Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » (১৮৬৯ –১৯৪৩) বৃটিশ আমলে মেহেরপুর মুখার্জীপাড়া গৃহস্থরা ঘরের চালগুলি অগ্নিমুখ হইতে রক্ষা করিবার জন্য চালের উপর কলাপাতা, মানগাছের পাতা, ভিজা কাঁথা প্রসারিত করিয়া কলসপূর্ণ জল লইয়া ঘর মটকার পাশে বসিয়া থাকিত ( বায়াত্তর পর্ব )




(১৮৬৯ –১৯৪৩) বৃটিশ আমলে মেহেরপুর মুখার্জীপাড়া গৃহস্থরা ঘরের চালগুলি অগ্নিমুখ হইতে রক্ষা করিবার জন্য চালের উপর কলাপাতা, মানগাছের পাতা, ভিজা কাঁথা প্রসারিত করিয়া কলসপূর্ণ জল লইয়া ঘর মটকার পাশে বসিয়া থাকিত ( বায়াত্তর পর্ব ) বৃটিশ আমলে মেহেরপুর মুখার্জীপাড়ার আমাদের নৃতন বাড়ীর সীমার মধ্যে অনেকগুলি আম-কাঁটালের গাছ এবং কতকগুলি খেজুরগাছ ছিল । বাড়ীর পর্বব ও পশ্চিম সীমায় কয়েক ঝাড় বাঁশ ছিল। তখন শীতকাল । নবীন বাগ্দী নামক একজন 'গাছী' আমাদের বাড়ীর খেজুর গাছগুলি চাঁচিয়া তাহা হইতে রস সংগ্রহ করিত । নবীন এক একদিন সায়ংকালে আমাদিগকে এক এক ঘটি 'জিরেন কাটে'র রস উপহার দিয়া যাইত । শীতের সন্ধ্যায় সেই রস পান করিয়া আমাদের বুকের ভিতর কাঁপুনী ধরিত। আমরা গৃহকোণে মৃত্প্রদীপের আলোকে পুরু কাঁথায় সব্বাঙ্গ আবৃত করিয়া শয্যায় শুইয়া পড়িতাম ।প্রথমতঃ অগ্নিভয় ৷ সেকালে গোপপল্লীতে শীতকালে গরুর ঘরে সীঁজাল দেওয়া হইত । শুষ্ক কাঠ, ঘাস স্তুপীকৃত করিয়া তাহাতে অগ্মি-সংযোগ করা হইত । সেই অগ্নির উত্তাপে গরু-বাছুরের শীত নিবারণ হইত ; দরিদ্র গৃহস্থরা সায়ংকালে সেই অগ্নিকৃণ্ডের চারিদিকে বসিয়া সুখ-দুঃখের গল্প বলিত, এবং কলিকায় 'দা-কাটা' তামাক সাজিয়া তৃপ্তির সহিত ধূমপান করিত । কিস্তু তাহাদের অসতর্কতায় কখন কখন সাঁজালের আগুন গো-শালার বাঁশের বেড়ায় ধরিয়া যাইত, অবশেষে তাহা গো-শালার মট্কায় উঠিয়া বায়ুবেগে চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িত, এবং পল্লীর বছ গৃহ ভস্মস্তূপে পরিণত হইত, কখন কখন গৃহস্থ-রমণীরা ধন সিদ্ধ করিতে বসিয়াও এইরূপ বিভ্রাট ঘটাইত | যেখানে ধান সিদ্ধ হইত, তাহার অদূরে পাটকাটীর স্তপ, আশে-পাশে বিচালীর গাঁদা । কৃষক-রমণী কোন কারণে উঠিয়া গিয়াছে, সেই সময় উনানের আগুন পাটকার্টীতে ধরিয়া বিচালীর স্তুপ বিধ্বস্ত করিত, এবং ভ্বলস্ত বিচালী উড়িয়া বাসগৃহের চালে পড়িত, তাহার পর সমগ্র পল্লী অগ্নিময় হইয়া উঠিত । প্রতি বৎসর এই ভাবে বহু সংখ্যক চাষী গৃহস্থকে সর্বস্বান্ত হইয়া পথে বসিতে হইত । ঘরের চালে আগুন লাগিলে তাহাতে শুষ্ক বাঁশের সাজ জ্বলিয়া উঠিত, দুম্দাম্ শব্দে উখো' অর্থাৎ বাঁশের শু রস্থিগুলি ছুটিয়া প্রতিবেশীর গৃহের চালে পড়িত ও “মট্কা'য় সেই আগুন জ্বলিয়া উঠিত। গৃহস্থরা ঘরের চালগুলি অগ্নিমুখ হইতে রক্ষা করিবার জন্য চালের উপর কলাপাতা, মানগাছের পাতা, ভিজা কাঁথা প্রসারিত করিয়া কলসপূর্ণ জল লইয়া ঘর মটকার পাশে বসিয়া থাকিত, তথাপি “উখো'র আগুন হইতে চাল রক্ষা করিতে পারিত না । কাহারও ঘরে আগুন লাগিলে তাহার প্রতিবেশীরা সেই অগ্মি নিব্বাণের চেষ্টা না করিয়া স্ব-স্ব ঘর বাঁচাইবার চেষ্টা করিত ; কিন্তু সম্মিলিত চেষ্টার অভাবে প্রায় কাহারও ঘর অগ্নিমুখ হইতে রক্ষা পাইত না। বিশেষতঃ পাড়ার দুই চারিটা কূপের জলে পল্লীব্যাপী অগ্নি নিব্বাপিত হইত না। চল্লিশ-পঞ্চাশ ঘড়া জল তুলিবার পর কৃপগুলিতে আর ঘড়া ডুবিত না। তখন নিরুপায় পল্লীবাসীরা মাথায় হাত দিয়া কাঁদিতে বসিত। তাহাদের মর্ম্মভেদী ক্রন্দনে পল্লী প্রতিধ্বনিত হইত। ”বৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply