানে পেন্সিল দিয়া চিহ্ন করিয়া রাখিতাম এবং সময় ও সুযোগ অনুসারে মিসনারীদিগের নিকটে বাইয়া বুঝিয়া লইতাম । আমি যখন উক্ত পুস্তকগুলি তাঁহাদের নিকট বুঝিয়া লইতে যাইতাম, তখন তাঁহারা বড়ই সন্তুষ্ট হইতেন ও অতি যত্নের সহিত বুঝাইয়া দিতেন । যাহা হউক, উক্ত পুস্তক গুলি পাঠ করিতে করিতে আমার মনে মুসলমান ধৰ্ম্মে অবিশ্বাস ও খ্রীষ্ট ধর্ম্মে বিশ্বাস জন্মে। এই প্রকারে খ্রীষ্ট ধৰ্ম্মে আমি আসক্ত হই। খৃষ্ট ধর্ম্মের নিয়মানুসারে বাপ্তাইজ না হইলে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না; এই বিশ্বাসে আমিও বাপ্তাইজ ; হইতে ইচ্ছুক হইলাম এবং মিসনারীদিগের নিকট আমার মনো- ভাব প্রকাশ করিলাম। তাঁহারা আমার মনোভাব অবগত হইরা আমাকে আরও কিছুদিন ধৈর্য্য ধারণ করিতে বলিলেন এবং আরও কতকগুলি পুরুষ প্রদান করিলেন এবং সময়ে সময়ে নিকটে যাইয়া উপদেশ গ্রহণ করিতে পরামর্শ দিলেন। যাহা হউক এই সময় আমার হৃদয়ে এই অমূলক বিশ্বাস বদ্ধ- মূল হইল যে, “দীন ইস্লাম” মিথ্যা ও খৃষ্ট ধৰ্ম্ম সত্য। খ্রষ্ট পাপীর প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছেন, কিন্তু হজরত মোহাম্মদ ( দরুদ ) পাপীর প্রায়শ্চিত্ত করেন নাই। পরে আমি পুনরায় মিসনারী- দিগের নিকটে যাইয়া বাপ্ৰাইজ হইবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলে পর তাঁহারা আমার প্রতি বিশেষ সন্তুষ্ট হইয়া আমার বাপ্তাই- জের একটা দিন স্থির করিয়া দেন। ইতিমধ্যে আমার বান্তা- ইজ হইবার কথা আমার বাটীস্থ লোকে জানিতে পারিয়া অতীব দুঃখিত হন এবং আমাকে বাটীতে ফিরাইয়া লইবার জন্য আমার নিকটে গমন করেন। আমার পিতা, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ইত্যাদি অনেকেই আমার নিকটে আসিলেন এবং আমাকে অনেক বুঝাইলেন, কিন্তু আমার মন কিছুতেই তাঁহাদের কথায় প্রবোধ মানিল না ; সুতরাং আমি আর বাটীতে • ফিরিলাম না । আর কি ফিরিবার যো আছে ? এদিকে যে মিসনারীদিগের মোহন মন্ত্র হৃদয়ের স্তরে স্তরে প্রবেশ করিয়াছে। যাহা হউক এই সময়ে যদি আমি “রদ্দে খ্রীষ্টিয়ান” পুস্তক ও শ্রীযুক্ত মুগী মোহাম্মদ মেহের উল্লা সাহেব সদৃশ প্রচারক পাইতার তাহা হইলে নিশ্চয় খ্রীষ্টিয়ান হইতাম না। অনন্তর অনেক চিত্তা ও বিবেচনা করিয়া খ্রীষ্টান হওয়াই স্থির করিলাম । জননী কাঁদিতে লাগিলেন, প্রিয় পিতা ও প্রাণ সম ভ্রাতা কত দুঃখ প্রকাশ করিতে লাগিলেন; অন্তেরা কত নিন্দা ও তিরস্কার করিতে লাগিলেন, কিন্তু কেহ আমাকে এমন উপদেশ দিয়া বুঝাইতে পারিলেন না যে, খ্রীষ্ট ধর্ম্ম মিথ্যা, আর মুসলমান ধর্ম সত্য। পরে আমি নিজ আত্মীয় বর্গের সহিত নিজ বাটীতে প্রত্যাগমন না করিয়া, মিসনারীদিগের আশ্রয় গ্রহণ করিলাম ৷ পরিশেষে অনেক চিন্তা ও বিবেচনা করিয়া রীতিমত খৃষ্টীয়ান শাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া খৃষ্টে সম্পূর্ণ বিশ্বাসী হইয়া, প্রিয় আত্মীয় স্বজনের অবাধ্য হইয়া ও তাঁহাদের মনে অতীব কষ্ট দিয়া ১৮৮৭ সালের ২৫শে ডিসেম্বর রবিবারের অপরাহ্ণে পাদ্রী সলিভান সাহেব কর্তৃক বাপ্তাইজিত হইয়া, খ্রীষ্ট সমাজ ভুক্ত হইলাম ৷ তখন যদি আমি বুঝিতে পারিতাম যে, বাইবেল বিকৃত হই- কাছে, দুষ্ট খ্রীষ্টিয়ানেরা তাহার মধ্যে অনেক কথা যোগ ও বিয়োগ করিয়াছে, খ্রীষ্টিয়ান মিসনারী ও প্রচারকদিগের মধ্যে অনেক নাস্তিক, অবিশ্বাসী, মিথ্যাবাদী, প্রবঞ্চক, প্রতারক, ব্যভিচারী, জাত্যভিমানী, কটুভাষী আছে ; তাহা হইলে কখন আমি ভ্ৰষ্ট খ্রীষ্ট ধর্ম্মের আশ্রয় গ্রহণ করিতাম না । ৰাপ্তা- ইজের পর আমি কিছুকাল কৃষ্ণনগর স্কুলে পড়ি, তাহার পর আমার পরম ভক্তি ভাজন রেভারেও জানি আলী এম, ( কেম্ব্রিজ ) সাহেবের অনুগ্রহ ও দরাতে কলিকাতার যুদ্ধাপুরস্থ বোর্ডিং স্কুলে গমন করিয়া, কিছু কাল লেখা পড়া শিখি। পরে মিসনারী মহাশয়েরা আমার বিদ্যা বুদ্ধি ও স্বভাব চরিত্রে মুগ্ধ হইয়া, আমাকে মিসন কার্যে নিযুক্ত করিার জন্য অতীব ইচ্ছুক কিন্তু লেখা পড়া শিক্ষা করিতে আমার আরও ইচ্ছা হওয়াতে, তাহাদের সে আশা ফলবতী হয় নাই। যাহা হউক, আমার পরম ভক্তিভাজন রেভারেও জানি আলি এম্, এ, ( কেম্ব্রিজ ) ও রেভারেও বাটলার বি, এ, মহাশয় দ্বয়ের সাহায্যে আমি এলাহাবাদের সেন্ট পাউলন ডিভিনিটী কলেজে গমন করি, ও তথায় কয়েক বৎসর পড়িয়া কলেজের শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া এইচ, জি, আর, অর্থাৎ পাঠকরত্ব উপাধি লাভ করি । ইহাতে মিসনারী সাহেবেরা আমার উপর অতিশয় সন্তুষ্ট হইয়া আমাকে মিসন কার্য্যে মিসনারী নিযুক্ত করিয়া পাঠান। আমি মিসনারী নিযুক্ত হইয়৷ প্রথম এলাহা- বাদেই মিসন কার্য আরম্ভ করি। বলা বাহুল্য এই সময়ে আমি মুসলমান ধর্ম্মের বিরুদ্ধে তীব্র লিখনী * ধারণ করিয়া অনেকানেক মুসলমান তনয়কে খৃষ্টান ধর্ম্মে দীক্ষিত করি। আর আমি যে কেবল লেখনী চালনা করিয়া অনেক লোককে খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিয়াছি এমন নহে ; প্রচার দ্বারাও অনেকানেক হিন্দু মুসলমানকে খ্রীষ্টীয় ধর্ম্মে দীক্ষিত করিয়া- ছিলাম। উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ এলাহাবাদে আমি ভাল মিসন কার্য্য করিতেছি, ইহ। কলিকাতার মিসনারীরা দেখিয়া আমাকে কলিকাতায় আনয়ন করেন। কিন্তু কলিকাতায় আমি বেশীদিন কার্য্য করিতে পারি নাই। কারণ আমি ধে সময়ে কলিকাতা আগমন করি, ঠিক সেই সময়েই নদীরা জেলায় মুসলমান মিসনারীর অতীব আবশুষ্ক হয় ; তাহাতে আমি কলিকাতায় সবে দুই বৎসর কার্য্য করিয়া কলিকাতার এই সময়ে মুন্দী মোহাম্মদ মেহের উল্লা সাহেবের সহিত আমার সংবাদ পত্রে লিখিত তর্ক হয় । সি, এম, এস্ কনফারেন্সের আদেশানুসারে শিকারপুরে গমন করি। শিকারপুরে গমন করিয়া আমি অতি আড়ম্বর সহকারে কার্য করিতে আরম্ভ করি। আমি শীত কালে তাম্বুতে এবং বর্ষাকালে নৌকাতে থাকিয়া মফস্বলে প্রচার করি- তাম । যাহা হউক আমি যে সময়ে শিকারপুরে মিসন কার্য্য করি, ঠিক সে সমরে অর্থাৎ ১৮৯২ সালে কুষ্টিয়া এলাকার মুসলমানদিগের সহিত খ্রীষ্টানদিগের ভয়ানক তর্ক অবলম্বন করিয়া, একটী বৃহৎ সভা হয় । আমি কুষ্টিয়ার ঐ তর্ক উপলক্ষে উক্ত সভাতে গমন করিয়া পদ্মা নদীর তীরস্থ অনেকানেক পল্লীতে খৃষ্ট ধর্ম প্রচার করি। এখানে একটা কথা বলা আমার অতীব আবশ্যক; আর তাহা এই-একদিন আমি মধুগাড়ী নামক পল্লীতে তাম্বুর মধ্যে শয়ন করিয়া কোরাণ শরিফের বাঙ্গালা অনুবাদ পাঠ করিতেছি, এমন সময়ে সুরা সফের ও আয়েতে উপস্থিত হইলাম । তথায় লেখা আছে যে, “ইসা বলিলেন, আমার পরে যে প্রেরিত পুরুষ, যাঁহার নাম * আহম্মদ, আগমন করিবেন।” উপরি উক্ত বাক্যটা পাঠ করিতে করিতে কে যেন আমার কর্ণে বলিয়া দিল যে, উক্ত বাক্যটা পূর্ব্বে ৰাইবেলে ছিল, কিন্তু দুষ্ট খৃষ্টানেরা উহা বাইবেল হইতে বিয়োগ করিয়া দিয়াছে। যাহা হউক বাইবেল যে পরিবর্ত্তিত ও বিকৃত হইয়াছে, তাহা বিশেষরূপে আলোচনা করিতে লাগিলাম এবং নিম্ন লিখিত কারণে জানিতে পারিলাম যে, বর্তমান সময়ে কোথাও আসল বাইবেল নাই, খৃষ্টানেরা f উহা বিকৃত ও পরিবর্তিত করিয়া দিয়াছেন । ( ১ ) এখন যেমন বাইবেল একখণ্ড পুস্তকাকারে বিমান রহিয়াছে, অতি প্রাচীন কালে তাহা ছিল না। উহার হস্তলিপি সকল পৃথক পৃথক স্থানে পৃথক্ পৃথক্ রূপে ছিল। উক্ত হস্তলিপি সমূহের নাম যথা—“আলেকজাণ্ডিয়া” হস্তলিপি, “ইফ্লায়ীমী" হস্তলিপি ও “ভাটিীকান” হস্তলিপি ইত্যাদি। ঐ সকল হস্ত- লিপিতে রুমি বেশী আছে, আর পরস্পরের সহিত পরস্পরের ঐক্যতা নাই । ( ২ ) যিহুদীদিগের বাইবেলের সহিত খৃষ্টানদিগের বাই- বেলের মিল নাই। ষিদীদিগের বাইবেলে লেখা আছে যে, মসীহ আসিয়া তাহাদিগকে স্বাধীন করিবেন কিন্তু न- দিগের বাইবেলে তাহা লেখা নাই। কিন্তু যিহুদীদিগের বাই- বেলে লেখা আছে। (৩) রোমান ক্যাথলিকদিগের বাইবেলের সহিত প্রটে- স্টান্টদিগের বাইবেলের মিল নাই। যদি থাকিত, তাহা হইলে তাহাদের মধ্যে কখনই এত অনৈক্য দৃষ্ট হইত না ৷ ( ৪ ) রোমীয় ক্লেমেণ্ট, পলিকার্প ইন্নাতিউস ও তর্ক লিয়ান প্রভৃতি প্রাচীন খ্রীষ্টানেরা অতি প্রাচীন কালে বাইবেলের যে সমস্ত বাক্য উদ্ধৃত করিয়া গিয়াছেন, আধুনিক বাইবেলের রচনাবলীর সহিত উহার ঐক্যতা দৃষ্ট হয় না । (৫) এলাহাবাদস্থ সেন্ট পাউলস্ ডিভিনিটী কলেজের অধ্যাপক পাদ্রী হাটে বি, ডি, সাহেব বলেন যে, মূল হস্ত-লিপির সহিত উর্দু অনুবাদের মিল নাই।” মুন্সী শেখ জমিরউদ্দিন রচিত আমার জীবনী ইলাম-গ্রহণ বৃত্তান্ত গ্রন্থ থেকে সংকলিত। মুন্সী শেখ জমিরুদ্দীন (১৮৭০ – ২ জুন ১৯৩৭) বাংলার একজন লেখক ও ইসলাম প্রচারক ছিলেন। শেখ জমিরুদ্দীন ১৮৭০ সালে মেহেরপুরের গাংনীর গাঁড়াডোব বাহাদুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেহেরপুর আমঝুঁপি খ্রিষ্টান স্কুল ও কৃষ্ণনগর নর্মাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ১৮৮৭ সালে তিনি খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের পর তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করেন জন জমিরুদ্দীন রাখেন। জন জমিরুদ্দীন ১৮৯১ সালে এলাহাবাদ সেন্ট পলস ডিভিনিটি কলেজ থেকে ধর্মতত্ত্বে স্নাতক হন। পরবর্তীতে, তিনি কলকাতার ডিভিনিটি কলেজে ভর্তি হন। তিনি সেখানে খ্রিষ্টধর্মতত্ত্ব, সংস্কৃত, আরবি, গ্রিক এবং হিব্রু সাহিত্য ও ব্যাকরণ নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি ও লাতিন ভাষা জানতেন। জন জমিরুদ্দীন ১৮৯২ সালের জুন মাসে খ্রিষ্টীয় বান্ধব পত্রিকায় আসল কোরআন কোথায় শিরোনামের একটি নিবন্ধ লেখেন।এর জবাবে মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ঈসায়ি বা খ্রিষ্টানি ধোকাভঞ্জন শিরোনামের একটি নিবন্ধ লেখেন যা ১৮৯২ সালের ২০ ও ২৭ জুন সুধাকর এ প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধটিতে তিনি জন জমিরুদ্দীনের ছয়টি প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন। এরপর, জন জমিরুদ্দীন সুধাকর এ একটি নিবন্ধ লেখেন।এর জবাবে মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আসল কোরআন সর্বত্র শিরোনামের একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধটি পরে জন জমিরুদ্দীন ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শেখ জমিরুদ্দীন ধর্মীয় বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন। এছাড়া, তিনি সামাজিক বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেছেন ও অনুবাদ করেছেন। তিনি হযরত ঈসাকে, মেহের চরিত, ইসলামী বক্তৃতা, শ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (স.) ও পাদরীর ধোঁকাভঞ্জন এর মত গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি আমার জীবনী ও ইসলাম গ্রহণ বৃত্তান্ত শিরোনামে আত্মজীবনীও রচনা করেছেন। শেখ জমিরুদ্দীন ১৯৩৭ সালের ২ জুন মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরে তাকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়েছিল। উক্তি • ইসাই দিনেতে আমি না পে'য়ে নাজাত৷ কালেমা পড়িনু মুখে একিনের সাত॥ • আমার জীবনী ও ইস্লাম-গ্রহণ বৃত্তান্ত গ্রন্থের প্রচ্ছদে শেখ জমিরুদ্দীন (আমার জীবনী ও ইস্লাম-গ্রহণ বৃত্তান্ত (PDF)। কলিকাতা: মোহাম্মদ উমরুদ্দীন চৌধুরী। ১৩১৪।) • হায় হায় হায়! হৃদে ফেটে যায়! অকালে সে মহাজন, কাঁদায়ে সবায়, চলিলেন হায়, আঁধারিয়া এ ভুবন। • মেহেরুল্লাহ্-স্মরণে, শোকানল (১৩১৬) (আবুল আহসান চৌধুরী (১৩৯৫)। মুন্শী শেখ জমিরুদ্দীন। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯৪।) শেখ জমিরুদ্দীন সম্পর্কে উক্তি • হিন্দু সমাজকে শতাব্দীর শুরুতে এ ধরনের খ্রীস্টানধর্ম-মুখিতা থেকে বাঁচিয়েছিলেন রামমোহন। শতাব্দী শেষে মুসলমানদের মধ্যে আন্দোলন আরম্ভ করেন যশোর নিবাসী বাগ্মীপ্রবর মুন্সী মেহেরুল্লাহ এবং তাঁরই হাতে দীক্ষিত ধর্মান্তর গ্রহণকারী মুন্সী মোহাম্মদ জমিরুদ্দীন। এঁদের প্রধান অবলম্বন ছিল ওয়াজ। • মুহম্মদ আবদুল হাই; সৈয়দ আলী আহসান (১৯৭৯)। "ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতিমূলক রচনা"। বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত। ঢাকা: আহমদ পাবলিশিং হাউস। পৃষ্ঠা ৯৯। • ইসলাম ধর্ম প্রচারে শেখ জমিরুদ্দীন দ্বিমুখী অভিযান চালান―বক্তৃতা দান ও পুস্তক প্রবন্ধ প্রণয়ন। অন্যের আঘাত-আক্রমণ থেকে ইসলামকে রক্ষা করা, ইসলামের মহিমা প্রচার করা, অবিশ্বাসীদের ইসলামে দীক্ষা দেওয়া, ধর্মবোধে মুসলমানদের জাগ্রত করা―এক কথায় ইসলামীকরণ এবং তদ্দ্বারা সমাজের পুনর্জাগরণ―এই ছিল শেখ জমিরুদ্দীনের মুখ্য ব্রত। • ডক্টর ওয়াকিল আহমদ (১৯৮৩)। উনিশ শতকে বাঙালী মুসলমানের চিন্তা-চেতনার ধারা। প্রথম খণ্ড। নিউ দিল্লী: সাহিত্য অকাদেমী। পৃষ্ঠা ৩৪২। গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
videos
» মেহেরপুরের সাহিত্য:মুন্সী শেখ জমিরুদ্দীন (১৮৭০ – ২ জুন ১৯৩৭) খ্যাতনামা লেখক ও ইসলাম প্রচারক
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: