Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » নব্বই দশকের অডিও ক্যাসেট প্লেয়ার: হারিয়ে যাওয়া গানের ঠিকানা




নব্বই দশকের অডিও ক্যাসেট প্লেয়ার: হারিয়ে যাওয়া গানের ঠিকানা রেডিওর একচেটিয়া রাজত্ব ভেঙে ক্যাসেট প্লেয়ার মানুষের হাতে এনে দিয়েছিল নতুন স্বাধীনতা। ছোট্ট ম্যাগনেটিক টেপে রেকর্ড করা যেত গান, নাটক কিংবা বক্তৃতা। বারবার শোনা যেত প্রিয় সুর, আবার চাইলে নিজের কণ্ঠও রেকর্ড করা যেত। নব্বই দশকের দুপুরগুলোতে খোলা জানালা দিয়ে ভেসে আসত সিনেমার গান, পপ মিউজিক বা ব্যান্ডের সুর। কোথাও কারো ঘরে বাজছে জেমস, আবার কোথাও ভেসে আসছে সাবিনা ইয়াসমিন বা কনকচাঁপার চলচ্চিত্রের গান। তখনো সিডি ঢোকেনি ঘরে ঘরে, এমপি৩ বা ইউটিউব ছিল কল্পনারও বাইরে। নব্বইয়ের ঘরে সঙ্গীতের রাজত্ব ছিল একটাই—অডিও ক্যাসেট প্লেয়ার।

রেডিওর একচেটিয়া রাজত্ব ভেঙে ক্যাসেট প্লেয়ার মানুষের হাতে এনে দিয়েছিল নতুন স্বাধীনতা। ছোট্ট ম্যাগনেটিক টেপে রেকর্ড করা যেত গান, নাটক কিংবা বক্তৃতা। বারবার শোনা যেত প্রিয় সুর, আবার চাইলে নিজের কণ্ঠও রেকর্ড করা যেত। বাজারে বড়সড় বুমবক্সের পাশাপাশি তরুণদের হাতে হাতে ঘুরত সনি ওয়াকম্যান, যা ব্যক্তিগত সঙ্গীত শোনার ধারণাকেই বদলে দিয়েছিল। পাড়ার ভিডিও ক্যাসেট ভাড়ার দোকানের পাশেই থাকত অডিও ক্যাসেটের শেলফ। নতুন সিনেমা মুক্তি পেলে তার গান বাজারে আসার জন্য মুখিয়ে থাকত তরুণেরা। বন্ধুরা মিলে টাকা জোগাড় করে ভাড়া নিত ক্যাসেট, আবার ফেরত দেয়ার আগে যতবার সম্ভব বাজিয়ে নিত। প্রিয় গানগুলো বারবার শোনার ফলে টেপে খসখসে শব্দ পড়ত, কিন্তু তাতে কারো আপত্তি ছিল না। বরং সেই হালকা ঝিঁঝিঁ শব্দই যেন গানকে করে তুলত আরো আপন। রিকশাওয়ালারা তখনকার দিনে প্রায়ই ঝুলিয়ে রাখতেন বড়সড় স্পিকার আর ক্যাসেট প্লেয়ার। শহরের রাস্তায় ভেসে আসত মেলায় বাজানো গান—কখনো সঞ্জীব চৌধুরীর কণ্ঠ, কখনোবা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পুরনো সুর। আর ঘরে ঘরে বুমবক্স মানেই গর্বের জিনিস, যেখানে সাজানো থাকত রঙিন টেপ—কেউ সাজিয়েছে বাংলা সিনেমা, কেউবা হিন্দি, কেউ আবার মিশ্র অ্যালবাম বানিয়ে লিখেছে হাতে ‘মিক্সড টেপ।’ ওয়াকম্যান তখনকার তরুণদের কাছে ছিল স্বপ্নের নাম। যারা হাতে পেত, তারা যেন ভিড়ের মাঝেও নিজস্ব এক জগতে ডুবে যেত। স্কুল-কলেজের সামনে, বাসে বা ছাদে দাঁড়িয়ে কানে হেডফোন—এমন দৃশ্য নব্বই দশকের শহরে অচেনা ছিল না। পরিবারেও ছিল ক্যাসেট প্লেয়ারের আলাদা স্থান। শুক্রবারের ছুটিতে দুপুরে বসে সিনেমার গান শোনা, ঈদের সকালে নতুন টেপ চালিয়ে পুরো ঘর মাতিয়ে তোলা, কিংবা বিয়েবাড়িতে বড় স্পিকারে বাজানো জনপ্রিয় গানের অ্যালবাম—সবই এখন স্মৃতি, সবই নস্টালজিয়া। ক্যাসেটের টেপ ছিঁড়ে গেলে বা জড়িয়ে গেলে সেই পুরনো সমাধান—পেনসিল দিয়ে রিল ঘুরিয়ে টেপ আবার চালু করা যেত। আর প্লে, ফরোয়ার্ড বা রিওয়াইন্ড বাটনের খটখটে শব্দ, চার্জের হালকা ঝকঝক শব্দ—সবই যেন ছিল বাড়ির নিত্যসঙ্গী। ডিজিটাল যুগে গান শোনার অসংখ্য মাধ্যম আছে—ইউটিউব, স্পটিফাই কিংবা বিভিন্ন স্ট্রিমিং অ্যাপ। অ্যালগরিদমে সাজানো আমাদের প্লেলিস্ট। কিন্তু আশির দশকের ছোট্ট টেপ আর ক্যাসেট প্লেয়ারের মতো আনন্দ আর কোথাও নেই। তখন একটি নতুন টেপ হাতে পাওয়া মানে যেন পৃথিবীর সেরা ধন পাওয়া। অডিও ক্যাসেট শুধু গান শোনার যন্ত্র ছিল না, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বন্ধুত্ব, পারিবারিক উষ্ণতা আর এক পুরো প্রজন্মের নস্টালজিয়া।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply